বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচিত বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী এবার সাংসদ হতে চান৷ এর মধ্যে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ-ও নাকি পেয়েছেন৷
বিজ্ঞাপন
এ বি সিদ্দিকী সর্বশেষ মামলাটি করেন গত ৩রা ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে৷ তিনি অবরোধ, হরতালে ৪২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় খালেদার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনেন৷ আদালতে দায়ের করা মামলায় খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করা হয়৷ মামলাটি আদালত আমলে নিয়ে পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে৷
তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ বি সিদ্দিকীর এটাই প্রথম মামলা নয়৷ এর আগেও দু'টি মামলা করেছেন তিনি৷ গত বছরের ২১শে অক্টোবর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগকে ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী দল বলায় সংক্ষুব্ধ হয়ে এ বি সিদ্দিকী সর্বপ্রথম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেন৷ মামলাটির তদন্ত এখনও চলছে৷ এরপর ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের আগে গোপালগঞ্জের মানুষকে খালেদা গোপালি বলার অভিযোগে দায়ের করা মামলাটি আদালত খারিজ করে দেয়৷
এ বি সিদ্দিকী প্রথম রাজনৈতিক মামলাটি করেন ২০১১ সালে ইসলামী ঐক্যকোট নেতা মুফতি ফজলুল হক আমীনীর বিরুদ্ধে৷ তারপর এক এক করে মামলা করেন বুয়েট-এর শিক্ষক হাফিজুর রহমান, বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামান, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে৷
এই সব মামলার বাদি এ বি সিদ্দিকীর সঙ্গে ডয়চে ভেলের সঙ্গে কথা হয় রবিবার মতিঝিলে তাঁর অফিসে বসে৷ তিনি জানান, এরই মধ্যে তাঁর দায়ের করা মামলায় বুয়েটের শিক্ষক হাফিজুর রহমানের সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে৷ তিনি এখন পলাতক৷ হাফিজুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে ফেসবুকে হুমকি দিয়েছিলেন৷ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়াহিদুজ্জামনও চাকরি হারিয়ে এখন পলাতক৷ তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে৷ তিনিও ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়েছিলেন৷
সিদ্দিকী বলেন, ‘‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধ৷ বঙ্গবন্ধুর সৈনিক৷ তাই বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর কোনো হামলা বা কটুক্তি করা হলেই আমি মামলা করি৷ এটা আমার প্রতিবাদ৷'' তবে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩রা ফেব্রুয়ারি মামলাটি তিনি জনগণের পক্ষ থেকে করেছেন বলে জানান এ বি সিদ্দিকী৷
এ বি সিদ্দিকীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালী পাড়ায়৷ এখন তিনি দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন ঢাকার রামপুরার মহানগর প্রজেক্ট এলাকার একটি ভাড়া বাসায়৷ ২০০২ সালে বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদ গঠন করেন তিনি৷ তাঁর এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির মোট সদস্য ১০১ জন৷ বনানীতে এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়৷ তবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস, একই এলাকায় খদ্দর মার্কেটে এবং মতিঝিলের একটি অফিসেও তিনি বসেন৷ তিনি দাবি করেন, জননেত্রী পরিষদ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত৷
অবরোধ-হরতালে বিপর্যস্ত জনজীবন
বাংলাদেশে টানা অবরোধ ও হরতালের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা৷ ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা প্রায় শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে৷ শুধু অর্থনীতি নয়, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় মুষড়ে পড়েছে পরিবহন ও শিক্ষা ব্যবস্থাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন
পুরনো ঢাকার বাবু বাজারে কাগজ বোঝাই একটি ট্রাকে জ্বলছে দুষ্কৃতিকারীদের দেয়া পেট্রোল বোমার আগুন৷ গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে চলছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ৷ ডাকা হচ্ছে হরতালও৷ অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে আলোচিত পেট্রোল বোমা৷ শুধু পেট্রোল বোমার আগুনেই পুড়ে মরেছে কমপক্ষে ৬৫ জন সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুলিশ প্রহরায় চলছে পরীক্ষা
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়িাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পুলিশ প্রহরা৷ চলমান এ অবরোধ-হরতালে যাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তার মধ্যে শিক্ষার্থীরা অন্যতম৷ বর্তমানে সারা দেশে চলা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন তাই অনেকটাই অনিশ্চয়তার মুখে৷ টানা অবরোধের মধ্যে ছুটির দিনগুলোতে চলছে পরীক্ষা৷ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দূরপাল্লার বাস নেই বললেই চলে
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলির ডাকা অবরোধে বাংলাদেশের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিত্ত৷ দুপুর বেলায় তোলা এ ছবিতে মহাসড়কটি প্রায় যানবাহন শূন্য৷ কিন্তু সাধারণ সময়ে এ সড়কটি থাকে যানবাহনে ভরা৷ বাংলাদেশে চলমান অবরোধে দূর পাল্লার গাড়ি চলাচল কমে গেছে বহুলাংশে৷ একের পর এক পেট্রোল বোমার ঘটনায় ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছেন না অনেক মালিকই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিজিবি-র টহল পর্যাপ্ত নয়
অবরোধের মধ্যে বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোয়, মানে ঢাকার বাইরে বিজিবি-র টহল থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য৷ এছাড়া সম্প্রতি রাত ন’টার পরে বাস চলাচলে সকলকে নিরুৎসাহ করার কারণে বাস মালিকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঢাকায় অস্বাভাবিক নয় যানজট
বাংলাদেশে চলমান এই অবরোধে ঢাকার ভেতরের সড়কের দৃশ্য অবশ্য আলাদা৷ যান চলাচল অন্যান্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম হলেও, অনেক জায়গাতেই যানজট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসযাত্রীরা
ঢাকার ফার্মগেটে অফিস শেষে গাড়ির অপেক্ষায় বাড়িমুখী মানুষের ভিড়৷ টানা অবরোধে গণ পরিবহন ব্যবস্থা বেহাল হলেও, অর্থাৎ গাড়িঘোড়ার চলাচল কম থাকাতে দুর্ভোগ বেড়েছে অফিসমুখী ও অফিস ফেরত মানুষের৷ অফিসে যেতে বা অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে সাধারণ মানুষ তাই পড়ছেন দুর্ভোগে৷
ছবি: DW/M. Mamun
অবরোধে নদীপথের ভিন্ন চিত্র
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীবন্দর ঢাকার সদরঘাটের চিত্র এটি৷ গত একমাসেরও বেশি সময়ের এই অবরোধে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উল্লেখযোগ্য বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি নদীপথে৷ তাই নদীপথে যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিকই আছে৷ ঢাকা থেকে প্রধানত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয় নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাসগুলো
বিএনপি ও সমমনা দলের জোটসমূহের ডাকা হরতাল-অবরোধে ঢাকার অন্যতম প্রধান বাস স্টেশন গাবতলীর দৃশ্য এটি৷ বেশিরভাগ দূর পাল্লার রুটের বাসই এ স্টেশনে পার্ক করে রাখা৷ হরতাল-অবরোধে দূর পাল্লার বাস চলাচল অনেকাংশেই বন্ধ আছে বাংলাদেশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খদ্দেরহীন এক রেস্তোরাঁ
ঢাকার গাবতলী বাস স্টেশনের খদ্দেরশূন্য মোহাম্মাদীয়া রেস্তোরাঁ৷ অবরোধের কারণে এ রেস্তোরাঁর লোকবল ১৬ জন থেকে ৮ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে৷ বাকি যে আটজন আছেন তাঁদেরও নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না মালিক৷ গাবতলী স্টেশন থেকে দূর পাল্লার বাস চলাচল কম থাকায় এ রেস্তোরাঁটি দিনের বেশিরভাগ সময় খালি থাকছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ি ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ
অবরোধ আর হরতালকারীদের প্রধান লক্ষ্য সড়কে চলাচলকারী বাস আর ট্রাক৷ বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগেই যাত্রীবাহী বাস কিংবা ট্রাকে৷ এতে কমপক্ষে ৬০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে পোড়ায় ক্ষত শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন আরো শতাধিক সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
কমলাপুর রেল স্টেশনে অপেক্ষায় যাত্রীরা
অবরোধে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করলেও, সময়সূচি ঠিক রাখতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ৷ বিভিন্ন সময়ে অবরোধকারীদের রেল লাইনের ‘ফিশপ্লেট’ খুলে ফেলার কারণে কয়েকটি ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনায় ট্রেনের গতি কমিয়ে চালাতে হচ্ছে৷ তাই বেশিরভাগ ট্রেনই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন৷
ছবি: DW/M. Mamun
খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশা
টানা অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাথের ভ্রাম্যমাণ দোকানদাররা৷ স্বল্প পুঁজির এ সব ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে অনেকেরই৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুঁজি ভেঙে চলছে যাঁর সংসার
ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকার ফুটপাথে কম্বলের ব্যবসা করেন গাজীরুল ইসলাম৷ দুপুরবেলা পর্যন্ত এ দিন তাঁর বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৭’শ টাকার একটি কম্বল৷ তাও তার কেনা দামের থেকে ৩০০ টাকা কম৷ লাভ তো দূরের কথা সংসার চালাতে এখন পুঁজি টুকুনিই ভরসা৷
ছবি: DW/M. Mamun
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রই যখন ভরসা
ঢাকার নবাবপুর থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে ফিরছেন এক গাড়ি চালক ও তাঁর সহকারী৷ টানা অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমার ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা হিসেবে নিজেদের গাড়িতে এখন থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখবেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
14 ছবি1 | 14
এ বি সিদ্দিকের লেখাপড়ার গণ্ডি এসএসসি পার হয়নি৷ কিছুদিন তিনি সৈনিকের চাকরি করেছেন৷ এরপর নব্বইয়ের দশকে দৈনিক বাংলা এবং দৈনিক খবরে স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন বলে জানান তিনি৷
বর্তমানে তিনি জননেত্রী পরিষদের সভাপতি ছাড়াও দৈনিক ভোরের আলো, সাপ্তাহিক অবদান, চিত্রজগত্-এর সম্পাদক৷ এছাড়া দৈনিক ভোরের চেতনার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক বলেও নিজেকে দাবি করেন তিনি৷
তিনি জানান, এখন তাঁকে মামলার কাজে সপ্তাহের সাতদিনই আদালতে থাকতে হয়৷ মামলার খরচ কীভাবে আসে? জানতে চাইলে এ বি সিদ্দিকী বলেন, ‘‘আমরা মামলার খরচ চালানোর জন্য একটি কমিটি গঠন করেছি৷ এই কমিটি অর্থ সংগ্রহ করে৷'' তহবিলে মামলা চালানোর জন্য কত টাকা আছে? জানতে চাইলে তা তিনি অবশ্য এড়িয়ে যান৷ তবে তাঁর সংসার নাকি ভালোভাবেই চলে যায়৷
অবশ্য তিনি জানান, ‘‘মামলা করতে এবং চালাতে তাঁর তেমন কোনো খরচ হয় না৷ কারণ তিনি আলোচিত মামলা করেন৷ তাই আইনজীবীরা তাঁদের প্রচারের জন্য বলতে গেলে বিনে পয়সাতেই মামলা করে দেন৷''
এ বি সিদ্দিকী জানান, ‘‘আমার একটি স্বপ্ন পূরণ হয়েছে৷ বুয়েট-এর শিক্ষক হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করার পর গত বছরে জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমার দেখা করার সুযোগ হয়েছে৷ আমি গণভবনে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি৷''
তিনি দাবি করেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে মাথায় হাত দিয়ে সাহস দিয়েছেন৷'' এরপর আর দেখা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এখন প্রায়ই আমার গণভবনে যাওয়ার সুযোগ হয়৷ এতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা আমাকে ঈর্ষা করেন৷''
বাংলাদেশে শরণার্থী, বাংলাদেশের শরণার্থী
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা, ইউএনএইচসিআর-এর এক প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশের তালিকায় নবম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ৷ তেমনি বাংলাদেশ থেকেও অনেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশে শরণার্থী হয়ে যাচ্ছেন৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশ নবম
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর ‘গ্লোবাল ট্রেন্ডস-২০১৩’ শীর্ষক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলছে, বিশ্বের শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশের তালিকায় বাংলাদেশের স্থান নবম৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অর্থনীতির তুলনায় ধারণক্ষমতার দিকে থেকে বাংলাদেশ পৃথিবীর নবম শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশ৷
ছবি: Shaikh Azizur Rahman
কতজন শরণার্থী?
দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশে দুটি সরকারি শরণার্থী শিবিরে ৩০ হাজারের মতো মিয়ানমারের (রোহিঙ্গা) শরণার্থী বসবাস করছে বলে জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর-এর প্রতিবেদন৷ শিবিরের বাইরে আছে আরও দুই থেকে পাঁচ লাখ অনিবন্ধিত ব্যক্তি৷
ছবি: AP
আশ্রয়প্রার্থী
হ্যাঁ৷ বাংলাদেশেও কেউ কেউ আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন৷ ইউএনএইচসিআর ওয়েবসাইটের বাংলাদেশ পাতায় এমন আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা নয়জন বলে জানানো হয়েছে৷ ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সংখ্যাটা এমন ছিল বলে উল্লেখ করা হয়৷
ছবি: DW/Shaikh Azizur Rahman
বাংলাদেশের শরণার্থী
উন্নত জীবনের আশায় বাংলাদেশ থেকে অনেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন৷ অনেকক্ষেত্রে তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগর পথে রওনা দেন৷ কেউ গন্তব্যে পৌঁছে গ্রেপ্তার হয়ে ফিরে আসেন৷ কেউ বা শরণার্থী পরিচয় পান৷ বাংলাদেশের এমন শরণার্থীর সংখ্যা ৯,৮৩৯ জন৷
ছবি: Reuters
বাংলাদেশের আশ্রয়প্রার্থী
উন্নত বিশ্বে কোনোভাবে ঢুকে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার চল অনেকদিন ধরেই চলছে৷ জাতিসংঘের হিসেবে বাংলাদেশের এমন আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ২২,১২৮ জন৷ সংখ্যাটা ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত প্রযোজ্য৷
ছবি: Reuters
স্বপ্নের শুরু টেকনাফে
বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার মতো দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন অনেক বাংলাদেশি৷ এ জন্য তাঁরা দালালদের অনেক অর্থও দিয়ে থাকেন৷ তাঁদের এই যাত্রা শুরু হয় টেকনাফ থেকে৷
ছবি: DW/Shaikh Azizur Rahman
ছোট নৌকা থেকে বড় নৌকায়
টেকনাফ থেকে প্রথমে ছোট নৌকায় যাত্রা শুরু হয়৷ তারপর একসময় মাছ ধরার বড় নৌকা বা কার্গোতে যাত্রীদের তুলে দেয়া হয়৷ সাধারণত অক্টোবর থেকে পরবর্তী পাঁচ মাসকে সমুদ্র যাত্রার জন্য সঠিক সময় বলে বিবেচনা করা হয়৷
ছবি: Asiapics
খাবার, পানির অভাব
ইউএনএইচসিআর-এর একটি প্রতিবেদন বলছে, যাঁরা সাগর পথে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন তাঁদের অনেকে খাবার ও পানির অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ এছাড়া দালালরা অনেক সময় তাঁদের সঙ্গে খারাপ আচরণও করে৷
ছবি: Reuters
8 ছবি1 | 8
এ বি সিদ্দিকীর কথায়, ‘‘আমি এখন হুমকির মুখে আছি৷ নিরপত্তা নিয়ে চিন্তিত আমি৷ ৩রা ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করার পর, বিজয়নগর এলাকায় ডেকে নিয়ে আমার ওপর হামলার চেষ্টা করে বিএনপির লোকজন৷ এ জন্য আমি থানায় দু'টি জিডি করেছি৷'' তিনি বলেন, ‘‘এ কারণে সরকার আমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে৷ আমার ঢাকার বাসায় পুলিশি নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে৷ চলাফেরার সময়ও পুলিশি নিরাপত্তা পাই আমি৷''
এ বি সিদ্দিকী তাঁর ভবিষ্যত্ পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন ডয়চে ভেলেকে৷ তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় জননেত্রী পরিষদের শাখা ও অফিস খোলা হবে৷'' এছাড়া সিদ্দিকী জানান যে তিনি আগামী নির্বাচনে ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের টিকেটে এমপি নির্বাচিত হতে চান৷
তিনি বলেন, ‘‘আমি ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে নির্বাচনের মনোনয়ন চেয়েছিলাম৷ কিন্তু নেত্রীর নির্দেশে রাশেদ খান মেননের জন্য ছেড়ে দেই৷ আগামী নির্বাচনে আবারো মনোনয়ন চাইব এবং আশা করি পাব৷''
নির্বাচনের খরচ কোথা থেকে আসবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘সেটা নির্বাচনের সময় দেখা যাবে৷'' তিনি আরো জানান, ‘‘এ কারণেই আমি মামলার বাইরেও এখন দলীয় কর্মসূচি শুরু করেছি৷ সারা ঢাকায় ব্যানার লাগিয়েছি৷ হরতাল-অবরোধের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করছি, করছি সভা-সমাবেশও৷''
তবে এ বি সিদ্দিক বলেন, ‘‘আমার প্রধান কাজ হলো বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওপর কোনো ধরণের হামলা বা কটুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা৷ আমি এই মামলা করেই যাব৷ প্রয়োজনে মামলা করে করে ফতুর হবো, তবুও থামবো না৷''
বলা বাহুল্য, এ কাজের জন্য এ বি সিদ্দিকী সবসময় সজাগ৷ নিয়মিত পেপার পত্রিকা পড়েন তিনি, দেখেন টেলিভিশন৷ আর সেখান থেকে মামলার উপযোগী কিছু পেলেই করে দেন মামলা৷