মার্কিন কমান্ডো অভিযানে ওসামা নিহত, গোটা বিশ্বে সতর্কতা
২ মে ২০১১![](https://static.dw.com/image/15043941_800.webp)
বিভিন্ন সূত্র থেকে যে টুকরো খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা যোগ করলে এমন একটা চিত্র উঠে আসে৷ মার্কিন নৌবাহিনীর বিশেষ কমান্ডো ‘সিল' বাহিনীর ৪০ জন সদস্য চারটি হেলিকপ্টারে করে আফগানিস্তান থেকে রওয়ানা দেয়৷ পাকিস্তানের ব়্যাডার যন্ত্রগুলির নজর এড়াতে অত্যন্ত কম উচ্চতায় অ্যাবটাবাদের দিকে উড়ে যায় হেলিকপ্টারগুলি৷ অর্থাৎ এই ঝটিকা অভিযানের খবর পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ হামলার আগে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারে নি, এমনটাই ধরে নেওয়া যেতে পারে৷ এরপর অ্যাবটাবাদে অভিজাত এলাকায় বিন লাদেনের প্রাচীরে ঢাকা বিলাসবহুল ম্যানশনের উপর হেলিকপ্টার থেকে কমান্ডো নেমে আসে৷ ঘরে ঘরে তল্লাশি চালিয়ে তারা অবশেষে ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে পায়৷ ওসামা ধরা যেতে রাজি না হওয়ায় তার মাথায় গুলি করা হয়৷ মারা যায় আরও কয়েকজন৷ ৪০ মিনিটের এই অভিযানের শেষে একটি হেলিকপ্টার নাকি খারাপ হয়ে গিয়েছিল৷ বাকি হেলিকপ্টারগুলির মধ্যে একটিতে করে বিন লাদেনের মৃতদেহ প্রথমে আফগানিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়৷ তারপর ইসলামী রীতি অনুযায়ী তাকে সমুদ্রে সমাধি দেওয়া হয়৷ খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা ওসামার হত্যার খবর জানান৷
অভিযান সম্পর্কে নানা প্রশ্ন
প্রথমেই প্রশ্ন উঠছে, জীবিত অবস্থায় ওসামাকে ধরার চেষ্টা করা হলো না কেন? প্রতিরোধ এলেও ওসামা বা তার দলবলকে আহত অবস্থায় ধরা যেত না? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, অভিযানের উদ্দেশ্যই ছিল ওসামাকে হত্যা করা৷ অর্থাৎ জীবিত অবস্থায় তাকে ধরলে বিচার ও অন্যান্য প্রক্রিয়া নিয়ে যে জটিলতা দেখা যেত, অথবা তার মুক্তির দাবিতে যে ভয়ঙ্কর হামলা, হামলার হুমকি অথবা পণবন্দি নাটক হতে পারতো, সেই ঝক্কি নিতে চায় নি ওবামা প্রশাসন৷ পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে অ্যাবেটাবাদ শহরের সামরিক অ্যাকাডেমির এত কাছে কীভাবে ওসামা আত্মগোপন করে থাকতে পারেন, সেই প্রশ্নও উঠছে৷ বিশেষ করে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই বা তার অংশবিশেষ ওসামার উপস্থিতির কথা জানতো – এমন অভিযোগও উঠছে৷
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বলাই বাহুল্য, প্রায় গোটা বিশ্ব স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে৷ প্রায় সব দেশের শীর্ষ নেতারা মার্কিন অভিযানের প্রশংসা করেছেন৷ ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস বিন লাদেনের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেছে৷ তবে আল কায়েদা ও বাকি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলি প্রতিশোধ হামলা চালাতে পারে, এমন আশঙ্কা বাড়ছে৷ ফলে গোটা বিশ্বে মার্কিন দূতাবাসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, মার্কিন নাগরিকদের বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে৷ কিছুক্ষণ আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিন্টন এবিষয়ে বক্তব্য রাখেন৷ তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে সহযোগিতাকেও সফল হিসেবে বর্ণনা করেন এবং সন্ত্রাস দমন অভিযান চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেন৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল ফারূক