1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অস্ট্রেলিয়ার আশ্রয় শিবিরে পাপুয়া পুলিশের হামলা

২৩ নভেম্বর ২০১৭

পাপুয়া নিউগিনির মানুস দ্বীপে একটি শরণার্থী শিবির থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের অন্যত্র সরিয়ে নিতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ৷ গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে পানি, খাবার ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়ায় মানবিক বিপর্যয়ের আশংকা রয়েছে৷

ছবি: picture-alliance/AP Photo/Refugee Action Coalition

পাপুয়া নিউগিনির কর্তৃপক্ষ মানুস দ্বীপের শরণার্থী শিবির থেকে অন্তত চারশ' আশ্রয়প্রার্থীকে পার্শ্ববর্তী দ্বীপে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে৷ তবে পাপুয়ার এই শরণার্থীদের জন্য অর্থ দিয়ে থাকে অস্ট্রেলিয়া৷ দেশটির বিতর্কিত শরণার্থী নীতির কারণে তারা নিজের দেশে শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে পারে না৷ 

পাপুয়ার পুলিশ প্রধান বলেছেন, বৃহস্পতিবার সকালে ৫০ জন পুলিশ এবং অভিবাসন কর্মকর্তারা ক্যাম্পে প্রবেশ করে এবং ৩৭৮ জন শরণার্থীর মধ্যে মাত্র ৩৫ জনকে বাসে করে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়৷ 

মানুস দ্বীপের আশ্রয় প্রার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ তাদেরকে সরিয়ে নেয়ার জন্য তাদের উপর বল প্রয়োগ করেছে৷ সেখানে তিন সপ্তাহ আগে থেকে পানি, বিদ্যুৎ ও খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং জাতিসংঘ সেখানে সহিংসতা এবং মানবিক সংকটের আশংকা করছে৷

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শরণার্থী শিবির থেকে অনেককে আটক করা হয়েছে, এর মধ্যে আছেন ইরানি সাংবাদিক ও শরণার্থী বেহরোজ বুখানি, যিনি বরাবরই এই আশ্রয় শিবিরের শরণার্থীদের অধিকারের জন্য সোচ্চার৷ গ্রেপ্তারের আগে তিনি একটি টুইট করেছিলেন, যেখানে বলা হয়েছিল পুলিশ তাঁদের যাবতীয় জিনিসপত্র নষ্ট করে ফেলছে৷ বন্ধ করে দিয়েছে পানি, বিদ্যুৎ ও খাবার সরবরাহ৷

তবে পাপুয়ার পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাঁদের উপর কোনো রকম বল প্রয়োগ করা হয়নি৷ অস্ট্রেলিয়ার কঠোর শরণার্থী আইনের জের ধরে এই আশ্রয়প্রার্থীদের মানুস দ্বীপে রাখা হয়েছে৷ সেই আইনে বলা হয়েছে, নদীপথে অর্থাৎ নৌকায় করে যারা দেশে ঢুকবে, তাদের সে দেশে থাকতে দেয়া হবে না৷ জাতিসংঘ এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলো বরাবরই অস্ট্রেলিয়ার এই শরণার্থী আইনের বিরোধিতা করে আসছে৷

মানুস শরণার্থী শিবিরে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবনযাপন অমানবিক উল্লেখ করে গত বছর পাপুয়া নিউ গিনি'র সুপ্রিম কোর্ট একে অবৈধ ঘোষণা করে এবং অস্ট্রেলিয়ার সরকারের কাছে এটি বন্ধের আহ্বান জানায়৷ মানুস ক্যাম্পের শরণার্থীদের বেশিরভাগই এসেছেন আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ইরান, শ্রীলংকা এবং সিরিয়া থেকে৷ সুপ্রিমকোর্টের এই আদেশের প্রতিবাদ স্বরূপ অন্তত চারশ' আশ্রয়প্রার্থী ৩১ শে অক্টোবর থেকে ঐ শরণার্থী শিবিরে স্বেচ্ছা বন্দি অবস্থায় রয়েছেন৷ তাঁদের আশংকা, অন্য দ্বীপে তাঁদের সরিয়ে নেয়া হলে সেখানে বন্দি জীবন যাপন করতে হবে৷

গত সপ্তাহেই আশ্রয়কেন্দ্রে ওষুধের মজুদ শেষ হয়ে গেছে৷ আর্দ্র আবহাওয়ায় এবং প্রচণ্ড গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ পানির অভাবে সেখানে কুয়া খুঁড়তে শুরু করেছেন তারা৷ জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার একজন প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দিন দিন এখানকার পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে৷ অস্ট্রেলিয়ার উচিত এই আশ্রয়প্রার্থীদের দায়িত্ব নেয়া এবং অবিলম্বে সংকট সমাধানে এগিয়ে আসা৷

তবে অস্ট্রেলিয়া সরকার অটল৷ নদীপথে শরণার্থীদের বিদেশে আসতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা এবং মানবপাচার রোধে তাদের এই শক্ত অবস্থান৷ অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল বলেছেন, ‘‘পাপুয়া নিউগিনি এই শরণার্থীদের উপর খারাপ ব্যবহার করছে, যাতে আমরা তাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য হই৷ কিন্তু আমরা আমাদের শরণার্থী নীতি কখনোই লঙ্ঘন করবো না৷ মানুস -এর শরণার্থী শিবিরের আশ্রয় প্রার্থীদের বিকল্প নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে, যেখানে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে৷’’

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ