জো বাইডেন প্রশাসনের নির্দেশে মার্কিন সেনা বিমান হামলা চালালো সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে। জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা বলে দাবি পেন্টাগনের।
বিজ্ঞাপন
ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে মার্কিন বিমান হামলা। অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন বলে সিরিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে। পেন্টাগন বিবৃতি দিয়ে হামলার কথা স্বীকার করেছে।
জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইরাক-সিরিয়া সীমান্তে বিমান হামলা চালালো অ্যামেরিকা। পেন্টাগন জানিয়েছে, সোমবার ভোরে সিরিয়ার দুইটি জঙ্গি ঘাঁটি এবং ইরাকের একটি ঘাঁটিতে আক্রমণ চালানো হয়। ওই জায়গাগুলিতে জঙ্গিদের অস্ত্র ভান্ডার ছিল বলে দাবি করেছে অ্যামেরিকা।
সিরিয়ার ফটোগ্রাফারদের চোখে এক দশকের গৃহযুদ্ধ
সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যে দৈনন্দিন জীবনের ছবি তোলেন স্থানীয় কিছু সাংবাদিক৷ সেসব ছবি সমকালীন ইতিহাসের নথি হিসেবে সংগ্রহ করছে জাতিসংঘ৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: Omar Sanadiki/OCHA
রাকার ধ্বংসস্তূপে স্মৃতির খোঁজ
চারপাশে ধ্বংসস্তূপ, এর মাঝে একটি স্ট্রলার নিয়ে হাঁটছেন এক নারী৷ ২০১৯ সালে রাকায় তোলা ছবিটি৷ ফটোগ্রাফার আবুদ হামাম বললেন, ‘‘আমার শহরের এই অবস্থা আমাকে খুব কষ্ট দেয়৷ এর প্রতিটি রাস্তায় আমার স্মৃতি আছে৷ আমাদের অতীতের সব স্মৃতি, এই শহরের সাথে জড়িয়ে থাকা প্রতিটি মুহূর্ত তারা ধ্বংস করে দিয়েছে৷’’
ছবি: Abood Hamam/OCHA
অন্তহীন শোক
২০২০ সালে ইদলিবে তোলা এই ছবিতে মায়ের মৃত্যুর পর দুই ভাই একে অপরকে জড়িয়ে কাঁদছে৷ সিরিয়া যুদ্ধ যখন শুরু হয়, তখন ফটোগ্রাফার গাইথ আল সাঈদের বয়স ছিলো ১৭৷ সেসময় বোমা হামলায় তিনি তার ভাইকে হারান৷ সাঈদ বলেন, ‘‘আমি যখনই কোন বিমান হামলার ছবি তুলতে আসি, তখন আমার ভাইয়ের কথা মনে হয়৷ প্রতিদিনই এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে৷’’
ছবি: Ghaith Alsayed/OCHA
বোমা হামলায় সৃষ্ট পানির পুল
২০১৩ সালে বোমা হামলায় বিধ্বস্ত পাইপ থেকে পানি বের হয়ে ছোট্ট পুলের মত তৈরি হয়েছে৷ সেখান থেকে পানি খাচ্ছে আলেপ্পোর এই ছেলেটি৷ ফটোগ্রাফার মুজাফ্ফার সালমান বললেন, ‘‘অনেকেই আমার এই ছবিটির সমালোচনা করে বলেছেন, ফটোগ্রাফারের উচিত ছিলো ছেলেটিকে বিশুদ্ধ পানি খাওয়ানো৷ কিন্তু আমার মতে, যা বাস্তব সেটাই তুলে ধরা উচিত, যাতে মানুষ পরিস্থিতিটা উপলব্ধি করে তা পরিবর্তনের চেষ্টা করে৷’’
ছবি: Muzaffar Salman/OCHA
ঘৌলা ছেড়ে যাচ্ছে মানুষ
২০১৮ সালের মার্চ মাসে ঘৌলা ছেড়ে যাওয়ার সময় নিজের সন্তানকে একটা সুটকেসে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন এক বাবা৷ ফটোগ্রাফার ওমর সানাদিকি বলেন, ‘‘যুদ্ধ কেবল সিরিয়াকে বদলে দেয়নি, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে এবং বিশ্বের কাছে কীভাবে মানবিক আবেদন তুলে ধরতে হয় সেটাও আমাদের শিখিয়েছে এই যুদ্ধ৷ আমার স্বপ্ন, ৫০ বছর পর আমার দুই মেয়ে বিশ্বের কাছে এই ছবিগুলো তুলে ধরবে৷’’
ছবি: Omar Sanadiki/OCHA
দৌমায় এক কাপ কফি
দামেস্কের অদূরে দৌমায় নিজের বাড়িতে বসে কফি খাচ্ছেন এক দম্পতি৷ ২০১৭ সালে তোলা ছবিটি৷ ফটোগ্রাফার সামির আল দৌমি বলেন, ‘‘উম্মে মোহাম্মদ আমার দেখা বিশেষ একজন মানুষ৷ যুদ্ধে গুরুতর আহত হন, একটু সুস্থ হতেই স্বামী বিমান হামলায় আহত হয়ে চলার শক্তি হারান৷ স্বামীর প্রতি তার ভালোবাসা অতুলনীয়৷’’
ছবি: Sameer Al-Doumy/OCHA/AFP
মর্টার হামলায় পা হারানো শিশুটি
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দামেস্কে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, রাতের খাবারের জন্য অপেক্ষা করছে পাঁচ বছরের আইয়া৷ স্কুলে যাওয়ার সময় মর্টার হামলায় পা হারায় সে৷ ফটোগ্রাফার ক্যারোল আলফারাহকে আইয়া বলে, ‘‘আমি তখন আমার বাদামি জুতাটা পড়েছিলাম, জুতার সাথে আমার পা-টাও উড়ে গেলো৷ চলে গেলো আমার পা৷’’
ছবি: Carole Alfarah/OCHA
পার্কুর প্রশিক্ষণ
আলেপ্পোর কাছে কাফর নৌরানে পার্কুর অ্যাথলেটরা বিধ্বস্ত ভবনে তাদের প্রশিক্ষণ অব্যাহত রেখেছেন৷ ছবিটি ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তোলা৷ ফটোগ্রাফার আনাস আলখারবোতিল দেখাতে চেয়েছেন ধ্বংসের মধ্যেও মানুষের জীবন থেমে থাকে না৷
ছবি: Anas Alkharboutli/OCHA/picture alliance/dpa
নতুন করে বাঁচা
‘‘অস্ত্রবিরতির পর ইদলিবের দক্ষিণে বালিউন শহরে এক পরিবারের বাড়িতে ফেরার এই ছবিটা তুলেছিলাম ২০২০ সালে৷ ছবিটি তুলতে গিয়ে আমার একই সাথে আনন্দ ও কষ্টের অনুভূতি হয়েছিল৷ ’’ জানালেন ফটোগ্রাফার আলি হাজ সুলেইমান৷ তিনি বললেন,‘‘ মানুষকে বাড়ি ফিরতে দেখে আমার আনন্দ হয়েছে, কিন্তু কষ্ট হয়েছে এই ভেবে আমি আমার গ্রামে যেতে পারছি না৷’’
ছবি: Ali Haj Suleiman/OCHA
8 ছবি1 | 8
অ্যামেরিকার দাবি, ইরানের মদতপুষ্ট কাতায়েব হেজবোল্লাহ জঙ্গিদের ঘাঁটি ছিল সিরিয়া সীমান্তে। টার্গেট নির্দিষ্ট করেই সেখানে আক্রমণ চলানো হয়েছে। এর আগে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ওই জঙ্গিরা একাধিক আক্রমণ চালায় বলে পেন্টাগনের দাবি।
আক্রমণের কথা প্রথম জানায় মানবাধিকার সংগঠন। সিরিয়ার সংবাদমাধ্যম তাদের জানিয়েছে, মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে অ্যামেরিকা যে জঙ্গিদের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে, সিরিয়ার সংবাদমাধ্যম সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেনি। জঙ্গি সংগঠনও এখনো পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি। তবে মার্কিন বিমান হামলা যে আটমকা ঘটেছে, সে কথা স্বীকার করছে সব পক্ষই।