'মার্কিন অবিচারের প্রতীক' গুয়ান্তানামোর ২০ বছরপূর্তি
১২ জানুয়ারি ২০২২
২০০২ সালের ১১ জানুয়ারি প্রথম ২০ জন বন্দিকে নিয়ে আসা হয়েছিল গুয়ান্তানামো বে-তে। তার ২০ বছর পূর্তি হলো।
গুয়ান্তানামো বে-তে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য়ে বন্দিদের রাখা হয়। ছবি: Mark Wilson/Getty Images
বিজ্ঞাপন
২০ বছর পর কেমন আছে গুয়ান্তানামো বে? মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে ২০১৩ সালে যাকে এই জেলখানা বন্ধ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল, তাদের সঙ্গে কথা বলে ডিডাব্লিউর এই প্রতিবেদন।
২০০২ সালে ২০ জন বন্দিকে যখন এখানে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন দাবি করা হয়েছিল, ৯/১১-র ঘটনার পর অ্যামেরিকা যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, এটা তারই অংশ। ছবিতে দেখা গেছে, বন্দিদের উজ্জ্বল কমলা রঙের পোশাক পরানো হয়েছিল। তারা ছিল একটা খাঁচার ভিতর। বাইরে কাঁটাতারের বেড়া। তাদের চোখ ও কান ঢাকা। তাদের ঘিরে ছিল মার্কিন সেনা।
কেন বন্দিদের গুয়ান্তানামোতে আনা হয়েছিল?
প্রথমে এই বন্দিশালা ছিল লো-টেক, পরে এর নাম দেয়া হয় ক্যাম্প ডেল্টা এবং তা একটা হাই টেক সাইট হিসাবে গড়ে তোলা হয়। সেখানে বন্দিদের নিয়ে এসে জেরা করা, সামরিক বিচার করা হয়। অ্যামেরিকার দাবি, এই বন্দিরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ এর উদ্বোধন করেন। তখন থেকেই গুয়ান্তানামো নিয়ে প্রবল সমালোচনা চলছে। মানবাধিকার ভঙ্গের দীর্ঘ তালিকা তৈরি হয়েছে। কিন্তু বুশ-চেনি প্রশাসনের যুক্তি ছিল, এই মানুষদের দীর্ঘ জেরা(অত্যাচার) করার অধিকার তাদের আছে। কারণ, তারা ৯/১১-র কুচক্রীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। তাই অ্যামেরিকার তটভূমির বাইরে একটি জায়গা খুঁজে নেয়া হলো, যেখানে মার্কিন আইন কাজ করবে না, জেনেভা কনভেনশনও নয়।
কুখ্যাত জেলের দিনরাত্রি
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে নতুন করে ভাগ্য নির্ধারণ হলো কুখ্যাত গুয়ান্তানামো জেলের৷ ২০০৯ সালে জেলটি বন্ধ করার কথা বলেছিলেন বারাক ওবামা৷ ট্রাম্প জানিয়েছেন, বন্ধ তো হবেই না, বরং আরো বন্দি পাঠানো হবে৷
ছবি: Reuters/B. Linsley
জালে ঘেরা জেল
বলা হয়, মানবিকতা শব্দটির কোনো অস্তিত্ব নেই এই জেলে৷ মার্কিন এলিট ফোর্স ইউএস মেরিনের অন্যতম বেস কিউবার গুয়ান্তানামো৷ কুখ্যাত আন্তর্জাতিক অপরাধীদের এই জেলে রাখা হয় বলে দাবি৷ চলে অকথ্য অত্যাচার৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, এই জেলের বহু অপরাধীরই কোনো বিচার হয় না৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/B. Fox
ভোরের নামাজ
দিনের ২৪ ঘণ্টা কঠোর নিয়মের মধ্যে কাটাতে হয় জেলের বন্দিদের৷ তবে সকালে নমাজ পড়তে দেওয়া হয়৷ দল বেঁধে বন্দিরা সে সময় দেওয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে নমাজ পড়ে৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Linsley
পালাবার পথ নেই
এটাই হলো গুয়ান্তানামো বে জেলের প্রধান ফটক৷ এক বন্দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভেতরে৷ নিরাপত্তার চক্রব্যূহ তৈরি করা হয়েছে জেল চত্বরে৷ আজ পর্যন্ত কেউ সেই নিরাপত্তার বলয় ভেঙে বেরতে পারেনি৷ ওবামা বলেছিলেন, বন্ধ করে দেওয়া হবে এই জেল৷ অপরাধীদের অন্যত্র পাঠানোও হচ্ছিল৷ ট্রাম্পের ঘোষণার পর নতুন করে সাজানো হচ্ছে গুয়ান্তানামো৷
ছবি: Getty Images/U.S. Navy/S.T. McCoy
কথা বলার নির্দিষ্ট সময়
বন্দিরা নিজেদের মধ্যে কথা বলার বিশেষ সুযোগ পায় না এই জেলে৷ দিনের সামান্য সময়েই তারা সেল থেকে মুক্তি পায়৷ কথা বলার জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট জায়গা৷
ছবি: Getty Images/B. Linsley
বেরি পড়ানো পা
জেলের ভিতর বন্দিদের জন্য রয়েছে কিছু প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা৷ কিন্তু সেই ক্লাসেও তাদের পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়৷ কখনো কখনো হাতও বেঁধে রাখা হয় চেয়ারের সঙ্গে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Shephard
এ টুকুই সম্বল
জেলে ঢোকার সময় বন্দিদের কাছ থেকে সবকিছু নিয়ে নেওয়া হয়৷ বদলে পাওয়া যায় পরনের পোশাক, তোয়ালে, চটি আর সামান্য খাবার৷ আর অবশ্যই হাতকড়া৷
ছবি: Getty Images/J. Moore
জেরার ঘর
দিনের অধিকাংশ সময় এই ঘরেই কাটে বন্দিদের৷ ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে এই ঘরে জেরা করা হয় তাদের৷ অভিযোগ, অকথ্য অত্যাচারও চালানো হয়৷ বহু সময়েই জেরার সময় বন্দিদের চোখ বেঁধে রাখা হয়৷
ছবি: Getty Images/J. Raedle
জেরার আগে
এক বন্দিকে সেল থেকে জেরার ঘরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াও অনেক সময় এই রাস্তায় ছেড়ে রাখা হয় হিংস্র কুকুর৷ বন্দিরা দাঁড়িয়ে পড়লে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে কুকুর৷
ছবি: Getty Images/J. Moore
দশ ফুট বাই দশ ফুট
অধিকাংশ সেলই অপ্রশস্থ৷ সবুজের চিহ্নমাত্র নেই আশপাশে৷ তারই মধ্যে বন্দিরা খুঁজে নেয় তাদের প্রার্থনার জায়গা৷
ছবি: Getty Images/J. Moore
সুবিধাপ্রাপ্ত বন্দি
দু’রকমের বন্দি আছে এই জেলে৷ একদলকে মনে করা হয় অতি অপরাধী৷ তাদের জন্য বরাদ্দ হয় আরো ছোট সেল৷ তুলনায় কম অপরাধীদের সেলের পরিসর হয় সামান্য বড়৷ এটা তেমনই এক সেল৷ শোনা যায়, ছোট সেলের বহু বন্দিই মানসিক বিকার হারিয়ে ফেলেন কয়েকবছরের মধ্যে৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Linsley
10 ছবি1 | 10
২০তম বার্ষিকীতে ডিডাব্লিউ এই ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত দুই জনের সঙ্গে কথা বলেছে।
আজ গুয়ান্তানামো কীসের প্রতীক?
অ্যামেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের(এসিএলইউ) ন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রজেক্টের ডিরেক্টর হিনা শামসি ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''গুয়ান্তানামো আজ মার্কিন অবিচার, অত্যাচার ও ক্ষমতার অপব্যবহারের বিশ্বজোড়া প্রতীক।''
হিনা বলেছেন, ''যদি সরকারের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ থাকে এবং যে প্রমাণ অত্যাচার করে পাওয়া নয়, তাহলে তারা বন্দিদের শাস্তি দিক। এমনকী যাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে, তাদের সাজাও কার্যকর করা হোক। কিন্তু যথেষ্ট প্রমাণ না থাকলে তাদের মুক্তি দেয়া হোক।''
হিনার দাবি, ''যাদের বেআইনিভাবে আটকে রাখা হয়েছে, মার্কিন যুক্তারাষ্ট্র তাদের কাছে ক্ষমা চাক। এটা আমাদের সময়ের একটা ট্রাজেডি। এই মানুষগুলোর এতটা ক্ষতি করার পরেও অ্যামেরিকা কখনো তাদের কাছে ক্ষমা চায়নি।''
তিনি বলেছেন, ''বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যেন এই বন্দিশালা শেষপর্যন্ত বন্ধ করেন।
বাইডেনের কাছে সেই ক্ষমতা আছে। কোনো প্রমাণ ছাড়াই যে মানুষদের সেখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে, অত্যাচার করা হয়েছে, দুই দশক ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছে, তারা অন্তত ন্যায় বিচার পাক।''
গুয়ানতানামো জেলচিত্র
স্বাধীনতা শব্দটির কার্যত কোনো অস্তিত্ব নেই গুয়ানতানামো বে জেলে৷ তবু স্বাধীনতার ছবি ফুটে ওঠে তাদের তুলিতে৷ জলছবিতে৷ গুয়ানতানামোর কয়েদিদের আঁকা তেমনই কিছু ছবির প্রদর্শনী চলছে নিউ ইয়র্কে৷
ছবি: Reuters/L. Jackson
গারদের হাতে ফুল (২০১৬)
ইয়েমেনের বাসিন্দা মহম্মদ আল-আনসি৷ ১৫ বছর আটক ছিলেন গুয়ানতানামো বে’তে৷ অভিযোগ, জেলে থাকার পর্বে তাঁর উপর যথেচ্ছ অত্যাচার হয়েছে৷ ভয়াবহ সেই পরিস্থিতির সঙ্গে জুঝে নেওয়ার জন্যই হাতে রং-তুলি তুলে নিয়েছিলেন তিনি৷ দিনন্দিন জীবন থেকে মুক্তি খুঁজতে তিনি আঁকতেন ল্যান্ডস্কেপ আর ফুলের ছবি৷
ছবি: Muhammad Ansi, /PRESIDENT’S GALLERY, New York
গুয়ানতানামোয় ভার্টিগো
পাকিস্তানের কয়েদি আম্মর আল-বালুচির আঁকা ছবি ‘ভার্টিগো অ্যাট গুয়ানতানামো’৷ ১০ বছর গুয়ানতানামোয় বন্দি ছিলেন তিনি৷ তার আগে আরো তিন বছর আটক ছিলেন সিআইএ-র বিভিন্ন জেলে৷ কারাগারের যন্ত্রণা সরাসরি উঠে এসেছে তাঁর ছবিতে৷
ছবি: Ammar Al-Baluchi/PRESIDENT’S GALLERY, New York
স্থিরচিত্র
পাকিস্তানের আরেক কয়েদি আহমেদ রব্বানি৷ সিআইএ-র বেশ কয়েকটি জেলে কিছুদিন কাটানোর পর গুয়ানতানামোয় পাঠানো হয় তাঁকে৷ ৯/১১ হামলাতেও তিনি জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ৷ অভিযোগ, তিনি আল-কায়েদার জঙ্গি৷ যদিও তাঁর ছবির সঙ্গে সন্ত্রাসের কোনো সম্পর্ক নেই৷
ছবি: Ahmed Rabbani/PRESIDENT’S GALLERY, New York
টাইটানিক
রং ফুরিয়ে গেলে গুয়ানতানামোর বন্দিরা দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনসকেও ছবি আঁকার সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহার করেন৷ কফি পাউডার আর বালি দিয়ে ‘টাইটানিক’ এঁকেছেন খালিদ কাসিম৷ এখনও গুয়ানতানামো বে’তে বন্দি তিনি৷ অভিযোগ জেহাদি ক্যাম্পের সঙ্গে সরাসরি যোগ আছে তাঁর৷
ছবি: Khalid Qasim,/PRESIDENT’S GALLERY, New York
শহরচিত্র
গুয়ানতানামোর বন্দিদের অনেকের ছবিতেই সমুদ্র একটি মুখ্য বিষয়৷ অনেকের ছবিতেই ধরা পড়েছে ঢেউ ভাঙার শব্দ৷ আবদেল মালিক আল রাহাবি গুয়ানতানামো থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২০১৬ সালে৷ ১৫ বছরের জেল জীবনে সমুদ্রের ধারে শহরের ছবি এঁকেছেন তিনি৷
ছবি: Abdualmalik Abud/PRESIDENT’S GALLERY, New York
সিরিয়ার শিশু
জলে ভেসে আসা সিরিয়ার শিশুর মৃতদেহ ২০১৫ সালে ভাইরাল হয়েছিল৷ গুয়ানতানামোর জেলেও সেই বি পৌঁছেছিল৷ কারণ ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বন্দিদের টেলিভিশন দেখার সুযোগ করে দিয়েছিলেন৷ ইয়েমেনের বন্দি মহম্মদ আল-আনসি সেই ছবিটিই এঁকেছিলেন জেলে বসে৷ পরবর্তীকালে তাঁকে অবশ্য পাঠানো হয় ওমানের জেলে৷
ছবি: Muhammad Ansi/PRESIDENT’S GALLERY, New York
প্রেসিডেন্ট গ্যালারি, নিউ ইয়র্ক
’ওডে টু দ্য সি: আর্ট অফ গুয়ানতানামো’ দেখানো হচ্ছে নিউ ইয়র্কের ‘প্রেসিডেন্ট গ্যালারি’-তে৷ ম্যানাহাটানের জন জে কলেজ অফ ক্রিমিনাল জাস্টিস একটি নাম করা প্রতিষ্ঠান৷ সেই কলেজেরই একটি গ্যালারি এটি৷ প্রদর্শনীটি নিয়ে অবশ্য অ্যামেরিকায় প্রুর বিতর্কও হয়েছে৷ ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত সাধারণ মানুষের জন্য খোলা থাকবে প্রদর্শনীটি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Schmitt-Tegge
Life behind barbed wire
কাঁটাতারের পিছনে
বারাক ওবামা গুয়ানতানামো বে’র ডিটেনশন ক্যাম্প বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছিলেন৷ কিন্তু এখনো সেটি চলছে৷ ওবামার আমলে সেখানে ২৪২ জন বন্দি ছিলেন৷ ২০১৭ সালে সংখ্যাটি কমে হয়েছে ৪১৷ যদিও তাঁদের কবে ছাড়া হবে, জানা নেই কারও৷
ছবি: Getty Images/J. Moore
8 ছবি1 | 8
গুয়ান্তানামোর বন্দিদের কী হবে?
ক্লিফ স্লোয়ানকে ২০১৩ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুয়ান্তানামো বে-র বন্দিশালা বন্ধ করে দেয়ার জন্য বিশেষ দূত হিসাবে নিয়োগ করেন।
তিনি ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''বন্ধ করার কাজটা অনেকদূর এগিয়েছিল। কিন্তু তা শেষপর্যন্ত পুরো হয়নি।'' তিনি বলেছেন, ''নতুন বছরের প্রথম ছয় মাসে সব বন্দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। ২০ বছর হয়ে গেল। এটা লজ্জার ব্যাপার।''
বন্দিশালা বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে স্লোয়ান বলেন, ''এই বন্দিশালা বন্ধ করার পথে প্রথম বাধা হলো রাজনৈতিক বিরোধ, যে বিরোধ যুক্তিহীন এবং তথ্যের উপর ভিত্তি করে হচ্ছে না। তাছাড়া কিছু আইনি বাধা আছে। কংগ্রেসে যে আইন পাস হয়েছিল তাকে খুব একটা দূরদর্শী বলা যায় না। কিন্তু এরপরেও বলতে হয়, গুয়ান্তানামো বন্ধ করার ব্যাপারে না এগোনোর কোনো যুক্তি নেই।''
তিনি জানিয়েছেন, গুয়ান্তানামো বন্ধ করতে গেলে প্রচুর কাজ করতে হবে। ইউরোপের দেশগুলি সহ অনেকগুলি দেশ মনে করে, গুয়ান্তানামো বন্ধ হওয়া দরকার, তারা বন্দিদের পুনর্বাসন দিতেও রাজি। তাই এটা বন্ধ করা যেতেই পারে। আপনারা কখনো কখনো এটা শুনে থাকবেন, বন্দিদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। কিন্তু এই যুক্তি ঠিক নয়। তাদের জন্য আশ্রয়স্থল পাওয়া যেতে পারে।
সাবেক দূত এটা জানিয়ে দিয়েছেন যে, তৃতীয় কোনো দেশে তাদের পুনর্বাসন হতে পারে। তারা সেখানে বন্দি থাকবে না। মুক্ত অবস্থায় থাকবে।
প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই বন্দিদের কি ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত? শামসি বলেছেন, ''সরকারের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দেয়া উচিত।'' কিন্তু স্লোয়ান বলেছেন, ''অ্যামেরিকা আগে গুয়ান্তানামোয় নৈতিক ও আইনি প্রতারণা বন্ধ করুক।''
২০০২ থেকে ৭৭৯জনকে গুয়ান্তানামোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এখন সেখানে ৩৯ জন আছেন। তার মধ্যে ২২ জনের বিরুদ্ধে কোনোরকম তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি অ্যামেরিকা।