1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই

ফিলিপ সান্ডনার/আরবি২৫ অক্টোবর ২০১৩

২০০৩ সালে মাপুটো বিবৃতির মাধ্যমে আফ্রিকান ইউনিয়ন ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল৷ ১০ বছর পরেও দৃঢ়চিত্তে একই সমস্যার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে আফ্রিকার দেশগুলি৷

A woman carries cans to fill them with water in Katawane, near Nema, southeastern Mauritania, on May 4, 2012. Mali's March 22 military coup and the subsequent seizure of half the country by rebels have compounded the already worrying effects of a food crisis across West Africa's Sahel region. The UN estimates the Mali crisis has forced more than 320,000 people from their homes, with 187,000 seeking refuge in neighbouring countries, including Niger -- already in the grips of a new drought that has put millions at risk of hunger. AFP PHOTO / ABDELHAK SENNA (Photo credit should read ABDELHAK SENNA/AFP/GettyImages)
ছবি: ABDELHAK SENNA/AFP/GettyImages

ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই একবিংশ শতাব্দীর এক বিরাট চ্যালেঞ্জ৷ জাতিসংঘ সহস্রাব্দের লক্ষ্য হিসাবে বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে৷ সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, ফাও সতর্কবাণী উচ্চারণ করে জানিয়েছে, সাহারা এলাকার ১১ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছে৷ দরিদ্র পরিবাররা তাদের সঞ্চিত খাদ্যদ্রব্য প্রায় নিঃশেষ করে ফেলেছে৷ এখন তাদের চড়া মূল্যে খাদ্যদ্রব্য কিনতে হবে৷ তাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দানের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে৷

আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল চাষিরা

ক্ষুদ্র চাষি ও পশুপালকদের সঞ্চয় খুব কম৷ তারা প্রকৃতি ও আবহাওয়ার দয়ার ওপর নির্ভরশীল বলে জানান ফাও-এর ঘানাস্থ প্রতিনিধি জেমস টেফট৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুষ্ক অঞ্চলে এমনিতেই উৎপাদন কম, তাই যে-কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগই মারাত্মক হতে পারে৷

আফ্রিকার পাঁচটির মধ্যে চারটি দেশই কৃষিনির্ভর৷ অন্যদিকে জনসংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে মহাদেশটিতে৷ তাই উত্পাদনও না বাড়ালেই নয়৷ আফ্রিকান ইউনিয়ন এটা আগেই বুঝতে পেরেছে৷ এ কারণে ২০০৩ সালে মোজাম্বিকের রাজধানী মাপুটোতে এক শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হয় আফ্রিকার দেশগুলি৷ ঘোষণা দেয় সমগ্র বাজেটের কমপক্ষে ১০ শতাংশ কৃষিক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার কথা৷ ২০১৩ সালে ১০ বছর পূর্ণ হলো মাপুটো ঘোষণার৷ এই লক্ষ্যের কতটা পূরণ হয়েছে সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে এখন৷

আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের প্রধান এঙ্কোসাজানা ড্লামিনি-জুমাছবি: Mulugeta Ayene/AFP/Getty Images

প্রথম দৃষ্টিতে উচ্চাকাঙ্খী মনে হবে না

প্রথম দৃষ্টিতে ১০ শতাংশ খুব একটা উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্য নয় বলে মনে করা হয়৷ এমন মন্তব্য জার্মান সাহায্য সংস্থা ‘ব্রোট ফ্যুর দি ভেল্ট' এর (ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ড) ফ্রান্সিসকো মারি'র৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, তবে এটাও মনে রাখতে হবে যাত্রার শুরুটা খুব মসৃণ ছিল না৷

‘‘এর আগের বছরগুলিতে ক্ষুদ্রচাষিদের অনেকবার সাহায্য করতে হয়েছে৷ এছাড়া পশ্চিমা দেশগুলি আফ্রিকার কাছে ঋণশোধের দাবি করে বসে৷'' এর ফলে সরকারি অর্থসাহায্য, চাষিদের জন্য পরামর্শ কর্মসূচি কিংবা পশু চিকিৎসা প্রকল্প বাতিল হয়ে যায়৷

আফ্রিকার অনেক দেশ ক্ষুধা নিরোধের লক্ষ্য থেকে এক দশক পরও অনেক দূরে রয়েছে৷ ৫৪টির মধ্যে মাত্র ১০টি দেশ ১০ শতাংশের সীমানায় পৌঁছাতে পেরেছে বলে জানান আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের প্রধান এঙ্কোসাজানা ড্লামিনি-জুমা৷ ‘‘দশ বছর পর এই ফলাফলটা খুব উৎসাহব্যঞ্জক নয়,'' বলেন জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থার জেমস টেফট৷ তবে এতে শুধু কৃষিক্ষেত্রেই দৃষ্টি দিলেই হবে না৷ রাস্তাঘাট নির্মাণ কিংবা বিদ্যুৎক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ৷

শুধু অর্থই সমাধান করতে পারে না

ফ্রান্সিকো মারি মনে করেন শুধু অর্থই সমস্যার সমাধান করতে পারে না৷ জরুরি হলো সাহায্যের গুণগত মান৷ লক্ষ্য রাখতে হবে চাহিদার দিকে৷ যেমন ঘানায় বিনিয়োগের একটা মোটা অংশই কৃষিখাতে কারিগরি ও প্রযুক্তির ব্যাপারে ঢালা হচ্ছে৷ এটা সবসময় বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খায় না, বলেন মারি৷ এই কর্মসূচিতে বড়বড় ট্রাক্টর কেনা হয়েছে৷ যেখানে আফ্রিকার বেশিরভাগ কৃষিখেতই ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত৷ আড়াই হেক্টরের মতো৷ সেসব জায়গায় ট্রাক্টর তেমন কার্যকর নয়৷ আফ্রিকা ইউনিয়নের উচিত হবে ক্ষুদ্র চাষিদের চাহিদা অনুযায়ী সাহায্য করা৷ এছাড়া আফ্রিকার অভ্যন্তরীণ বাজারকেও বিস্তৃত করতে হবে৷ এতে করে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মূল্য ওঠানামা করলেও চাষিরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না৷

গত জুলাই মাসে আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত হয় শীর্ষ বৈঠকছবি: Getty Images

ফাও বিশেষজ্ঞ জেমস টেফট-এর মতে ভবিষ্যতে সফল প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরতে হবে, জানাতে হবে মানুষকে৷ এক্ষেত্রে অনেক নতুন নতুন সফল মডেল রয়েছে৷ জনসাধারণের একটা ছোট অংশই এসব থেকে লাভবান হয়৷ ক্ষুদ্র চাষিরাও যাতে এসব মডেল থেকে উপকৃত হয় সেদিকে নজর দিতে হবে৷

মাপুটো ঘোষণার ১০ বছর পরেও যে ক্ষুধার বিরুদ্ধে জয় লাভ করা যায়নি, সেটা আফ্রিকার সরকার প্রধানরা স্বীকার করলেন গত জুলাই মাসে আদ্দিস আবাবায় অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে৷ এজন্য তাঁরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কথা জানালেন, যাতে ২০২৫ সাল নাগাদ ক্ষুধা দূর করা যায়৷ এই ক্ষেত্রে যাত্রা সহযোগী ব্রাজিলের লুলা ইন্সটিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ