মার্কিন রণতরী, রুশ জঙ্গি বিমান
১৪ এপ্রিল ২০১৬বালটিক সাগরের উপকূলে পোল্যান্ডের গিডিনিয়া বন্দর৷ ইউএসএস ডোনাল্ড কুক সেই বন্দর ছেড়ে সাগরে বেরোয় গত ১১ই এপ্রিল৷ রণতরীর ডেকে একটি পোলিশ হেলিকপ্টারও ছিল৷
সেইদিনই দু'টি এসইউ-২৪ জঙ্গিজেট ডোনাল্ড কুক-এর কাছ দিয়ে বিশ বার উড়ে যায়৷ জঙ্গিজেটগুলি রণতরীর এক হাজার মিটারের ভিতর দিয়ে উড়ে যায়, মাত্র ত্রিশ মিটার উচ্চতায়৷ তার পরদিন, অর্থাৎ ১২ই এপ্রিল, জঙ্গিজেটগুলির সঙ্গে একটি রুশি কেএ-২৭ হেলিক্স হেলিকপ্টার যোগ দেয় ও বারংবার মার্কিন রণতরীটির আরো কাছ দিয়ে উড়ে যায়৷ কত কাছে, তা মার্কিন নৌবাহিনীর প্রকাশিত ভিডিও দেখলেই বোঝা যায়৷
মঙ্গলবার সুখয় এসইউ-২৪ জঙ্গিজেটগুলি রণতরীর এত কাছ দিয়ে উড়ে গেছে যে, সাগরের জল কেঁপে গেছে বলে প্রকাশ৷ মোট এগারো বার ওড়ে তারা৷ তবে দৃশ্যত বিমানগুলির কোনো রকেট গোত্রীয় রণসজ্জা ছিল না৷ তবুও ঘটনাটি যেন ঠান্ডা লড়াইয়ের দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়৷
ঠান্ডা লড়াইয়ের আমলে দু'পক্ষের সামরিক বাহিনীর মধ্যে আচম্বিত সঙ্ঘর্ষ লাগার বিপদ সম্বলিত একাধিক ঘটনা ঘটার পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৭২ সালে৷ সেই চুক্তিতে ‘‘জাহাজ অথবা বিমানের বিরুদ্ধে আক্রমণের মহড়া, জাহাজের উপর বিমানের কসরত বা জাহাজের কাছে বোমা জাতীয় বিপজ্জনক পদার্থ ফেলা'' নিষিদ্ধ করা হয়৷
এবারের ঘটনায় হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আন্তর্জাতিক জলরাশি বা বায়ু অঞ্চলে সামরিক বাহিনীর কার্যকলাপের ‘‘পেশাদারি মানের সঙ্গে সঙ্গতিহীন'' বলে উল্লেখ করেই ক্ষান্ত হয়েছেন৷ অপরদিকে পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আন্টনি মাচিয়েরেভিচ ‘‘প্ররোচনা ছাড়া আর কিছু নয়'' ও ‘‘আগ্রাসী অভিপ্রায়''-এর কথা বলেছেন৷
ন্যাটো আপাতত পূর্ব ইউরোপে যে সামরিক শক্তিবৃদ্ধি করতে চলেছে, তা ঠান্ডা লড়াইয়ের আমল যাবৎ বৃহত্তম৷ বালটিক সাগরের উপকূলবর্তী তিনটি দেশ - এস্টোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া - ও সেই সঙ্গে পোল্যান্ড রাশিয়ার তরফে ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন দেখছে; তাদের আশ্বস্ত করতেই ন্যাটোর এই ‘বিল্ড-আপ'৷
এসি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি, ডিপিএ)