মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার নৌ মহড়ার ঘোষণা
২৪ নভেম্বর ২০১০মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরে উত্তর কোরিয়া গোলা হামলা চালায় দক্ষিণের দ্বীপ ইয়নপিয়ং-এ৷ আর তার জবাব দিতে দক্ষিণও পাল্টা হামলা চালায়৷ এমনটি দাবি করে আসছে সৌল৷ এছাড়া ঐ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার৷ বুধবার সেখানে আরো দুই বেসামরিক মানুষের লাশ পাওয়া গেছে৷ নিহতদের মধ্যে দু'জন দক্ষিণ কোরিয়ার নৌসেনা রয়েছে৷
তবে উত্তরের দাবি, বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়াই প্রথমে হামলা চালায়৷ অবশ্য দক্ষিণ কোরিয়ার এক সামরিক মুখপাত্র স্বীকার করেছেন যে, উত্তরের হামলার আগে থেকেই ঐ অঞ্চলে সামরিক মহড়া চালাচ্ছিল দক্ষিণের নৌসেনারা৷ তবে তাদের মহড়া উত্তরকে লক্ষ্য করে নয় বরং তা ছিল পশ্চিমমুখী৷ ফলে হামলার জন্য কোন্ পক্ষ দায়ী তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও উদ্ভূত পরিস্থিতির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ব সম্প্রদায়৷ কোরিয়া উপদ্বীপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে৷ বুধবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী নাওতো কান চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যেন কোরিয়া উপদ্বীপে উত্তেজনা হ্রাসে উত্তর কোরিয়াকে চাপ দেয়৷ এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাককেও টেলিফোন করেন কান৷ এসময় তিনি সৌল এবং ওয়াশিংটনের সাথে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন৷ এদিকে, চীন বুধবার আবারও উত্তর এবং দক্ষিণ উভয়পক্ষকেই শান্ত এবং সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে৷
কিন্তু তা সত্ত্বেও পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধাজনক নয়৷ কারণ দক্ষিণের প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাক পরিস্থিতি বিশ্লেষণে তাৎক্ষণিক মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন৷ বৈঠকের পর তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন যে, উত্তরকে একটি শক্ত জবাব দিতে হবে৷ এদিকে, হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি মিয়ুং বাক’কে টেলিফোন করেন বুধবার৷ এসময় তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন যে, অ্যামেরিকা দক্ষিণ কোরিয়ার পাশে রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, মার্কিন ও দক্ষিণ কোরিয়া যৌথ নৌ মহড়া শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে৷ চারদিনের এই মহড়া শুরু হবে রবিবার৷ আর সেজন্য পরমাণু শক্তি সম্পন্ন বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জর্জ ওয়াশিংটন রওয়ানা দিয়েছে৷ ৭৫ টি যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে টোকিওর দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাঁটি ছেড়েছে এটি৷ এতে রয়েছে ছয় হাজারেরও বেশি নৌসেনা এবং নাবিক৷
কোরিয়ায় মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে অবশ্য বলা হয়েছে যে, গতকালের হামলার পূর্বেই এই মহড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল৷ ঐ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ও সামর্থ্য প্রদর্শনে এই মহড়ার আয়োজন৷ এমনকি এটা প্রকৃতিগতভাবেই প্রতিরক্ষামূলক বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক