মানুষকে ওজন তোলায় সাহায্য করছে রোবট পোশাক
১১ এপ্রিল ২০২২
কর্মক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার আজ আর বিরল ঘটনা নয়৷ ভবিষ্যতে ভার বহন থেকে শুরু করে যান চালনার ক্ষেত্রে আরো যান্ত্রিক সমাধানসূত্রের প্রস্তুতি চলছে৷ তবে মানুষকে পুরোপুরি বাদ দিয়ে রোবটের ব্যবহার এখনও দূর অস্ত৷
ভবিষ্যতে আমাদের কাজকর্ম সত্যি কি রোবট-নির্ভর হয়ে উঠবে?‘পাওয়ার্ড এক্সোস্কেলিটন' নামের এক উদ্ভাবন মানুষ ও যন্ত্রের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটাচ্ছে৷ ভার বহন ও তোলার কাজে মানুষকে সাহায্য করবে এই যন্ত্র৷ ফলে পিঠের ব্যথা এড়ানো যাবে এবং ভারি জিনিসপত্র মানুষের কাছে অনেক হালকা হয়ে উঠবে৷
কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত এই এক্সোস্কেলিটন বহনকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী নিজেকে মানিয়ে নেয়৷ বেকায়দায় ভারি কিছু তুলতে গেলে প্রযুক্তির কল্যাণে তা সামলে নেওয়া যায়৷ ফলে অঙ্গ সঞ্চালন সহজ হয়ে ওঠে৷ জার্মান বায়োনিক কোম্পানির নরমা স্টেলার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘এটা আসলে একটা ছোট রোবট যা ব্যাকপ্যাকের মতো পিঠে থাকে এবং শ্রমিকের ওজন তোলার দায়িত্ব নেয়৷ এই ইলেকট্রিক ইঞ্জিনগুলি সহায়তার শক্তি জোগায়৷ সেটি ঘণ্টায় গড়ে এক থেকে দেড় টন ওজন বহন করতে পারে৷ এর মাধ্যমে বাস্তবে শ্রমিকদের কাজের চাপ ও ক্ষমতার মাত্রা সম্পর্কেও একটা ধারণা পাওয়া যায়৷''
ভবিষ্যতে হয়তো পার্সেল বহনকারী ও নার্সদের এক্সোস্কেলিটন দিয়ে সাহায্য করা হতে পারে৷ রোবট এখনই জটিল কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করছে৷ তবে এখনো পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের জন্য মানুষের প্রয়োজন রয়েছে৷
ভবিষ্যতে লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়তে পারে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দশ শতাংশ এবং স্লোভাকিয়ায় ৩০ শতাংশের বেশি কাজ রোবটের হাতে চলে যেতে পারে৷ কিন্তু মানুষ ছাড়া রোবট চালানো পুরোপুরি সম্ভব নয়৷ নরমা স্টেলার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এখনো কেন মানুষের প্রয়োজন পড়ছে? উত্তরটা সহজ৷ কারণ এই সব রোবট মোটেই তেমন চালাক নয়৷ সেটাই হলো সমস্যা৷ লজিস্টিক্সের ক্ষেত্রে বিশেষ করে করোনা সংকটের সময় আমরা দেখেছি, যে অনেক কিছুই আগে থেকে পরিকল্পনা করা যায় না৷ দ্রুত কর্মক্ষমতা বাড়াতে হয়৷ মানুষ হিসেবে আমি সেটা করতে পারলেও অনমনীয় রোবট সিস্টেম তা পারে না৷ সে ক্ষেত্রে এক্সোস্কেলিটন পরা মানুষ কর্মী কাজে লাগানো অনেক বেশি সস্তা৷''
বিষয়টি কি যথেষ্ট ভবিষ্যৎধর্মী নয়? বাসায় বসে হোম অফিস করতে করতে ফর্কলিফট চালালে কেমন হয়? ফ্যান্টম অটো নামের ক্যালিফোর্নিয়ার এক স্টার্টআপ কোম্পানি চালকদের বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে ‘টেলিপোর্ট' করতে পারে৷
ফর্কলিফট হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে এবং সমস্যা দেখা দিলে সাহায্য পায়, অথবা সেটি পুরোপুরি অফিস থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হয়৷ ফ্যান্টম অটো কোম্পানির এলিয়ট কাৎস বলেন, ‘‘আমাদের মৌলিক তত্ত্ব হলো, অটোনোমাস ড্রাইভিং আজই সম্ভব হলেও সেই কাজে মানুষের অংশগ্রহণ আবশ্যিক৷ সেই মানুষ কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে বসে একই সঙ্গে কয়েকটি ফর্কলিফটের উপর নজর রাখতে পারেন৷ আমরা গুদামের কর্মীদেরও ‘রিমোট' কাজের সুযোগ দিচ্ছি, যে সুবিধা শুধু দফতরের কর্মীরাই পেয়ে থাকেন৷ আপনি নিউ জার্সির গুদামে হঠাৎ বেশি অর্ডার পেলে চাহিদা পূরণ করতে শুধু বোতাম টিপেই একাধিক ডিজিটাল চালককে কাজে লাগাতে পারেন৷''
ট্রাক ও ট্যাক্সিও কয়েক হাজার কিলোমিটার দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে৷ এমন রোবটও আসতে চলেছে৷
ফেলিক্স পাউশিঙার/এসবি