টেক্সাসের স্কুলে বন্দুকধারীর আক্রমণে ২১ জনের মৃত্যুর পর ফের মার্কিন বন্দুক আইনের সাংবিধানিক ব্যাখ্যা নিয়ে মুখ খুললেন বাইডেন।
বিজ্ঞাপন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, এরপরেও যদি বন্দুক আইন সংশোধন করা না যায়, তাহলে অ্যামেরিকার পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। বাইডেন জানিয়েছেন, বন্দুক রাখার অধিকার নিয়ে যারা সওয়াল করেন, তারা সংবিধানের দোহাই দেন, কিন্তু সংবিধান যে কোনো অস্ত্র রাখার অধিকার দেয় না। সংবিধান এবং আইন বরাবরই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছে। বস্তুত, ১৭৯১ সালে অস্ত্র আইনের প্রসঙ্গ টেনে বাইডেন বলেন, সেখানেও নাগরিকদের কামান রাখার অধিকার দেওয়া হয়নি। অর্থাৎ, সংবিধান অস্ত্র রাখার অধিকার দিলেও তা নিয়ন্ত্রণের কথাও বলেছে।
মার্কিন অস্ত্রের লবি খুব শক্তিশালী। কয়েকদিনের মধ্যেই অস্ত্র লবির সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশনের টেক্সাসে সম্মেলন হওয়ার কথা। সেই সম্মেলনে যোগ দেবেন টেক্সাসের রিপাবলিকান পার্টির গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা। এছাড়াও গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট, সেনেটর টেড ক্রুজ, জন করনিনের ওই সভায় বক্তৃতা করার কথা। অস্ত্রের অধিকারের পক্ষে সওয়াল করবেন তারা।
অ্যামেরিকা-জুড়ে শোকের ছায়া
টেক্সাসের স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। শোকের ছায়া সর্বত্র।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
টেক্সাসের স্কুলে গুলি
টেক্সাসের ইউভ্যালডির একটি প্রাথমিক স্কুলে ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার। ১৮ বছরের এক তরুণ গায়ে বুলেটের বেল্ট লাগিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়ে। নির্বিচারে গুলি চালিয়ে সে ছাত্রছাত্রীদের হত্যা করে। ঘটনায় ১৮ জন শিশু নিহত হয়েছে। মোট মৃত ২১। এর আগে বাড়িতে নিজের দিদিমাকেও গুলি করে হত্যা করে ওই যুবক। পরে নিরাপত্তারক্ষীদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। গুলি চালানোর কারণ এখনো অস্পষ্ট।
ছবি: Allison Dinner/AFP
বাইডেনের প্রতিক্রিয়া
জাপান থেকে অ্যামেরিকায় ফিরছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বিমানেই তিনি খবরটি পান। বিমানে বসেই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। পরে টুইটও করেন। ওয়াশিংটনে নেমে ফের সাংবাদিক বৈঠক করেন বাইডেন। ঘটনায় নিজের ক্ষোভ চেপে রাখেননি প্রেসিডেন্ট। এর জন্য অস্ত্র আইনকে ফের দায়ী করেছেন তিনি।
ছবি: Kevin Lamarque/REUTERS
ক্ষুব্ধ কমলা হ্যারিস
টেক্সাসের ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তিনিও জানিয়েছেন, এবার দ্রুত অস্ত্র আইন বদল করা উচিত। নির্বাচন পর্বে বাইডেন-হ্যারিস জুটি জানিয়েছিলেন, ক্ষমতায় এলে তারা অস্ত্র আইন কঠোর করবেন। কিন্তু রিপাবলিকানদের প্রতিরোধে সেই বিল আইনে পরিণত হয়নি। যা নিয়ে বার বার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাইডেন এবং হ্যারিস দুইজনেই।
ছবি: Alexandru Dobre/AP/picture alliance
পতাকা অর্ধনমিত
হোয়াইট হাউস, নৌবাহিনীর জলযান, সামরিক ঘাঁটি, দূতাবাস-সহ সমস্ত সরকারি ভবনে পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।
ছবি: Anna Moneymaker/Getty Images
বেসবল মাঠ
নিউইয়র্কে একটি বেসবল মাঠের ছবি। খেলা শুরুর আগে সেখানে নিহত শিশুদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হচ্ছে।
ছবি: Frank Franklin II/AP Photo/picture alliance
স্কুলের চেহারা
মেক্সিকোর সীমান্তে অবস্থিত ইউভ্যালডি। ছোট্ট এই শহরে মাত্র ১৬ হাজার মানুষের বাস। সেখানেই এলিমেন্টারি স্কুলে আক্রমণ চালায় ১৮ বছরের স্যালভাডোর রামোস। গুলির আওয়াজ পাওয়ার পরেই সেখানে পৌঁছে যায় স্থানীয় পুলিশ। পুলিশের গুলিতে নিহত হয় আক্রমণকারী। তার আগে ২১ জনের প্রাণ নিয়ে নিয়েছে সে।
ছবি: San Antonio Express-News/ZUMA Press/IMAGO
ফাঁকা স্কুলবাস
এই স্কুলবাসে করেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল নিহত শিশুদের। ফাঁকা স্কুলবাস দাঁড়িয়ে আছে স্কুলের বাইরে।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
নিরাপত্তার বেষ্টনী
স্কুল চত্বর ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তাকর্মীরা। সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্কুলের বাইরে আতঙ্কিত বাবা-মায়েদের ভিড়।
ছবি: William Luther/The San Antonio Express-News/AP/picture alliance
ভেঙে পড়েছেন অভিভাবকরা
স্কুলের ভিতর থেকে তখনো সমস্ত মৃতদেহ বার করা হয়নি। স্কুলের বাইরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অভিভাবকরা।
ছবি: Marco Bello/REUTERS
একের পর এক ঘটনা
গত কয়েকবছরে একের পর এক গুলিচালানোর ঘটনা ঘটেছে অ্যামেরিকায়। স্কুলেও আক্রমণ হয়েছে। তবে এত বড় ঘটনা প্রায় ১০ বছর পরে ঘটল। এর আগে কানেকটিকাটের একটি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
ছবি: Dario Lopez-Mills/AP Photo/picture alliance
10 ছবি1 | 10
বস্তুত, বৃহস্পতিবার সেনেটে অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ নিয়ে একটি বিতর্ক হওয়ার কথা। মার্কিন কংগ্রেস থেকে বিষয়টি সেনেটে পৌঁছেছে। বাপালোর ঘটনার পর এই বিতর্কের পরিকল্পনা করা হয়। তারই মধ্যে টেক্সাসের স্কুলের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে।
টেক্সাসের ঘটনার পরেও অবশ্য অস্ত্রের অধিকার নিয়ে যারা কথা বলেন, তাদের মানসিকতা বদলায়নি। টেক্সাসের গভর্নর জানিয়েছেন, যে তরুণ ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, তার মানসিক সমস্যা ছিল। সে কারণেই সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে অস্ত্রের অধিকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে জো বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের প্রচারের অন্যতম বিষয় ছিল অস্ত্র আইনের পরিবর্তন। ক্ষমতায় এসে তারা অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের একটি বিলও আনেন। কিন্তু রিপাবলিকানদের বিরোধিতায় তা আইন হতে পারেনি। বস্তুত, এর আগেও ডেমোক্র্যাটরা অস্ত্র আইনের সংশোধন চেয়েছে একাধিকবার। কিন্তু রিপাবলিকান এবং অস্ত্র লবি তা কখনোই মানতে চায়নি। বুধবারের ঘটনার পর ফের সেই অস্ত্র আইন নিয়ে সরব হলেন বাইডেন।