মার্কিন হামলা, নিজেকে উড়িয়ে দিলেন আইএস প্রধান
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২তুরস্ক সীমান্তের কাছে সিরিয়ার একটি শহরে একটি বাড়ির উপর উড়ছিল মার্কিন সামরিক হেলিকপ্টারগুলি। বাড়ির চারপাশের এলাকা মার্কিন সেনা ঘিরে রেখেছিল। অনেক দূরে হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুমে বসে অপারেশনের উপর নজর রাখছিলেন জো বাইডেন। ওই বাড়িতেই সপরিবারে ছিলেন আইএস প্রধান আল-কুরেশি। কিন্তু মার্কিন বাহিনী কিছু করার আগেই আল-কুরেশি একটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ করেন। বাড়ির বেশ কিছুটা অংশ উড়ে যায়। আল-কুরেশি সহ মোট ১৩জন মারা যান। এর মধ্যে ছয়জন নারী ও চারজন শিশু।
তবে পেন্টাগনের মিডিয়া সচিব জন কিরবির দাবি, ‘‘অ্যামেরিকার সেনাবাহিনী বুধবার মাঝরাতে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালিয়েছিল। জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দার বিরুদ্ধে মূলত এই অভিযান চালানো হয়। সেই অভিযানে আইএস প্রধান মারা গেছেন।'' ২০১৯ সালে সিরিয়াতে আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদি মার্কিন হামলার মুখে এই কাজই করেছিলেন। জো বাইডেন বলেছেন, আল-কুরেশি কাপরুষোচিত কাজ করেছেন।
তবে শহরের বাসিন্দাদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়েছে। মার্কিন সেনা হেলিকপ্টারে করে চূড়ান্ত আঘাত হানার আগে বাসিন্দাদের চলে যেতে বলে। লাউডস্পিকার ব্যবহার করে বলা হয়, বাসিন্দারা যেন দ্রুত ঘর ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যান। এক নারী রয়টার্সকে বলেছেন, ''ঘোষণা হচ্ছিল, মার্কিন জোট চারপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছে। পুরুষ, নারী, বাচ্চারা হাত তুলুন। আপনারা নিরাপদ থাকবেন।''
জেনারেল ফ্র্যাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এই অপারেশনের খবর বাইডেনকে জানাচ্ছিলেন। তিনি বলেছেন, যে বিস্ফোরণ হয়েছে, তা আত্মঘাতী বিস্ফোরণের থেকে অনেক বেশি জোরালো। বাড়ির তিনতলা ভেঙে পড়েছে। আল-কুরেশি ও অন্যদের দেহ ছিটকে বাইরে এসে পড়েছে।
ম্যাকেঞ্জি জানিয়েছেন, দুইতলায় মার্কিন বাহিনী যখন পৌঁছায়, তখন আল-কুরেশির এক সহযোগী ও তার স্ত্রী গুলি চালাতে থাকে। তারা মার্কিন সেনার গুলিতে মারা যায়। সেখানে একটি বাচ্চার দেহ মেলে।
অ্যামেরিকায় বসে
মার্কিন সেনার টার্গেট ছিল তিনতলায় থাকা আল-কুরেশি। এই অপারেশন গত ডিসেম্বর থেকে পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। তখন অ্যামেরিকা নিশ্চিত হয়ে যায়, ওখানে আল-কুরেশি আছেন। গত মঙ্গলবার বাইডেন এই অভিযানের সবুজ সংকেত দেন। ওভাল অফিসে প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন এবং জেনারেল ম্যাকেঞ্জি জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি অভিযানে সবুজ সংকেত দেন। অভিযান যখন চলছে, তখন বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে সর্বশেষ তথ্য জানাতে থাকেন অস্টিন ও ম্যাকেঞ্জি।
একটা সময়ে একটি হেলিকপ্টারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। সেই হেলিকপ্টারকে ধ্বংস করে ফেলা হয়।
অপারেশনের পর বাইডেন জানিয়েছেন, ''ঈশ্বর আমাদের সেনাকে আশীর্বাদ করুন।''
জিএইচ/এসজি (রয়টার্স, এপি, এএফপি)