অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের করা এই গবেষণা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে প্রসিডিংস অব দ্য ইউএস ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এ৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নয় হাজার ৭০০ প্রজাতির পাখির তথ্য নিয়ে কাজ করে তৈরি করা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, যে পাঁচ হাজার কোটি পাখি এখনো রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে চড়ুই (হাউস স্প্যাারো) এবং ইউরোপিয়ান স্টার্লিং৷ চড়ুই রয়েছে ১৬০০ কোটি আর ইউরোপিয়ান স্টার্লিং ১৩০০ কোটি৷
দীর্ঘ লকডাউনের কারণে হয়ত কলকাতায় দূষণের মাত্রা এবছর কম৷ ফলে শীত আসার মুখেই শহরে আসতে শুরু করেছে পরিযায়ী পাখির ঝাঁক৷ প্রাতঃভ্রমণকারীদের পাশাপাশি পেশাদার ও শৌখিন ছবি-তুলিয়েরাও ভিড় জমাচ্ছেন এই অতিথিদের দেখতে৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWঢাকুরিয়া লেক৷ পোশাকি নাম রবীন্দ্র সরোবর৷ দক্ষিণ কলকাতায় বিরাট এক প্রাকৃতিক জলাশয়৷ কংক্রিটের জঙ্গলের মাঝে যেন এক সবুজ আরাম৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWলেকে রোজ সকালে হাঁটতে আসেন স্বাস্থ্যসচেতন শহরবাসী৷ নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি গল্প-গুজবও চলে৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWজলের ধারে বলে পানকৌড়িরা এই এলাকার আদি বাসিন্দা৷ তারাই ছেয়ে থাকে চারপাশের গাছ৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWপানকৌড়িদের সঙ্গেই এবছর শীত কাটাতে এসেছে সারসের ঝাঁক৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWডিম পেড়ে বাচ্চা ফোটানোর জন্যে গাছ ভাগাভাগি করে নিয়েছে সারসেরা৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWলেকের পাড়ে কিছু ক্লাবের উজ্জ্বল আলো, হইচই যেন সারসদের প্রজননে বাধা হয়ে না ওঠে সেজন্য উদ্বেগে থাকেন কিছু প্রকৃতিপ্রেমী৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWবিরাট সংখ্যায় না হলেও ইতিউতি দেখা যাচ্ছে পরিযায়ী হাঁসেদেরও৷ গৃহপালিত হাঁসের সঙ্গে জোড় বেঁধে ঘুরছে তারা৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DWকরোনা-ক্লান্ত কলকাতায় এই সারসের ঝাঁকই এবার সেরা আকর্ষণ৷ প্রকৃতির অন্তরঙ্গ হওয়ার সুযোগ৷
ছবি: Sirsho Bandopadhyay/DW অন্যদিকে কিছু পাখি ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে৷ বিশেষ করে কিউই আর মেসাইটস৷ সারা বিশ্বে কিউই আছে মাত্র ৩০০০৷ এ ধরনের পাখি মূলত শুধু নিউজিল্যান্ডে দেখা যায়৷ মেসাইটস বেশি পাওয়া যায় মাদাগাস্কারে৷ সব মিলিয়ে তাদের সংখ্যা এক লাখ ৫৪ হাজারের মতো৷
যেন একরাশ কালো মেঘ৷ স্টারলিং পাখিগুলো এমনভাবে দলবেঁধে আকাশে উড়ে উড়ে জ্যামিতিক আকৃতি তৈরি করে যে , তা সব অ্যারোবেটিক্স দলকেই হার মানাবে৷ ক্যামেরার চোখে দেখুন ইসরায়েলের আকাশে ধরা পড়া এমন চমৎকার দৃশ্য৷
ছবি: Reuters/A. Cohenকখনো ঝরা পাতার মতোন, কখনো ওড়ার চেষ্টা করা ঘুঘু, কিংবা কখনো সাঁতরে বেড়ানো বিশাল তিমি মাছের আকৃতি তৈরি করে পাখির ঝাঁক৷ এই স্টারলিংগুলো ইউরোপীয় পরিযায়ী পাখি৷ ইসরায়েলে আসে রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপ থেকে৷
ছবি: Reuters/A. Cohenএই ছবিগুলো দক্ষিণ ইসরায়েলের বেইট কামা গ্রাম থেকে তোলা৷ রাতে ঘুমোতে যাবার আগে পাখিগুলো নানান আকৃতি তৈরি করে৷ শুধু যে এরা আকৃতি তৈরি করে তা-ই নয়, কিচিরমিচির শব্দে মাতিয়ে রাখে পুরো এলাকা৷
ছবি: Reuters/R. Zvulunবিজ্ঞানিরা ঠিক জানেন না, কিভাবে তারা এসব আকৃতি তৈরি করে৷ কিন্তু কেউ কেউ বলেন যে, এরা ইচ্ছে করে এমন করে না৷ বরং ঝাঁকের একটি পাখি তার নিকটবর্তী আরেকটির কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব তৈরি করে ওড়ে৷ তাতেই এমন আকৃতি তৈরি হয়৷ তা বলে এতটা নিখুঁত?
ছবি: Reuters/A. Cohenযুক্তরাষ্ট্রের পাখি বিশেষজ্ঞ জাকারি স্ল্যাভিন বলেন, ‘‘ঠিক যেন মাছের মতো৷ এই ঝাঁকের কোনো নেতা নেই৷ কিন্তু তারা এমনভাবে থাকে যেন একসঙ্গে একটি গন্তব্যে পৌঁছায়৷ এদের একজন গতিপথ বদলালে এরা দ্রুত সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে৷’’
ছবি: Reuters/A. Cohenসাধারণত শীত ও বর্ষায় স্টারলিংয়ের এমন ঝাঁক দেখা যায়৷ গ্রীষ্মের শেষ দিকে এই পাখিগুলোর প্রজনন প্রক্রিয়া শেষ হয়৷ এরপর বড় বড় ঝাঁকে এরা অভিযাত্রা শুরু করে৷ পরে শীতের শেষে অথবা বসন্তের শুরুতে এরা তাদের প্রজননস্থলে ফিরে আসে৷
ছবি: Reuters/A. Cohenকিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এরা এমন ঝাঁকে ঝাঁকে ঘুরে বেড়ায়? বিশ্লেষকদের মন্তব্য যে, পাখিগুলো দলবেঁধে ঘুরে বেড়ালে এদের হাজারো চোখে একসঙ্গে খাবার খোঁজা সহজ হয়৷ এতে একই খাবারের খোঁজে থাকা প্রাণিদের এ লড়াইয়ে পরাজিত করা সহজ হয়৷
ছবি: Reuters/A. Cohenআরো একটি কারণ, নিরাপত্তা৷ চিল, বাজপাখিদের হাত থেকে বাঁচতে এমন উপায় বেছে নিয়েছে তারা৷ বিশ্লেষকরা বলেন, তারা এমনভাবে ঘুরে যেন, বাজপাখিদের চোখে একেকটি পাখি আলাদা করে ধরা পড়া কঠিন হয়ে যায়৷
ছবি: Reuters/A. Cohenএরা যে শুধু ইউরোপেই ঘোরাঘুরি করে তা নয়৷ এই পরিযায়ী পাখিগুলোর ওড়ার সীমানা উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে দক্ষিণ ইউরোপ, এমনকি পশ্চিম এশিয়া পর্যন্ত৷
ছবি: Reuters/A. Cohen এসিবি/কেএম