‘মাপজোক করে পানিবণ্টনের সমস্যার সমাধান অসম্ভব’
১৮ জানুয়ারি ২০১২![Mr.Nazrul islam, Senior Economic Affairs Officer, UN, New York](https://static.dw.com/image/6580994_800.webp)
অভিন্ন নদীগুলি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ইস্যু বলে মনে করেন জাতিসংঘে কর্মরত অর্থনীতি ও সামাজিক বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্কের বিশ্ব-সমন্বয়কারী ড. নজরুল ইসলাম৷ নদনদীর বিষয়টির সুরাহা করতে না পারলে অন্যান্য ক্ষেত্রে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি বাধাগ্রস্ত থেকে যাবে৷ উজান অবস্থানের কারণে ভারত নদনদী থেকে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে৷ ভারতকে স্থির করতে হবে, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সেদেশ কোন দৃষ্টিভঙ্গি, কোন অবস্থান গ্রহণ করবে৷
নদনদীগুলির স্বাভাবিক প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা উচিত বলে মনে করেন ড. নজরুল ইসলাম৷ নিঃসন্দেহে প্রকৃতির শক্তিকে কাজে লাগানো উচিত, কিন্তু প্রকৃতির সরাসরি বিরুদ্ধাচরণ করাটা শেষ বিচারে মঙ্গলজনক হয় না৷ বিষয়টি দার্শনিক মনে হলেও বাস্তবেও এর যৌক্তিকতা রয়েছে৷ তাছাড়া মনে রাখতে হবে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যের উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রয়োজন৷ ট্রানজিটের সেই সুবিধার বিনিময়ে ভারতকেও নদীর পানির ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে৷ অর্থাৎ দুই দেশই ভৌগোলিক কারণে এমন কিছু সুবিধা ভোগ করে, যা একে অপরের কাজে লাগতে পারে৷
এক্ষেত্রে আবেগ সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র বৈজ্ঞানিক পরিমাপের মাধ্যমে নদীর পানিবণ্টনের সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন না ড. নজরুল ইসলাম৷ তিস্তা নদীর অবস্থা খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কল্যাণ রুদ্রের নেতৃত্বে যে কমিশন গঠন করেছেন, সেই কমিশন যদি শুধু পশ্চিমবঙ্গে সেচের চাহিদা মেটাতে সব পানি প্রয়োজন বলে মনে করে, সেক্ষেত্রে কিছু করার থাকবে না৷ ফলে মাপজোক নয়, মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি এক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ ভারতকে তাই কিছু নীতিগত সিদ্ধান্তে আসতে হবে৷ অতএব প্রকৃতির কাজে বাধা দিলেই দেশে-দেশে, রাজ্যে-রাজ্যে সংঘাতের সম্ভাবনা থেকে যায়৷ এছাড়া অন্য কোনো বিকল্প খুঁজে পাওয়া কঠিন৷
সাক্ষাৎকার: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক