1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
উদ্ভাবনকেনিয়া

মানুষের মল দিয়ে জ্বালানি

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

কেনিয়ার এক কোম্পানি মানুষের মল ব্যবহার করে ব্রিকেট তৈরি করছে৷ সেই প্রকল্পের আওতায় স্যানিটেশন, পরিবেশ দূষণের মতো সমস্যাও মোকাবিলা করা হচ্ছে৷

কেনিয়ার এক রেস্টুরেন্টে রান্নার কাজে মানুষের মল থেকে তৈরি ব্রিকেট ব্যবহার করা হচ্ছে
কেনিয়ার এক কোম্পানি মানুষের মল ব্যবহার করে ব্রিকেট তৈরি করছেছবি: DW

আমরা জানি, পৃথিবীর প্রাকৃতিক সম্পদ মোটেই অফুরন্ত নয়৷ সব ক্ষেত্রেই কি সেটা সত্য? যতদিন মানুষের অস্তিত্ব থাকবে, ততদিন একটি সম্পদ কখনোই ফুরিয়ে যাবে না৷ সেটা হলো মল৷

স্যানিভেশন নামে কেনিয়ার এক কোম্পানি মানুষের মল প্রক্রিয়াকরণ ও পুনর্ব্যবহারের কাজে হাত পাকিয়েছে৷ উচ্চ তাপমাত্রায় ক্ষতিকারক প্যাথোজেন সরিয়ে ফেলার পর সেই কাচামাল ব্রিকেট বা কাঠকয়লায় রূপান্তরিত করা হয়৷ কোম্পানির প্রতিনিধি ডেক্সটার গিকাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমরা সব সময়ে কৌতূহল দেখতে পাই৷ আসলে আগে সম্ভব মনে হয়নি, এমন আইডিয়ার মুখোমুখি হলে তখন বোঝা যায়, সেটা শুধু সম্ভবই নয়, তা খেকে মুনাফাও করা যায়৷ কিছু মূল্য সৃষ্টি করা যায়, কিছুটা উদ্ধার করা যায় এবং বর্জ্য থেকে আয় করা যায়৷''

নাইরোবি থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে নাইভাশায় এই কোম্পানি সক্রিয়৷ ট্রাক চালকরা আশেপাশের জনপদে গিয়ে বাসার বাথরুম থেকে মল সংগ্রহ করেন৷ সেখানকার পয়ঃপ্রণালী এখনো শুধু আংশিকভাবে উন্নত হওয়ায় উদ্ধার না করলে সেই বর্জ্য পানি মাটির নীচে চলে যেতো৷

জন কারিউকি ভ্যাকুয়াম ট্রাক অপারেটর হিসেবে প্রায় তিন বছর ধরে সেখানে কাজ করছেন এবং সেই প্রক্রিয়া তাকে মুগ্ধ করছে৷ নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে মনে হয়েছিল কাজটা বেশ খারাপ হবে৷ হয়তো স্বাস্থ্যের ক্ষতি হবে৷ কিন্তু বিস্ময়ের সঙ্গে দেখলাম যে এই প্রক্রিয়ায় কোনো ধোঁয়া সৃষ্টি হয় না৷ ক্ষতিকারক গ্যাসও বের হয় না৷ কাঠকয়লার মধ্যে কার্বন মোনোক্সাইড থাকে৷ কিন্তু এই ব্রিকেটের মধ্যে তা নেই৷''

প্রতি মাসে ১২টি ট্রাক বোঝাই কাদার আকারের মল সংগ্রহ করা হয়৷ প্রত্যেকটি ট্রাকে প্রায় ২০ হাজার লিটার তরল থাকে৷ কোম্পানি বেশিরভাগ বাথরুম তৈরি করে দিয়েছে৷ দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে সেই বিনিয়োগের সুফল ভোগ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে৷

মানুষের মলের মাধ্যমে জ্বালানির চাহিদা পূরণ

03:16

This browser does not support the video element.

এখনো পর্যন্ত স্যানিভেশনের প্রকল্প ভালোভাবে চলছে৷ স্থানীয় মানুষও সন্তুষ্ট৷ প্লাস্টিকসহ সব রকমের বর্জ্য পয়ঃপ্রণালীতে গিয়ে পড়ে৷ কিন্তু সংগৃহিত কাদায় সে সব আলাদা করা হয়৷ ডেক্সটার গিকাস বলেন, ‘‘আমরা মানুষকে নিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনার সুবিধা দিচ্ছি৷ যে বর্জ্য রোগব্যাধী সৃষ্টি করতো এবং পরিবেশ দূষণ করতো, আমরা তা সরিয়ে দিচ্ছি৷ আমরা জনপদে কাজ করছি, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান করছি৷''

এই কোম্পানি পরোক্ষভাবে প্রায় একশো মানুষের কর্মসংস্থান সম্ভব করেছে৷ সরাসরি ৫৬ জন কোম্পানির কর্মী হিসেবে কাজ করেন৷ গোটা প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁরা সক্রিয়৷ সবার আগে তরল ও কঠিন আলাদা করা হয়৷ তারপর তরল পদার্থ জেলার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্টে নিয়ে যাওয়া হয়৷

কঠিন পদার্থ বেশ কয়েকশো ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হয়৷ তারপর সেটি প্রক্রিয়াজাত করে জৈব পদার্থের সঙ্গে মেশানো হয়৷ চূড়ান্ত ব্রিকেটে পাঁচ থেকে তিরিশ শতাংশ শুকানো মল থাকে৷ এই কোম্পানি মাসে প্রায় ১০০ টন মলযুক্ত ব্রিকেট তৈরি করে৷

জন কারিউকির মতে, রান্নাসহ নানা কাজে এই ব্রিকেট ব্যবহারের অনেক সুবিধা রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘এটি আরো কার্যকর, অনেক বেশি টেকসই এবং এতে খাবার ভালোভাবে রান্না করা যায়৷ জ্বালানি হিসেবে এটির আরো ব্যবহার রয়েছে৷ চারকোলের অনেক ক্ষতিকারক প্রভাব ছিলো, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে৷ কিন্তু ব্রিকেট পরিষ্কারভাবে ব্যবহার করা যায়৷ কোনো ক্ষতিকারক নির্গমন ঘটে না৷''

একটি ক্যাফের মতো নাইভাশার কিছু রেস্তোরাঁও সেই ব্রিকেট ব্যবহার করছে৷ আগে সেখানে পাথরের চুলায় লাকড়ি ব্যবহার করা হতো৷ কিন্তু সেগুলির দাম আরো বেশি ছিলো৷ বর্ষার মরসুমে লাকড়ি পাওয়াও কঠিন হতো৷

ওয়াসেরা নগুনজিরি, ইয়ুলিয়া মিল্কে/এসবি

বিদ্যালয়ে খাবার রান্নায় জ্বালানি মল

01:51

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ