বিশ্বজুড়ে মোট করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মাত্র ৬ শতাংশ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ জার্মানির একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এমনটাই দাবি করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
নতুন ওই গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো করোনা আক্রান্তের যে আনুষ্ঠানিক সংখ্যা প্রকাশ করছে প্রকৃত সংখ্যা তার থেকে অনেক অনেক বেশি৷ পৃথিবীতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এরইমধ্যে কোটি ছাড়িয়েছে৷
সেন্ট্রাল জার্মানির গ্যোটিংগেন ইউনির্ভাসিটির দুই গবেষক ক্রিস্টিয়ান বোমার ও সেবাস্টিয়ান ভল্মের মাসিক জার্নাল ‘দ্য ল্যানসেট ইনফেকশিয়াস ডিজিজেস' এ সম্প্রতি প্রকাশিত কয়েকটি গবেষণাপত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করেন৷
তারা করোনা আক্রান্তের আনুষ্ঠানিক রেকর্ড কতটা ঠিক সেটা মূল্যায়ন করতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যু এবং সংক্রমিত হওয়া থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মাঝের সময় নিয়ে হিসাবনিকাশ করেন৷
ওই হিসাবে আমরা দেখতে পাই, পৃথিবীজুড়ে দেশগুলো গড়ে মোট আক্রান্তের মাত্র ছয় শতাংশকে শনাক্ত করতে পেরেছে৷
"আসলে করোনা সংক্রমণের মোট সংখ্যা এরইমধ্যে কোটি ছাড়িয়েছে৷ তাই সরকার বা নীতিনির্ধারকদের করোনা সংক্রমণের সংখ্যার ভিত্তিতে কোনো পরিকল্পনা করার ক্ষেত্রে চরম সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত৷”
বিভিন্ন দেশে টেস্টের পরিমাণ এবং টেস্টের ফলের গ্রহণযোগ্যতার মধ্যেও বিস্তর পার্থক্য আছে বলে সতর্ক করেন অধ্যাপক ভল্মের৷ বলেন, "আনুষ্ঠানিক এসব তথ্য খুব একটা সাহায্য করতে পারবে না৷”
দেশে দেশে অস্থায়ী করোনা হাসপাতাল
করোনার বিরুদ্ধে লড়তে হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা৷ ফলে অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/WANA/A. Khara
ইটালি
মিলানের কাছে ক্রেমোনা হাসপাতালের বাইরে একটি ফিল্ড হাসপাতাল৷
ছবি: Getty Images/E. Cremaschi
যুক্তরাষ্ট্র
নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটানের জ্যাকব কে জ্যাভিটস কনভেনশন সেন্টারে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/A. Kelly
স্পেন
মাদ্রিদের আইএফইএমএ কনফারেন্স সেন্টারে এই সামরিক হাসপাতালটি গড়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/Comunidad de Madrid
ফ্রান্স
মুইলোজে শহরের একটি হাসপাতালের বাইরে সামরিক বাহিনী একটি ফিল্ড হাসপাতাল গড়ে তুলেছে৷
ছবি: Reuters/S. Bozon
ইরান
তেহরানের এক শপিং মলকে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপ দেয়া হয়েছে৷
ছবি: Reuters/WANA/A. Khara
চীন
উহান শহরে প্রথম করোনা ধরা পড়েছিল৷ সেখানে গড়ে তোলা ১৬টি অস্থায়ী হাসপাতালের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ায় গতমাসে সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP
ব্রাজিল
সাও পাওলোর আইবিরাপুয়েরা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে করোনা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/R. Patrasso
রাশিয়া
মস্কোর বাইরে এই হাসপাতালটি নির্মাণের কাজ চলছে৷
ছবি: Reuters/Moscow News Agency/D. Voronin
গাজা
রাফাহ সীমান্তে এই কোয়ারান্টিন ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/WHO in the Occupied Palestinian Territories
সার্বিয়া
বেলগ্রেডের মেলা আয়োজনের এই হলকে করোনা রোগীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়৷
ছবি: Reuters/M. Djurica
পোল্যান্ড
রকলো শহরের ইউনিভার্সিটি ক্লিনিক্যাল হাসপাতালের বাইরে এই অস্থায়ী এমার্জেন্সি রুম তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/Agencja Gazeta/K. Cwik
সুইডেন
গোথেনবুর্গের একটি হাসপাতালের বাইরে এই ফিল্ড হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়৷
ছবি: Reuters/TT NEws Agency/A. Ihse
ইন্দোনেশিয়া
জাকার্তার কেমায়োরান অ্যাথলেট ভিলেজে গড়ে তোলা এই হাসপাতালের যন্ত্র পরীক্ষা করে দেখছেন এক ডাক্তার৷
ছবি: Reuters/Antara Foto/H. Mubarak
কলোম্বিয়া
বোগোতার সামরিক হাসপাতালের পার্কিং এলাকায় অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/L. Munoz
জার্মানি
লায়েরের একটি সাবেক হাসপাতাল আবারও প্রস্তুত করা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/L. Kuegeler
আর্জেন্টিনা
বুয়েনস আইরেসের কাছে সান মিগুয়েলেতে এই মিলিটারি মোবাইল হাসপাতালটি গড়ে তোলা হয়েছে৷
ছবি: Reuters/M. Baglietto
16 ছবি1 | 16
কোটি সংক্রমণ
দুই গবেষক হিসাব করে বলেন, ৩১ মার্চ পর্যন্ত জার্মানিতে হয়তো চার লাখ ৬০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন৷ ওই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে হয়তো মোট সংক্রমণ এক কোটি ছাড়িয়েছে, স্পেনে ৫০ লাখের বেশি, ইতালিতে ৩০ লাখের বেশি এবং যুক্তরাজ্যে ২০ লাখের মত মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন৷
অথচ, জনস হপকিন্স ইউনির্ভাসিটির দেওয়া তথ্যানুযায়ী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে নয় লাখের মত মানুষের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে বা তাদের চিকিৎসা চলছে৷
এ বিষয়ে গবেষকরা বলেন, অপর্যাপ্ত এবং দেরিতে টেস্ট করানোর কারণেই হয়তো ইতালি, স্পেন ও ফ্রান্সের মত ইউরোপের কয়েকটি দেশে জার্মানির তুলনায় করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর হার এত বেশি৷
তাদের হিসেব অনুযায়ী, জার্মানি তাদের মোট আক্রান্তের প্রায় ১৬ শতাংশকে শনাক্ত করতে পেরেছে৷
সেই তুলনায় ইতালি মাত্র ৩ দশমিক ৫ শতাংশ এবং স্পেন ১ দশমিক ৭ শতাংশ সংক্রমণ শনাক্ত করেছে৷ তাদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র (১.৬%) এবং যুক্তরাজ্যে (১.২%) শনাক্তের হার আরো কম৷
নতুন প্রাদুর্ভাব শুধুই সময়ের ব্যাপার
গবেষকরা দেশগুলোকে ব্যাপক হারে টেস্ট বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বলেন, শনাক্তের পর নতুন রোগীদের আইসোলেশনে রাখতে হবে এবং তাদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের খুঁজে বের করতে হবে৷
ভয়াবহ রূপ নিয়েছে করোনা-সংকট। ৬৯ হাজারেরও বেশি মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়া এই ভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর এখন মৃত্যুপুরীর মতো। দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/J. Moon
খোলা আকাশের নীচে হাসপাতাল
হাসপাতালে আর জায়গা নেই। তাই নিউইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্ক অঞ্চলের ইস্ট মিডোর একটি মাঠ হয়ে গেছে হাসপাতাল। ছবির এই তাঁবুগুলোর ভেতরে চলছে করোনায় সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসা।
ছবি: Reuters/J. Moon
শঙ্কিত স্বাস্থ্যকর্মী
চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে। কোথাও কোথাও ষ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিতদের মাঝেও শুরু হয়েছে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জাম পিপিই-র জন্য হাহাকার। নিউ ইয়র্কের মনটেফোর মেডিকেল সেন্টার মোজেস ডিভিশন হাসপাতালে পিপিই-র দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ছবি: Reuters/B. McDermid
লাশ আর লাশ
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে মৃত্যুর মিছিল চলছে নিউ ইয়র্কে। হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ বের করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
ছবি: Reuters/B. McDermid
অস্থায়ী মর্গ
ওয়াইকম্ব মেডিকেল সেন্টারের মর্গে আর মৃতদেহ রাখার জায়গা নেই। তাই হাসপাতালের বাইরেই গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী মর্গ।
ছবি: Reuters/handout
মৃতদেহের অপেক্ষায়
যুক্তরাষ্ট্রে তিন লাখেরও বেশি মানুষের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। মৃত্যু হয়েছে নয় হাজার ১৫৪ জনের। শুধু নিউইয়র্কেই মৃত্যুবরণ করেছেন তিনি হাজার ৫৬৫ জন। শহরের এক হাসপাতালের সামনে করোনায় মৃতদের নেওয়ার জন্য তৈরি রাখা হয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রাক।
ছবি: Reuters/J. Moon
করোনার সঙ্গে যুদ্ধ
মনটেফোর মেডিকেল সেন্টারে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিতদের চিকিৎসায় ব্যস্ত এক স্বাস্থ্যকর্মী।
ছবি: Reuters/J. Moon
ক্লান্তি
ওয়াইকম্ব হাইটস মেডিকেল সেন্টারের ক্লান্ত এক স্বাস্থকর্মী। দাঁড়িয়েই চলছে বিশ্রাম।