1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লিমনের মামলাগুলো প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা৯ জুলাই ২০১৩

অবশেষে ব়্যাবের গুলিতে পঙ্গু লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, লিমনের বয়স বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷

ছবি: Getty Images

এর প্রতিক্রিয়ায় লিমন বলেছেন, মামলা প্রত্যাহার হলেও সারা জীবন তাকে পঙ্গুত্বের ভার বইতে হবে৷

২০১১ সালের ২৩শে মার্চ ঝালোকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে সন্ত্রাসী ধরার নামে ব়্যাব সদস্যরা এইচএসসি পরীক্ষার্থী লিমন হোসেনেকে গুলি করে৷ গুলিতে গুরুতর আহত লিমনের বাম পা উরুর নীচ থেকে কেটে ফেলতে হয়৷ এ কারণে লিমন পরীক্ষাও দিতে পারেনি৷ নিরীহ লিমন মাঠে গরু আনতে গিয়ে এই নির্মমতার শিকার হয়৷

এই ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমসহ সারাদেশে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ তারপরও ব়্যাব লিমনের বিরুদ্ধে অস্ত্র এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে দুটি মামলা দায়ের করে৷ সেই মামলায় চার্জশিট এবং বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হয়৷ এরপরও ব়্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের মা হেনোয়ারা বেগমের মামলা নেয়নি রাজাপুর থানা পুলিশ৷ পরে আদালতের নির্দেশে মামলা নেয়া হলেও পুলিশ ব়্যাব সদস্যদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়৷

মামলা প্রত্যাহার করেই কি সরকারের দায়িত্ব শেষ?ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images

অবশেষে এবার, মানবাধিকার কমিশনের আবেদনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় লিমনের বিরুদ্ধে ব়্যাবের দায়ের করা সব মমলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর মঙ্গলবার জানান, লিমনের বয়স মাত্র ১৬ বছর৷ তাই তার বয়স বিবেচনা করে সে যাতে সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে৷

লিমন এখন ঢাকার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন৷ সে ডয়চে ভেলেকে জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান তাকে ফোন করে তার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানান৷ লিমন বলে, এই সিদ্ধান্তের কারণে সে সরকারকে ধন্যবাদ জানায়৷ তবে এখন মামলা প্রত্যাহার করা হোক আর যাই করা হোক, কেউই তার পা ফিরিয়ে দিতে পারবে না৷ সারাজীবন তাকে পঙ্গুত্বের ভার বইতে হবে৷ লিমন তার পঙ্গুত্বের জন্য দায়ী ব়্যাব সদস্যদের বিচার এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করে৷

লিমন জানায়, এই ঘটনার পর তাদের পুরো পরিবারে বিপর্যয় নেমে এসেছে৷ পরিবারের কেউ এখন আর তাদের গ্রামের বাড়িতে থাকতে পারছেন না৷ এছাড়া, ব়্যাবের সোর্স তাদের পরিবারের সবার জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে৷ তাই তার বাবা-মা, ভাই-বোন গ্রামের বাড়ি ছেড়ে পাশের পিরোজপুর জেলার কাউখালিতে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন৷

লিমনের কথায়, তার বা পায়ে এখন কৃত্রিম পা লাগানো হয়েছে৷ হাসপাতালে এখন সেই পা দিয়েই হাঁটার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে সে৷ লিমন জানায়, ক্ষতিপূরণ বলতে সে কোনো আর্থিক ক্ষতিপূরণ চায় না৷ সে যেন তার লেখাপড়া শেষ করে একটি চাকরি পায়, তার পরিবারের সদস্যরা যেন ঠিকমতো চলতে পারে – সরকার যেন সেই ব্যবস্থা করে দেয়৷

লিমন জানায়, ব়্যাবের সোর্স এখনো তার পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছে৷ এই হয়রানি যেন বন্ধ হয় আর দায়ী ব়্যাব সদস্যদের যেন বিচারের মুখোমুখি করা হয়৷ লিমন চায়, সরকার যেন এমন ব্যবস্থা করে যাতে তার মতো আর কাউকে এভাবে পঙ্গু হতে না হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ