অ্যামেরিকার অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্য এই বিল অপরিহার্য বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদদের বড় অংশ।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন সময় বুধবার সন্ধ্যায় হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভসে পাশ হয়েছে ফিসকাল রেসপনসিবিলিটি বিল। মুখের কথায় একেই ডেট সিলিং বিল বলা হচ্ছে। এই সপ্তাহেই বিলটি সেনেটে যাবে। সেখানে পাশ হয়ে গেলে বিলটি আইনে পরিণত হবে।
করোনা এবং ইউক্রেন যুদ্ধের রেশ পড়েছে মার্কিন অর্থনীতির উপর। মন্দার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল দেশ। এই পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে ডেট সিলিংয়ের প্রস্তাব আনেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসে বহু আলোচনা, বহু বিতর্ক হয়েছে। বিলটিকে বাইপারটিসান করার প্রস্তাব দেন বাইডেন। অর্থাৎ, রিপাবলিকান স্পিকার ম্যাকার্থি এবং ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট একত্রে বিলটি প্রস্তাব করেন কংগ্রেসে। যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু শেষপর্যন্ত বিলটি পেশ করা হয় হাউস অফ রিপ্রেসেনটেটিভে। আশঙ্কা ছিল, এই বিল নিয়ে প্রবল বিরোধিতা হতে পারে। কিন্তু সেই আশঙ্কা সত্যি হয়নি। বিপুল ভোটেই বিলটি পাশ হয়েছে। বাইডেনের আশা, একইভাবে সেনেটেও বিলটি পাশ হয়ে যাবে।
কেন মাঝপথে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে গেলেন বাইডেন?
সোমবার ক্যালিফোর্নিয়া যাওয়ার আগে সাংবাদিক সম্মেলনে কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে গেলেন জো বাইডেন। কেন?
ছবি: Leah Millis/REUTERS
ব্যাংক বন্ধ নিয়ে প্রশ্ন এড়াতে
অ্যামেরিকায় সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক(এসভিবি) ও সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আলোড়ন পড়ে গেছে। সোমবার বাইডেন এই ব্যাংক বন্ধ নিয়ে বিবৃতি মিনিট পাঁচেক ধরে পড়ে শোনান। তারপরই তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে যান। তারপরই বাইডেনের এই আচরণ নিয়ে সমাজ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
ছবি: Mandel Ngan/AFP
ব্যাংক বন্ধ
গত শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ায় এসভিবি ও রোববার নিউ ইয়র্কে সিগনেচার ব্যাংক বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এসভিবির যে সম্পদ আছে তা দিয়ে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব হবে৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও অ্যামেরিকায় এই ব্যাংকের গ্রাহকেরা আতঙ্কে ভুগছেন। হঠাৎ পরপর দুইটি ব্যাংক বন্ধ হওয়ায় তারা অশনি সংকেত দেখছেন।
ছবি: Noah Berger/AFP/Getty Images
বাইডেনকে প্রশ্ন
বাইডেন যখন প্রশ্ন না নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তখন এক সাংবাদিক চিৎকার করে বলেন, আপনি এখন ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়ে কী জানেন, কেন এই ঘটনা ঘটলো? আপনি কি অ্যামেরিকাকে আস্বস্ত করতে পারেন যে, এর প্রতিক্রিয়া খুব বেশি হবে না? আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আপনি কি প্রত্যাশা করেন যে, আর কোনো ব্যাংক বন্ধ হবে না?
ছবি: Saul Loeb/AFP
আগেও করেছেন
বাইডেন এভাবে আগেও মাঝপথে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে চলে গেছেন। কোনো গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ইভেন্ট বা যেখানে অস্বস্তিকর প্রশ্ন আসতে পারে, সেখানে তিনি কোনো প্রশ্নের জবাব না দিয়ে অতীতেও চলে গেছেন।
ছবি: Mandel Ngan/AFP
সমালোচনার ঝড়
বাইডেন যেভাবে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়েছেন, তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে টুইটারে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, এতবড় ব্যাংক ফেল করা নিয়ে বাইডেন পাঁচ মিনিট ভাষণ দেবেন, তারপর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে চলে যাবেন? এজন্য কি তিনি ভোট পেয়েছিলেন? একজন বলেছেন, মার্কিন ইতিহাসে দ্বিতীয় সবচেয়ে বড় ব্যাংক ফেলের ঘটনা ঘটেছে, অথচ বাইডেন প্রশ্নের জবাব দেবেন না?
ছবি: Diptendu Dutta/AFP
সাফল্যের দাবি
সাংবাদিক সম্মেলন ছেড়ে যাওয়ার আগে বাইডেন আর্থিক ক্ষেত্রে সাফল্যের কথা বলেন। তিনি জানান, গত দুই বছরে আর্থিক বৃদ্ধির হার বেড়েছে। এক কোটি ২০ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। গত ১৪ মাস ধরে বেকারত্বের হার চার শতাংশের কম আছে। এভাবেই ব্যাংক ফেল হওয়ার ঘটনাকে অতটা গুরুত্ব না দিয়ে বাইডেন বোঝাবার চেষ্টা করেছেন, এখনও মার্কিন অর্থব্যবস্থা যথেষ্ট শক্তিশালী।
ছবি: Justin Sullivan/Getty Images
6 ছবি1 | 6
এই বিল পাশ না হলে তীব্র অর্থ সংকটে পড়বে অ্যামেরিকা। সেনাবাহিনী থেকে সরকারি কর্মচারী-- সকলের বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সোশ্যাল সিকিওরিটি চেক দেওয়া সম্ভব হতো না। শুধু ঘরে নয়, এই পরিস্থিতি তৈরি হলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও তার প্রভাব পড়তো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মার্কিন অর্থনীতির উপর যেহেতু বিশ্ব অর্থনীতির অনেকটাই নির্ভর করে, ফলে আন্তর্জাতিক মন্দার আশঙ্কা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঋণে চলছে মার্কিন অর্থনীতি। এই বিল পাশ না হলে মার্কিন কোষাগার শূন্য হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এই বিল ২০২৪ সাল পর্যন্ত ধারের পরিমাণ বাড়ানোর রাস্তা তৈরি করে দিল। অর্থাৎ, ধারের যে সর্বোচ্চ সীমা ছিল, তা বদলের সুপারিশ করল।