1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বাণিজ্যবাংলাদেশ

মার্কিন শুল্ক: বাংলাদেশের রপ্তানিতে প্রভাব, বেকারত্বের শঙ্কা

১৩ জুলাই ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের শুল্ক আলোচনায় এখনো কোনো দৃশ্যমান ফল না আসলেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আশা করছে সরকার।

গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭৬ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ
গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭৬ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশছবি: Joy Saha/ZUMA Press Wire/picture alliance

কিন্তু এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে৷ বিখ্যাত মার্কিন ব্র্যান্ড ওয়ালমার্টসহ আরো কিছু ক্রেতা বাংলাদেশে তাদের কার্যাদেশ স্থগিত করা শুরু করেছে বলে জানা গেছে৷ 

বাংলাদেশির রপ্তানির বড় অংশের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র আর এ কারণে নতুন করে আরোপ করা মার্কিন শুল্কের প্রভাব শুধু তৈরি পোশাক খাতেই নয় পুরো রপ্তানি খাতকেই অস্থিশীল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷     
 
বিশ্লেষকেরা এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করেন এমন শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ীরা ডয়চে জানান, শুল্কের হার প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে বেশি হলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশ ৷ তাদের মতে, শুধু বিকল্প বাজার খুঁজে এই পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হবে। শিল্পখাতে বেকারত্বের আশঙ্কাও করছেন তারা৷

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক 

বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর তালিকা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৯৮ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এরমধ্যে প্রচলিত পণ্যের বাইরে অনেক অপ্রচলিত পণ্যও রপ্তানি হয়েছে। 

তবে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৮০ ভাগই আসে তৈরি পোশাক থেকে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকের একক দেশ হিসাবে সবচেয়ে বড় গন্তব্য হলো যুক্তরাষ্ট্র । আর পোশাক খাতসহ আরো কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানে এমন ইউনিট আছে যা গড়ে তোলাই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির জন্য।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত পণ্য রপ্তানি করছে এমন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই হাজার ৩৭৭টি। এরমধ্যে ৮০১টি প্রতিষ্ঠান তাদের মোট রপ্তানির ৫০ শতাংশের বেশি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। 

রপ্তানিকারকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর বেশি নির্ভরশীলতার কারণে এ প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে।

এই ৮০১টি প্রতিষ্ঠান গত অর্থবছর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মোট রপ্তানি করেছে ৬৬২ কোটি ডলারের পণ্য। এরমধ্যে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ৫০৫ কোটি ডলার, যা যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৫৮ শতাংশ।

সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭৬ কোটি ডলার পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে তৈরি পোশাকের রপ্তানি মূল্য প্রায় ৭৫৯ কোটি ডলার।

১৬৮টি পোশাক কারখানা শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই পোশাক রপ্তানি: মোহাম্মদ আবদুস সালাম

This browser does not support the audio element.

কার্যাদেশে হারাচ্ছেন পোশাক রপ্তানিকারকেরা

তৈরি পোশাক প্রতিষ্ঠান ফরচুন অ্যাপারেলস গত অর্থবছরে তিন কোটি ৩৭ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। এর পুরোটাই রপ্তানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। প্রতিষ্ঠানটি এশিয়ান ডাফ গ্রুপের মালিকানাধীন৷ 

এশিয়ান ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “দেখতে হবে, আমারা যাদের সাথে প্রতিযোগিতা তাদের ওপর শুল্ক কেমন। এখন আমার প্রতিযোগী ভারত, চীন, ভিয়েতনাম , কম্বোডিয়। তাদের ট্যারিফ কম। ফলে যদি আমাদের শুল্ক তাদের সমপর্যায়ে না নেয়া যায় তাহলে তো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারব না। বাংলাদেশের শুল্কহার তো তাদের তুলনায় ১৫-২০ শতাংশ বেশি হবে। এরইমধ্যে আমরা অর্ডার হারাতে শুরু করেছি।”

তিনি জানান ফরচুন অ্যাপারেলেসের মতো ১৬৮টি পোশাক কারখানা আছে যারা শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই পোশাক রপ্তানি করে। ওই কারখানাগুলো তৈরিই করা হয়েছে সেখানকার ক্রেতাদের কমপ্লায়েন্স অনুসরণ করে। ওই কারাখানাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বলে জানান তিনি।

আরেক পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ইনডিপেনডেন্ট অ্যাপারেলসের গত অর্থবছরে মোট রপ্তানির ৮৯ শতাংশের গন্তব্য ছিলো ছিল যুক্তরাষ্ট্র। তারা বছরে ৭০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। তিন দশক ধরে তারা যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করছে। 

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব ডয়চে ভেলেকে বলেন,“ বাংলাদেশের বড় বড় শিল্প গ্রুপগুলো যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে । কারণ অ্যামরিকান ক্রেতাদের অর্ডারের পরিমাণ বেশি। তারা প্রতিবার মিলিয়ন পিসেরও বেশি অর্ডার দিয়ে থাকে। এই কারণে প্রায় হাজারের মতো ফ্যাক্টরি যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি করে। বছরে ৯ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি হয় এবং এটা আরো বাড়ছিলো। কিন্তু এখন তো আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।”

তার কথা, ‘‘ বিকল্প বাজার তো আমাদের মাথায় সব সময়ই থাকে । কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মতে সিঙ্গেল লার্জেস্ট বাজার আমরা কেন হরাবো? ওটা ধরে রাখার সব চেষ্টা আমাদের করতে হবে। সেটা না হলে অনেক ফ্যাক্টরি বসে যাবে। অনেক শ্রমিক বেকার হবে।”

এদিকে মার্কিন বায়ার ওয়ালমার্টের জন্য নির্ধারিত প্রায় ১০ লাখ সাঁতারের প্যান্টের অর্ডার স্থগিত করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্যাট্রিয়ট ইকো অ্যাপারেল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইকবাল হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, অর্ডারটি স্থগিত করা হয় বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই)।

শুধু ওয়ালমার্টই নয়, আরো বেশ কিছু মার্কিন ক্রেতার কার্যাদেশ স্থগিতের খবর আসছে বলে জানালেন  বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক এবং  ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল৷ 

ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা এরকম অর্ডার স্থগিতের আরো কিছু খবর পাচ্ছি, বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু এখনো এর হিসাব আমরা করিনি। আসলে যেটা হচ্ছে, যেই অর্ডারগুলো পাইপলাইনে আছে তারমধ্যে যেগুলো ১ আগস্টের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ সম্ভব হবে সেগুলো নিয়ে সমস্যা নেই। বাকিগুলো নিয়ে সমস্যা আছে। কারণ, কী হবে সবে শেষ পর্যন্ত সেটাতো বায়াররাও দেখতে চান। ফলে একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।”

তার মতে, তারা বাংরাদেশ থেকে পোশাক কিনবে কি না তার প্রকৃত অবস্থা ১ আগস্ট বোঝা যাবে। 

S M Abu Tayedb - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

আশঙ্কায় অন্য খাতের ব্যবসায়ীরাও  

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক ছাড়াও জুতা, টুপি, তাঁবু, ব্যাগ, আসবাব, খাদ্যপণ্য , হিমায়িত পণ্য রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। গত অর্থবছরে ১৭৬টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রপ্তানির জন্য শতভাগ দেশটির ওপর নির্ভরশীল ছিল। 

মোট ৭০৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এককভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ৫০ শতাংশের বেশি রপ্তানি করেছে, এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩১৯টি। এইসব পণ্যের ক্ষেত্রেও অর্ডার স্থগিত করা শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে।

মাসুদ অ্যাগ্রো প্রসেসিং ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড ১৩ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে হিমায়িত খাদ্যপণ্যসহ বিাভন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি করে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আামাদের যেসব পণ্য পাকিং পর্যায়ে ছিলো তা প্যাকিং না করার জন্য বায়াররা জনিয়ে দিয়েছেন। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। আমরা সিংগারা সমুচা , মাছ, শাকসবজি যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করছি ২০১২ সাল থেকে এবং ব্যবসা বড়ছিলো। কিন্তু এখন আশঙ্কার মধ্যে আছি। মনে হচ্ছে এই ব্যবসা আর ধরে রাখা যাবে না। আমার মতো আরো অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। তাদের অবস্থাও একই রকম।”

যুক্তরাষ্ট্রে  বাংলাদেশের চামমড়াজাত পণ্যের বাজারও বড়ছিলো। আর বাংলাদেশি চামড়াজাত পণ্যেরও একক দেশ হিসাবে সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। গত বছরের জুলাই থেকে  চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত মোট চামড়াজত পণ্য রপ্তানির ২৩ শতাংশই হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। ওই সময়ে মোট ২৮৯ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারের চামড়াজাত পণ্য সেখানে গেছে।

অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নসিম মঞ্জুর বলেন,“ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র লেদার প্রোডাক্ট রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধু সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্যই নয়। সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল বাজারও আমাদের জন্য। এখন যেটা হবে যুক্তরাষ্ট্রে  আমাদের যারা বায়ার তাদের দাম বাড়াতে হবে। তাহলে ক্রেতা কমে যাবে। অথবা তাদের ব্যবসা কম করতে হবে। এটার প্রভাব আমাদের ওপরও পড়বে।”

“চীন থেকে বায়াররা তাদের ডেস্টিনেশন পরিবর্তন করছিলো। সেক্ষেত্রে ভারত ও কম্বোডিয়ার পরই আমদের সুযোগ তৈরি হয়েছিলা। কিন্তু এখন প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের ট্যারিফ বেশি হলে সেটা আমাদের জন্য আশঙ্কার,” বলেন তিনি।

তার কথা, বাংলাদেশ থেকে অনেক অপ্রচলিত পণ্য যায় যুক্তরাষ্ট্রে। ফলে শুধু অ্যাপরেস নয় সব নিয়েই সরকারকে ভাবতে হবে।

বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি

চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যে পরিমাণ পণ্য রপ্তানি হয়েছে, সেই তুলনায় আমদানির পরিমাণ অনেক কম। ইউনাইটেড স্টেটস সেন্সাস ব্যুরো বলছে, জানুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ২০৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে এবং ফেব্রুয়ারিতে আমদানি করেছে মাত্র ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে ওই দুই মাসে মোট ২৯০ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ পণ্য রপ্তানি করতে পেরেছে। 

এই হিসাবে, শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই এই দুই দেশের মাঝে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ প্রায় ৭০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি পাঠিয়েছে তৈরি পোশাক। আর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি এনেছে সয়াবিন। গত বছর বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এই হিসাবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য-ঘাটতির পরিমাণ ৬১৫ কোটি ডলার।

গত ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। তার আগে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আছে। পরে দুই শতাংশ কমিয়ে বাংলাদেশের জন্য এখন ৩৫ শতাংশ করায় সব মিলিয়ে ১ আগস্ট থেকে বাংলাদেশি পণ্যে ওপর এখন শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশ। হোয়াইট হাউস বলছে, বাণিজ্য ঘাটতি দূর করতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে৷    

নতুন বাজার তৈরি আর যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনার উপর জোর 

পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ-এর চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ বলেন, “যদি ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হয় তাহলে প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে যে বাংলাদেশের রপ্তানি কমবে সেটা নিশ্চিত।  কারণ বায়াররা বুঝতে চাইবে যে, অতিরিক্ত ৩৫ শতাংশ শুল্ক সেটা কীভাবে তারা কাভার করবে। তারা কি ক্রেতাকে চার্জ করবে, না রপ্তানিকারককে চার্জ করবে? না বায়ার- সাপ্লায়ার ভাগ করে নেবে। এই বিষয়গুলো ঠিক করতে তারা অর্ডার হোল্ড করবে। তবে  শেষ পর্যন্ত এটার মার্কেট সল্যুশনে যেতে হবে। কে কত ভাগ বার্ডেন নেবে।”

বিকল্প বাজার লাগবে, সক্ষমতা বাড়াতে হবে: ড. মাশরুর রিয়াজ

This browser does not support the audio element.

“আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা ভিয়েতনাম ও চীনের চেয়ে কম। আবার প্রতিযোগী আরো যে দেশ রয়েছে সেখানে যদি শুল্ক আমাদের চেয়ে কম হয় তাহলে আরো প্রতিযোগিতার মুখে পড়ব আমরা। সব মিলিয়ে আমাদের সামনে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। আর প্রধান পণ্য যেহেতু তৈরি পোশাক তাই ওই খাতেই আশঙ্কা বেশি,” বলেন তিনি।

তার কথা,“ ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আরো আলোচনায় আমাদের যেটা দেখতে হবে সেটা হলো আমাদের প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে আমাদের ওপর শুল্ক যেন বেশি না হয়। এরইমধ্যে ভিয়েতনাম, ভারত, পাকিস্তান ও  চীন আমাদের চেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।”

তিনি বলেন,“ বিকল্প বাজার লাগবে। সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কিন্তু আমরা তো যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারাতে পারি না। এটা আমাদের বড় এবং সম্ভাবনাময় একটি বাজার। তাই আলোচনার সব দিক কাজে লাগাতে হবে।”

আর সিপিডির গবষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইছে তাদের দেশ থেকে আমদানি কে কত বাড়াবে। ওই পণ্যের ওপর শুল্ক কত হবে। সেই ভিত্তিতে তারা সিদ্ধান্ত নেবে। এখন আলোচনায় আমাদের সেই বিষয়গুলোই নিশ্চিত করে শুল্ক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ হয়তো আছে।”

“এখন আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিনের মতো আরো অনেক পণ্যের  আমদানি বাড়াতে পারি। তুলা আমদানি বাড়াতে পারি। গম , মেশিনারিজ আমাদানি বাড়াতে পারি। কিন্তু  বোয়িং-এর মতো কস্টলি এবং আনপ্রোডাকটিভ পণ্য আমদানি করার কোনো দরকার নাই। এতে বার্ডেন বাড়বে। আর আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির চেষ্টা করতে পারি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে,” বলেন তিনি।

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ