1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত সফরে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী

অনিল চট্টোপাধ্যায় নতুনদিল্লি
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেমস ম্যাটিস এখন দিল্লিতে৷ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হবার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এটাই প্রথম ভারত সফর৷ ভারত-মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও মজবুত করাই সফরের মূল লক্ষ্য৷

Indien Besuch US-Verteidigungsminister Mattis
ছবি: Reuters/A. Abidi

দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক দিক থেকে দিল্লির কাছে এ সফরের গুরুত্ব অপরিসীম৷

তিন দিনের এ সফরে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আলোচ্যসূচির শীর্ষে আছে যুদ্ধ বিমান, ড্রোন, হেলিকপ্টার ইত্যাদি সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করার বিষয়ে আলোচনা চুড়ান্তকরণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া৷ বৈঠক হবে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে৷ বৈঠকে উঠবে আফগানিস্তান ইস্যু৷ দক্ষিণ এশিয়ার পরিবর্তিত ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দিল্লিকে এশিয়া, তথা আন্তর্জাতিক মঞ্চে এক মূল্যবান এবং প্রভাবশালী সঙ্গী মনে করছে ওয়াশিংটন৷ ভারত-মার্কিন স্ট্র্যাটিজিক পার্টনারশিপ ফোরামের সভাপতি মুকেশ অঘি মনে করেন, আফগানিস্তানের বিষয়ে ভারত-মার্কিন অবস্থান যেহেতু অভিন্ন তাই আফগানিস্তান পরিস্থিতির মোকাবিলায় ভারতকে আরও কাছে পেতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন৷ গত মাসেই যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান সংক্রান্ত নতুন নীতিতে আরও বেশি সংখ্যক মার্কিন সৈন্য পাঠাতে চান ট্রাম্প৷ আফগানিস্তানের উন্নয়নে ভারতের অগ্রণী ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আফগনিস্তানের গণতন্ত্র, স্থিতিশীলতা,  নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে ভারতের সাহায্য একান্ত কাম্য৷ আফগানিস্তানে তালিবানি দাপট চলছে৷ একের পর এক জঙ্গি হামলা চলছে৷ তালিবান সে দেশের সুস্থিতি ধ্বংস করতে চেষ্টা করছে৷ আর তাদের এজেন্টদের নিরাপদ আশ্রয় দিয়ে পাকিস্তান নেপথ্যে তাদের হাত শক্ত করতে চাইছে৷ আফগানিস্তানের পরিকাঠামো উন্নয়নে ভারত আর্থিক এবং প্রযুক্তি দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছে সমানে৷ যেমন, বাঁধ, রাস্তাঘাট ইত্যাদি৷ মোট কথা, একদিকে আফগানিস্তানের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা, অন্যদিকে সে দেশকে জঙ্গিমুক্ত করার লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া আরো বাড়াতে চায় ওয়াশিংটন৷

প্রবীর দে

This browser does not support the audio element.

এই প্রসঙ্গে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্রবীর দে ডয়চে ভেলেকে বললেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের কমন বর্ডার নেই৷ কিন্তু পাকিস্তানের আছে৷ সেদিক থেকে ভারত কিছুটা ব্যাকফুটে৷ ভারতের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আফগানিস্তানে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব কিনা, সে বিষয়ে ওয়াশিংটন খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী নয়৷ মার্কিন সেনা সরে গেলে তালিবানি জঙ্গিরা আবার ফিরে আসবে জোরেসোরে৷ ভারত যে তার মোকাবিলা করতে পারবে না, সেটা বোধগম্য৷ তাই অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে ট্রাম্প মার্কিন সেনা সরিয়ে নেবার পরিবর্তে আরও তিন হাজার সেনা পাঠানোর কথা বলেছেন৷ জঙ্গি প্রশ্নে ট্রাম্প অনেক বেশি সোচ্চার৷ যার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথাও বলেছেন৷ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ৮০-৯০এর দশকের তুলনায় অনেক বদলে গেছে৷ অনেক. পালটে গেছে অভিমুখ৷ সেক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন কৌশলগত সহযোদিতা উভয় দেশেরই দরকার, সন্দেহ নেই৷ তবে এই কৌশলগত আঁতাতের শেষকথা বলার সময় এখনও আসেনি৷ এই আতাঁতের একটা বড়দিক হলো, রাশিয়া, চীন ও পাকিস্তানকে রোখা৷

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্রবীর কুমার দে'র মতে, কিছু ধোঁয়াশা তো রয়েই গেছে৷ কূটনৈতিক বিচারে এই হানিমুন যতটা স্থায়ী হবে, ভারতের পক্ষে ততই ভালো৷ না হলে ক্ষতি৷ কথা হচ্ছে, পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে কেউ কারোর চিরস্থায়ী বন্ধু বা শত্রু হতে পারে না৷

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের এই সফরে ভারতকে প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জাম সরবরাহ সংক্রান্ত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে বলে আশা৷ প্রথমটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লকহিড কোম্পানির এফ-১৬ সর্বাধুনিক সংস্করণ কেনার প্রস্তাব, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৫০০ কোটি ডলার৷ মোদীর মেক-ইন ইন্ডিয়া নীতি অনুসারে এফ-১৬ ব্লক-৭০ ভারতেই তৈরি করবে লকহিড কোম্পানি এ দেশের টাটা অ্যাডভান্স সিস্টেমস লিমিটেডের সঙ্গে যৌথভাবে৷ এক্ষেত্রে লকহিডের প্রধান প্রতিদ্বন্দী হচ্ছে সুইডেনের সাব কোম্পানি৷ কোম্পানির সর্বাধুনিক সংস্করণ যার গ্রীপেন-ই লড়াকু বিমানের প্রথম উড়ান হয় গত জুন মাসে৷ গ্রীপেনও যুদ্ধবিমান ভারতে তৈরি করতে চায় এদেশের আদানি সংস্থার সঙ্গে গাঁটচড়া বেঁধে৷ ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানির এফ-১৮যুদ্ধ বিমানও দিল্লির বিবেচনাধীন৷  প্রতিবেশি চীন ও পাকিস্তানের মোকাবিলা করতে এই ধরণের আধুনিকতম যুদ্ধবিমানই ভারতীয় বিমান বাহিনীর শক্তি বাড়ানোর জন্য দরকার৷ রাশিয়ার ১৫-২০ বছর আগেকার মিগ সিরিজ বিমান এখন সেকেলে৷ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের প্রভাব প্রতিপত্তি রুখতে ভারতকে আরো শক্তিশালী দেখতে চায় অ্যামেরিকা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ