1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মান্ধাতা আমলের গাড়ি যদি ব্যাটারিতে চলে!

১৬ অক্টোবর ২০১৯

পুরানো আমলের ভিন্টেজ গাড়ির প্রতিযোগিতায় গেলে ফেলে আসা যুগের স্বাদ পাওয়া যায়৷ এবার এমন গাড়িতে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন বসিয়ে ‘আধুনিক' করে তোলা সম্ভব হচ্ছে৷ কিন্তু এমন প্রচেষ্টাকে ঘিরে বিতর্ক কম নয়৷

ছবি: C. Braemer

ইঞ্জিনে রূপান্তর

পুরানো আমলের ভিন্টেজ গাড়ি মানেই যে বিকট শব্দ ও ধোঁয়ার গন্ধ, এমনটা নাও হতে পারে৷ যেমন ডিয়র্ক লেমান-এর ১৯৩৮ সালের গাড়ির মধ্যে এখন ইলেকট্রিক মোটর বসানো হয়েছে৷ এমন রূপান্তর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এই গাড়ির বয়স প্রায় ৮০ বছর এবং এটির পুনর্জন্ম হচ্ছে৷ আমরা প্রায় কোনো শব্দ ছাড়াই নিসর্গ উপভোগ করতে পারি৷ আমার গাড়ির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন করতে চাই না বটে, কিন্তু এর মাধ্যমে একটা বার্তা পাঠাচ্ছি৷ আমি মানুষকে দেখাতে চাই যে চাইলে সত্যি পরিবর্তন আনা সম্ভব৷’’

এটা কি একটা প্রবণতা হয়ে উঠতে পারে? ডিয়র্ক লেমান সেই লক্ষ্যে ব্যবসার এক মডেল তৈরি করেছেন৷ জার্মানির উত্তরে হামবুর্গের কাছে ভিনসেন শহরে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে পুরানো গাড়িতে রদবদল করা হয়৷ প্রত্যেকটি মডেলের জন্য প্রয়োজনমতো সরঞ্জাম বসানো হয়৷ এমন রূপান্তরের জন্য এক লাখ ইউরো পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে৷ বাজারের চাহিদা সম্পর্কে ডিয়র্ক লেমান বলেন, ‘‘কিছু উৎসাহী মানুষ পুরোপুরি ইলেকট্রিক গাড়ি চালাতে চান৷ কিন্তু সেই এত টেসলা ছাড়া প্রায় কোনো মডেলই পাওয়া যেত না৷ টেসলা অনেকটা চলমান আইপ্যাডের মতো৷ তাই ২০১৫ সালে আমরা মানুষের পছন্দের গাড়ির রূপান্তরের কাজ শুরু করি৷’’

পুরনো গাড়িতে নতুন ইঞ্জিন নিয়ে বিতর্ক

04:18

This browser does not support the video element.

প্রযুক্তি সত্ত্বেও মূল্যবোধে বাঁধে

প্রতিটি মডেলই অদ্বিতীয়৷ তবে সবাই ভিন্টেজ গাড়িকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার বিষয়ে নিশ্চিত নয়৷ যেমন ভিন্টেজ গাড়ি সংগ্রহকারী হিসেবে কার্লহাইনৎস রেকফ ১৮৯৪ সালে তৈরি বেনৎস ভিক্টোরিয়া মডেল চালান৷ সেটি বিশ্বের সবচেয়ে পুরানো গাড়িগুলির অন্যতম৷ তার মধ্যে ইলেকট্রিক মোটর বসানোর কথা তিনি কল্পনাই করতে পারেন না৷ তাঁর মতে, ‘‘সেটা হবে মহাপাপের থেকেও খারাপ, দায়িত্বজ্ঞানহীন অজ্ঞানতা৷ নতুন কিছু বসালে অতীতের প্রতি অসম্মান করা হয়৷ এ যেন গাড়ির অঙ্গচ্ছেদ করার মতো ঘটনা৷’’

অনেক সংগ্রহকারীর কাছে গাড়ি আসলে বিনিয়োগের বস্তু৷ গাড়ি কতটা তার মৌলিক রূপের কাছাকাছি ধরে রেখেছে, সেটির মূল্য তার উপর নির্ভর করে৷ বার্লিনের কার্ল ক্রিস্টিয়ান ইয়ানকে গাড়ির মূল্য নির্ধারণের লক্ষ্যে এক ইনডেক্স সৃষ্টি করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘নীতিগতভাবে একটি ভিন্টেজ গাড়ির মূল্য কমে যাবার কথা, কারণ সেটির ঐতিহাসিক চরিত্র আর বজায় থাকছে না৷ গাড়ির আসল ইঞ্জিন ও আসল গিয়ার ইউনিট চালু থাকলেই মূল্য অত্যন্ত বেড়ে যাবে৷’’

সার্বিক মূল্যায়নের পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি

কিন্তু নতুন ইঞ্জিনবিশিষ্ট পুরানো গাড়ি কি পুরানোই থেকে যায় না? ফিলিপ বাটিয়ানির মতো সংগ্রহকারী তা একেবারেই মনে করেন না৷ তিনি তাঁর ১৮৭০ এর দশকের বিএমডাব্লিউ গাড়ির পেট্রোল ইঞ্জিনে কখনোই রদবদল করতে প্রস্তুত নন৷ ফিলিপ মনে করেন, ‘‘সেটা হবে গাড়ির হৃদযন্ত্র খুলে নেওয়ার মতো ঘটনা৷ ইঞ্জিন বিএমডাব্লিউ গাড়ির হৃদযন্ত্র৷ সেটি কেটে বার করে নিলে শুধু হৃদয় নয়, সম্ভবত আত্মাও সরিয়ে ফেলা হবে৷’’

ভবিষ্যতে পেট্রোল ইঞ্জিন নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও তাঁর মনে উদ্বেগ নেই৷ ফিলিপ বাটিয়ানি বলেন, ‘‘পেট্রোল ইঞ্জিনযুক্ত গাড়ি নিষিদ্ধ হয়ে গেলে আমার গাড়ি কোথাও একটা দাঁড়িয়ে থাকবে৷ তখন সেটির সাংস্কৃতিক মূল্য অবশিষ্ট থাকবে৷’’

ভিন্টেজ গাড়ি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কার্ল ক্রিস্টিয়ান ইয়ানকে মনে করেন, ‘‘পুরানো গাড়ির ক্ষেত্রে আমার পছন্দের বিষয় হলো, সেগুলি ইতিহাসের কোনো এক যুগের প্রতিনিধি এবং আমি সরাসরি সেই ইতিহাসের স্বাদ নিতে পারি৷ মিউজিয়ামে না গিয়েও সেই সময়কাল কেমন ছিল, সেই অনুভূতি হয়৷’’

তবে ডিয়র্ক লেমান মনে করেন, ‘‘কিন্তু তার জন্য আমাকে ইঞ্জিনের বিকট শব্দ শুনতে হয় না৷ এই গাড়িতে চাপলে এমন স্প্রিং, অনবদ্য স্টিয়ারিং-সহ অনবদ্য এই গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা হয়৷’’

অর্থাৎ ইঞ্জিনের বিকট শব্দের আর প্রয়োজন নেই, সামান্য গরগর শব্দ হলেই চলবে৷ ই-মোটরের কল্যাণে ভিন্টেজ গাড়িতেও হালের প্রযুক্তি যুক্ত হতে পারে বৈকি!

গেয়ারহার্ড সনলাইটনার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ