পৃথিবীতে কোনো ভাইরাসই মানুষের সঙ্গে লড়াই করে জিততে পারেনি৷ সবচেয়ে সংক্রামক বলে পরিচিত হাম রোগের ভাইরাস রুবিওলাও মানুষের কাছে পরাজিত হয়েছে৷ মানুষ জিতেছে, কিন্তু মানবিকতা? মনে হয় না৷
বিজ্ঞাপন
সায়েন্স ফিকশন গল্প না সিনেমাতে প্রধানত দুই ধরনের গল্প দেখা যায়৷ হয় মানুষ হয় অ্যালিয়েনের সঙ্গে লড়াই করছে, অথবা অচেনা কোনো ভাইরাসের সঙ্গে৷ একসময় ভাইরাসের আক্রমণে মানুষের জোম্বি হয়ে যাওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত সিনেমাগুলো বেশ চলতো৷ এখন সেটা আরো আপডেট হয়ে অ্যালিয়েনে পৌঁছেছে৷ এসব নিয়ে ভিডিও গেমসও কম হয়নি৷
যেমন আমরা যদি সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও গেম ওয়ার্ল্ড ওয়ার জি বা ওয়াকিং ডেড এর কথা বিবেচনা করি, জোম্বি অ্যাপোকেলিপসে পুরো পৃথিবী আক্রান্ত হয়৷ এই স্ট্র্যাটেজি বা শ্যুটিং গেমগুলোতে নিজের প্রিয়জনের পাশাপাশি অন্য বেঁচে থাকা মানুষদের নিয়ে মোকাবিলা করতে হয় ‘আনডেডদের'৷
এইসব অ্যাপোক্যালিপসে প্রায় সময়ই নিজের প্রিয়জনেরাও আক্রান্ত হয়ে পড়েন, তখন সিদ্ধান্ত নিতে হয় বৃহৎ ভালোর জন্য তাদেরও ত্যাগ করার৷ এইসব গেমেও দেখা যায় যারা বেঁচে আছেন তাদের মধ্যে নানা দ্বন্দ্ব দেখা দেয়, প্রায়শই খাবার ও ওষুধ নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়াতে হয়৷
যেখানে করোনা, সেখানেই রোবট আর ড্রোন
জানালায় এসে কথা বলছে ড্রোন। পুলিশের নির্দেশে উড়ে যাচ্ছে যেখানে দরকার। রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল, সুপার মার্কেটসহ অনেক জায়গায় করোনা ভাইরাসকে রুখতে রোবটও কাজ করে চলেছে বিরামহীনভাবে। দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/China Daily
ড্রোন বলছে, সাবধান!
মালয়েশিয়ার পুলিশ করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচার কথা বলতে পাঠিয়েছে তাকে। রাজধানী কুয়ালালামপুরের এই ঘরটির সামনে এসে সে কথাই বলছে ড্রোন। মন দিয়ে ড্রোনের কথা শুনছেন এক গৃহিণী।
ছবি: Reuters/Lim Huey Teng
শিক্ষার্থীর বেশে রোবট
করোনা ভইরাস থেকে বাঁচতে ঘরে থাকতে হচ্ছে সবাইকে। জাপানের রাজধানী টোকিওর এক অনুষ্ঠানে তাই সদ্য স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীরা আসতে পারেননি। তাদের জায়গায় গাউন পরে দাঁড়িয়েছে রোবট।
ছবি: Reuters/BBT UNIVERSITY
রোবট যখন ফটোগ্রাফার
ইটালির ভারেসে শহরের এক হাসপাতলে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের ছবি তুলে বেড়াচ্ছে রোবট। রোগীদের চিকিৎসায় খুব কাজে লাগছে সেই ছবি। কম্পিউটারের স্ক্রিনে রোবটের তোলা ছবি দেখছেন এক স্বাস্থকর্মী।
ছবি: Reuters/F. Lo Scalzo
সচেতন রোবট
করোনা ভাইরাস থেকে দূরে থাকতে একজন সচেতন মানুষের যা যা করা উচিত, সবাই মিলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে যেভাবে লড়া উচিত, সুপার মার্কেটে সেই কথাগুলো বলছে মানুষের আদলে গড়া এক রোবট। জার্মানির লিন্ডিয়ার শহরের এক সুপার মার্কেট থেকে তোলা ছবি।
ছবি: Reuters/W. Rattay
সংবাদ সম্মেলনে রোবট
বেজিংয়ের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এয়ারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলে সাংবাদিকদের দেখানো হচ্ছে হাসপাতলে রোবট কিভাবে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় সহায়তা করে। 'নকল মানুষ' সামনে রেখে রোবটই তা দেখাচ্ছে।
ছবি: Reuters/C. Garcia Rawlins
শহর জীবাণুমুক্ত করছে ড্রোন
চিলির তালকাহুয়ানা শহরে জীবাণুনাশক ছিটাতে আর মানুষের দরকার হয় না। লকডাউন মেনে মানুষ থাকছে ঘরে আর শহরময় উড়ে উড়ে জীবাণুনাশক ছিটাচ্ছে ড্রোন।
ছবি: Reuters/J. Luis Saavedra
খাবার পরিবেশনে
চীনের সাংহাই শহরের এক রেস্তোরাঁয় চাহিদামতো খাবার পরিবেশন করছে রোবট।
ছবি: Reuters/Aly Song
সিঁড়ি বেয়ে ওঠে স্প্রেয়ার!
চীনের লুসিয়াং হেনান প্রদেশের এক ভবনে জীবাণুনাশক ছিটাতে সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে এগিয়ে চলেছে স্প্রেয়ার।
ছবি: Reuters/China Daily
রংমিস্ত্রি রোবট
করোনা ভাইরাসের কারণে ফ্রান্সও এখন বিপর্যস্ত। সব মানুষকে বলা হয়েছে ঘরে থাকতে। অনেক কাজেই নামতে হয়েছে রোবটকে। করোনায় মৃতদের জন্য বানাতে হচ্ছে নতুন নতুন কফিন। কফিনে রং করছে এক রোবট।
ছবি: Reuters/G. Fuentes
মাস্ক লাগবে?
ভারতের কোচি শহরে ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে আছে রোবট। ট্রে-তে আছে মাছ আর স্যানিটাইজার। যার দরকার নিয়ে নিন!
ছবি: Reuters/Sivaram V
বিকল্প স্বাস্থ্যকর্মী
ইতালির ভারেসে শহরের এক হাসপাতলে করোনায় সংক্রমিতদের চিকিৎসায় সহায়তা করছে রোবট।
ছবি: Reuters/F. Lo Scalzo
পরম বন্ধু
করোনা-সংকটে সবচেয়ে বিপদে আছেন প্রবীণরা। রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, একাকিত্বের যন্ত্রণাও তাদের জন্য বেশি অসহনীয়। বেলজিয়ামে এমন মানুষদের জন্য ঘরে ঘরে বিনামূল্যে রোবট পাঠাচ্ছে একটি কোম্পানি। রোবটগুলোর কাজই হলো ভিডিও কলের মাধ্যমে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলানো।
ছবি: Reuters/Y. Herman
পুলিশ এবং ড্রোন
ইন্দোনেশিয়ার রিয়াউ প্রদেশের পেকানবাউ শহরে
জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজও করতে হচ্ছে পুলিশকে। অবশ্য পুলিশ কাজটা নিজে করছে না। রিমোট হাতে নিয়ে শুধু নির্দেশ দিচ্ছে আর সেই নির্দেশ মেনে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে যাচ্ছে ড্রোন।
ছবি: Reuters/R. Muharrman
'বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক'
বেজিংয়ের করোনায় সংক্রমিত রোগীদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতো নানা উপদেশ দেবে এই রোবট। কিভাবে, কোন ইশারায় কী বোঝাতে হবে তা দেখিয়ে দিচ্ছেন ফাইভ জি প্রযুক্তির রোবটটি তৈরি করা কোম্পানির কর্মীরা।
ছবি: Reuters/China Daily
14 ছবি1 | 14
অনেকে সায়েন্সফিকশন বইয়ের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন, অনেকে সিনেমার সঙ্গে৷ এটা স্বাভাবিক৷ সায়েন্সফিকশনে ফিকশনটা কিন্তু সায়েন্সের সঙ্গেই মিলিয়ে উপস্থাপন করা হয়৷ সুতরাং যারা সাইফাইয়ের ভক্ত, তারা কেনো এতে অবাক হচ্ছেন তা আমি বুঝতে পারছি না৷ মোবাইল ফোন একসময় ছিল সায়েন্সফিকশন, এখন বাস্তবের চেয়েও বেশি৷ এ নিয়ে অবাক হওয়ার কী আছে?
আবার সিনেমার কথা যদি ধরি সেটা কন্টাজিওনই হোক আর ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস, পুরো মানবজাতি আক্রান্ত হয় এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বের নেতারা এক হয়ে রক্ষা করেন পৃথিবীকে৷ কিন্তু বাস্তবে কী তা হচ্ছে? মানবজাতি এক হয়ে রুখে দাঁড়াচ্ছে? তা কিন্তু আমি অন্তত দেখতে পাচ্ছি না৷ বরং এই ভাইরাস বিজ্ঞান বনাম ধর্ম, চীন বনাম যুক্তরাষ্ট্র, গণতন্ত্র বনাম স্বৈরতন্ত্র, ধনী বনাম গরীব, ইত্যাদি নানা বিতর্ক আরো উসকে দিয়ে আমাদের বিভক্ত করে দিচ্ছে৷
বিশ্বের নানা প্রান্তে সিনোফোবিয়া বা চীনাবিদ্বেষ শুরু হয়েছে৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তো বরাবরই এটিকে চীনা ভাইরাস বলে উল্লেখ করে আসছেন৷ তার এই বিদ্বেষ যতোটা না রাজনৈতিক, তার চেয়ে বেশি অর্থনৈতিক বলেই আমার কাছে মনে হয়েছে৷ এণন পরিস্থিততেও কিভাবে করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতির নেতৃত্ব দেয়া যায় সে চিন্তায় বিভোর দুই দেশ৷
কোভেক নামে জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন আবিষ্কারের পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছে৷ ট্রাম্প নাকি কেবল অ্যামেরিকার জন্য এ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে বিপুল অর্থও সেধেছিলেন এ প্রতিষ্ঠানকে৷ জার্মানি-ফ্রান্স-ক্যানাডার জন্য প্রস্তুত করা মাস্ক ও অন্যান্য চিকিৎসা সুরক্ষা পণ্য একপ্রকার জোর করে নিজেরা নিয়ে নেয়ার অভিযোগও উঠেছে অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে৷
অন্য়দিকে, ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে একতাবোধ গড়ে তোলার মূল স্তম্ভ উন্মুক্ত সীমানা, ভিসাবিহীন চলাচল এবং একক মুদ্রাব্যবস্থা পড়েছে হুমকির মুখে৷ প্রায় সবকটি দেশ বন্ধ করে দিয়েছে নিজেদের সীমান্ত৷ এখন করোনার অর্থনৈতিক সংকট কিভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে ইউরোপ৷ একদিকে ইটালি, পর্তুগাল, স্পেন, গ্রিস চায় সহজ শর্তে করোনা বন্ড৷ অন্যদিকে জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক এর বিরোধী অবস্থানে৷ এ নিয়ে দিনের পর দিন আলোচনা করেও দেশগুলো একমত হতে পারেনি৷ শিগগিরই সবাই এ বিষয়ে একমত হলেও এই ক্ষত করোনা দূর হলেও থেকেই যাবে৷
এ তো গেলো রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গৃহীত নীতির কথা৷ আমরা ব্যক্তি হিসেবেও যে খুব মানবিক ভূমিকা রাখছি, তা কিন্তু না৷ বাংলাদেশে নিজের আশেপাশের মানুষের কথা চিন্তা না করেই কিছু প্রবাসী কোয়ারান্টিন মানতে অপারগ হলেন৷ ফলশ্রুতিতে বয়ে গেল প্রবাসীবিদ্বেষের ঢেউ৷ এরপর আমরা পেতে থাকলাম করোনা শনাক্ত হলেই তাকে সামাজিকভাবে হেয় করা, বাসা থেকে বের করে দেয়া, হাসপাতাল বানাতে না দেয়া, কবর দিয়ে না দেয়া, এমনকি চিকিৎসা পর্যন্ত না দেয়ার খবর৷
গার্মেন্টস কর্মীরা কেনো দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর বাস-লঞ্চ ভর্তি করে দেশের বাইরে চলে গেলেন, আবার কেন পায়ে হেঁটে বা ট্রাকে চেপে চলে আসলেন, এ নিয়ে অনেকের ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে৷ কিন্তু একবার ভেবে দেখেছেন, এর কারণটা কী? কখনও কোনো গার্মেন্টস শ্রমিকের বাসায় গিয়েছি আমরা? আমি গিয়েছি৷ ফলে আমি জানি, আমরা সুবিধাপ্রাপ্তরা যাকে হোম কোয়ারান্টিনের মজা বলে উপভোগ করি, একজন দিনমজুর বা গার্মেন্টস শ্রমিকের জন্য সেটা কতোটা কষ্টদায়ক৷
জার্মানিতেও দেখেছি কন্টাক্ট ব্যান ঘোষণার আগে থেকেই মানুষ দোকান খালি করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য গাড়ি ভর্তি করে নিয়ে যাচ্ছেন৷ অথচ এসব জিনিস হয়তো তিনি এক মাসেও শেষ করতে পারবেন না৷ নিজের প্রয়োজনটা সবার আগে, পরে যে আসছে সে না খেতে পারলেও আমার কিছু যায় আসে না?
এখনও জার্মানির ফার্মেসিগুলোতে মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে না৷ শুরুতেই অনেকে মাস্ক কিনে নিয়ে বাসায় জমিয়ে রেখেছেন৷ অথচ এই স্বার্থপরতার সময়ে এই সাধারণ জ্ঞানটুকু আমাদের মাথায় কাজ করে না, আপনার পাশের মানুষটি মাস্ক না পরার কারণে আক্রান্ত হলে আপনি মাস্ক পরে বাঁচতে পারবেন না!
আমরা কোয়ারান্টিনে থাকায় পরিবেশ বিশুদ্ধ হচ্ছে, নদী, সাগর, আকাশ নীল হচ্ছে, সাগরে ডলফিন, রাস্তায় হরিণ দেখা যাচ্ছে. আমরা এতে খুব আনন্দিত হচ্ছি৷ কিন্তু করোনা চলে গেলে? আমরা কি বন উজাড় করা ছেড়ে দেবো? আমরা কি বলবো, ‘আমার এসি দরকার নেই, ভোগবিলাস কমিয়ে দিচ্ছি তবুও পরিবেশ সুস্থ থাক'?
করোনা ভাইরাস বিশ্বকে একদিক থেকে এক কাতারে নিয়ে এসেছে৷ সবাই এখন সমানভাবে আক্রান্ত৷ অন্তত আমার জীবদ্দশায় এই প্রথম এশিয়া বা আফ্রিকা বা ইউরোপ, সবাই এক সুরে বলছে, ‘ভালো থেকো, সাবধানে থেকো'৷
বিজ্ঞানীরা একযোগে কাজ করছেন, শিগগিরিই হয়তো মিলবে ভ্যাকসিন৷ মানুষ শেষ পর্যন্ত ভাইরাসের বিরুদ্ধে জিতে যাবেই৷ কিন্তু মানবতা যে ক্রমশ হেরেই চলেছে এর প্রমাণ কিন্তু চোখের সামনে৷ টের পাচ্ছেন?
তারকাদের লকডাউন
ভারতে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। কী ভাবে সময় কাটাচ্ছেন বাঙালি তারকারা? তাঁদের অন্দরমহলে ঢুঁ মারলো ডয়চে ভেলে।
ছবি: bdnews24.com
কবিতা শোনাচ্ছেন অপর্ণা
তিনি একাধারে অভিনেত্রী আবার পরিচালক। তবে লকডাউনের বাজারে আবৃত্তিকারের ভূমিকায় অপর্ণা সেন। অনলাইনে প্রায় প্রতিদিন কোনও না কোনও বাংলা কবিতা আবৃত্তি করছেন তিনি। একই সঙ্গে পড়ে শোনাচ্ছেন সেই কবিতার ইংরেজি অনুবাদ।
ছবি: bdnews24.com
কাপড়ও কেচেছেন প্রসেনজিৎ
কলকাতার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি পরিচিত বুম্বা নামে। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নিজেই নিজের বিজ্ঞাপন। লকডাউনের কয়েক দিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফিরেছেন তিনি। ফলে ১৫ দিন নিজেকে সকলের থেকে আলাদা করে রেখেছিলেন। চারতলার বাড়ির একটি তলায় সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়েছেন তিনি। এমনকী, নিজের কাপড়ও নিজেই কেচেছেন। কোয়ারান্টিন শেষ করেই অমিতাভের অনুরোধে ঘরে বসে শ্যুটিং করেছেন বুম্বা।
ছবি: by_sa
লেখাপড়া আর ছবি
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয় দেওয়া নেহাতই অপ্রয়োজনীয়। লকডাউনে বই, লেখালিখি আর ছবি আঁকায় মগ্ন তিনি। সৌমিত্র শুধু অভিনেতা নন, বড় মাপের কবিও। লকডাউন নিয়ে কোনও কবিতা লিখেছেন কি? এখনই কিছু বলতে নারাজ সত্যজিতের ফেলুদা। তবে এরই ফাঁকে পরিযায়ী শ্রমিকদের সাহায্যের বার্তাও দিয়েছেন তিনি।
ছবি: AP
ঘরে নেই মহারাজ
আর সব তারকার মতো নিজেকে সম্পূর্ণ গৃহবন্দি করে রাখেননি প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক এবং বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস পরে সৌরভ নেমে পড়েছেন সেবার কাজে। ২০ হাজার কিলোগ্রাম চাল তিনি দিয়ে এসেছেন বেলুড় মঠে। কলকাতার ইসকনে গিয়ে তিনি কয়েক হাজার গরিব মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করে দিয়ে এসেছেন। সৌরভ জানিয়েছেন, প্রয়োজনে ফের রাস্তায় নেমে কাজ করতে প্রস্তুত তিনি।
ছবি: Getty Images/AFP/P. Paranjpe
গৃহবন্দি দেব
অভিনেতা এবং সাংসদ দেব ২২ মার্চ থেকে সম্পূর্ণ গৃহবন্দি। ছুটি দিয়ে দিয়েছেন কাজের লোকদের। আপাতত তিনি বাড়ি সাজাতে ব্যস্ত। একই সঙ্গে নিয়মিত খোঁজ রাখছেন সংসদীয় এলাকার। তবে আর সব তারকার মতো ত্রাণ তহবিলে দানের কথা তিনি জানাতে চান না। তাঁর বক্তব্য, দানের কথা বিজ্ঞাপন করে জানাতে নেই। এবং সে কারণেই লকডাউন পর্বে নিজেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও দূরে রেখেছেন দেব। কেবল খোঁজ রাখছেন মুম্বইয়ে আটকে পড়া মায়ের।
ছবি: Creative Commons
বিদেশে আটকে ঋতুপর্ণা
এই মুহূর্তে তিনি দেশে নেই। লকডাউনের আগেই সিঙ্গাপুরে গিয়েছেন। সেখানেই স্বামীর সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তবে মন পড়ে আছে কলকাতায়। নরেন্দ্র মোদী আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশ জুড়ে প্রদীপ জ্বালানোর জন্য। সকলকে সেই আহ্বানে সাড়া দিতে বলেছিলেন ঋতুপর্ণা। বলেছিলেন, বাড়িতে বসে সাহসী চিকিৎসকদের উৎসাহ দেওয়াই এখন একমাত্র কাজ। প্রদীপ জ্বালিয়ে সে ছবি পোস্টও করেছিলেন তিনি।
ছবি: UNI
কোয়ারান্টিনের জন্য অফিস
তিনি বাঙালি নন। তবে পশ্চিমবঙ্গের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। কলকাতা নাইট রাইডার্সের মালিক। ইদানীং শাহরুখ খান মজা করে নিজেকে 'বাঙালিবাবু' বলেন। করোনা আক্রান্তদের জন্য নিজের অফিস ছেড়ে দিতে চেয়েছেন শাহরুখ। জানিয়েছেন, সানন্দে সেখানে কোয়ারান্টিন সেন্টার তৈরি করতে পারে সরকার। সরকারের তৈরি ত্রাণ তহবিলেও বিপুল টাকা দান করেছেন শাহরুখ। প্রয়োজনে আরও সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাজ্যগুলিকে।