মানুষ-বানর সাদৃশ্য
২৮ আগস্ট ২০১৩বিগত দশকগুলোতে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, বানরদের চেয়ে মানুষের পায়ের পাতার কার্যক্ষমতা একেবারেই ভিন্ন৷ বিশেষ করে মানুষের পায়ের পাতার মাঝখানে যে ধনুকাকৃতির অংশটা রয়েছে সে অংশটা অনমনীয় বলে ধারণা ছিল বিজ্ঞানীদের, যেটা বানর জাতীয় প্রাণীদের সাধারণত নমনীয় হয়৷ এই ধনুকাকৃতির অংশটা দেহের ভারসাম্য রক্ষায় অনেকটা সহায়ক৷
বিভিন্ন তথ্য থেকে পাওয়া গবেষণায় প্রথমবারের মত বানরের পায়ের পাতার সাথে মানুষের পায়ের পাতা অনেকটা সাদৃশ্য দেখতে পেয়েছে লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা৷
ডক্টর কার্ল বেটস-এর নেতৃত্বে গবেষকদের দলটি ১৮ থেকে ৬৮ বছরের মধ্যে ৪৫ জন স্বাস্থ্যবান মানুষকে খালি পায়ে ৫ মিনিট প্রেসার সেনসিটিভ ট্রেড মিলে হাঁটতে বলেছিল৷ সে সময় এদের প্রত্যেকের শরীরের রক্তচাপের মাত্রা ও গতি সংগ্রহ করা হয়৷
২৫ হাজার মানুষের পদক্ষেপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দুই তৃতীয়াংশ মানুষের পায়ের পাতার মাঝের অংশ ট্রেডমিলকে স্পর্শ করেছে৷
অথচ বিগত সব পরীক্ষায় পাওয়া গিয়েছিল, মানুষের পায়ের পাতার মাঝের অংশ ভূমিকে স্পর্শ করে না, কেবল মাত্র যারা ডায়াবেটিস ও আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত, তাদেরই এটা হয়৷ কিন্তু এবারের গবেষণায় দেখা গেল, মানুষের পায়ের পাতার মাঝের অংশ বেশ নমনীয় এবং এটা নিয়মিত ভূমিকে স্পর্শ করছে৷ গবেষণায় আরও দেখা গেল, রক্ত চাপের মাত্রা মানবদেহের পায়ের পাতার মাঝের অংশে বেশি সঞ্চালিত হচ্ছে৷
বেটস বললেন, ‘‘আমাদের আদিমানবদের পায়ের পাতা প্রথমে নমনীয় ভাবে গড়ে উঠেছিল, যার ফলে তারা সহজেই গাছে উঠতে পারত এবং এক ডাল থেকে অন্য ডালে খাবারের সন্ধানে সহজেই আরোহণ করতে পারত৷ কিন্তু সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে মাটির উপর নির্ভরশীলতা বাড়ায় মাটিতে কী ভাবে দ্রুত চলাফেরা করা যায়, সেভাবেই পরবর্তীতে গড়ে উঠেছে পায়ের পাতার গঠন৷''
ব্রিটিশ গবেষকরা এই প্রকল্পে পৌঁছেছেন, মাটির সংস্পর্শে বেশি আসায়, আমাদের দ্রুত হাঁটতে বা দৌড়াতে এবং নরম ও শক্ত মাটির সাথে অভিযোজিত হতে পায়ের পাতার মাঝখানের নমনীয়তা ফিরে এসেছে৷
এপিবি/এসবি (ডিপিএ)