‘ইসলামের বিধান' মেনে চলার অঙ্গীকার করেই যাত্রী পরিবহন শুরু করেছিল রায়ান এয়ার৷ মদ নিষিদ্ধ ছিল বিমানে, যাত্রীদের দেওয়া হতো ‘হালাল' খাবার, বিমানবালাদের পরতে হতো হিজাব৷ মালয়েশিয়ার সেই এয়ারলাইন্সটির কার্যক্রম বন্ধ৷
বিজ্ঞাপন
সোমবার ‘শরিয়া আইন মেনে চলা' মালয়েশিয়ার একমাত্র বিমান সংস্থা রায়ান এয়ারকে তিন মাসের জন্য কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়৷ শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বাতিল করা, যাত্রা শুরু করতে নিয়মিত বিলম্ব করা এবং বিমানচালকদের ধর্মঘটের কারণে বেসরকারি এই বিমান কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশ দিয়েছে মালয়েশিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ৷
ফলে মাত্র চার মাসের মাথায় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হলো রায়ানি এয়ার৷
গত ডিসেম্বরে মাত্র দু'টি বিমান নিয়ে মালয়েশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে যাত্রী পরিবহন শুরু করে রায়ান এয়ার৷ সরকারি নির্দেশে আপাতত কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বেসরকারি বিমান সংস্থাটি ফেসবুকে জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো কাটিয়ে শিগগিরই আবার যাত্রী পরিবহন শুরু করা হবে৷
মুসলিম পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় ১০টি ভ্রমণ স্থান
পর্যটন সংস্থা ‘ক্রিসেন্ট’ সম্প্রতি মুসলিম পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য কয়েকটি স্থানের কথা উল্লেখ করেছে যেখানে হালাল খাবার ও নামাজ আদায়ের স্থান রয়েছে৷
ছবি: DW/S. Dege
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মুসলিম পর্যটকদের জন্য সবধরনের সুব্যবস্থা রয়েছে৷ আছে হালাল খাবারের দোকান, পাশাপাশি রয়েছে নামাজ পড়ার স্থান৷ সিডনি, মেলবোর্ন বা গোল্ড কোস্ট সব শহরেই পাবেন এসব সুব্যবস্থা৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO
ভারত
ইসলামি রাষ্ট্র না হলেও ভারতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা অনেক৷ মুসলিম পর্যটকরা দেশটির শ্রীনগরের হযরতবল মাজারে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেন৷ বিশ্বাস করা হয় সেখানে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মাথার চুল রয়েছে৷
ছবি: Fotolia/Tepfenhart
হংকং
হংকং এ বিশাল আকারের ৬টি মসজিদ রয়েছে৷ কেন্দ্রীয় স্টেশনের কাছে রয়েছে জামিয়া মসজিদ৷ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেখানে ৪৪টি রেস্তোরাঁ, খাদ্যদ্রব্যের দোকান এবং পিৎজা ও কাবাব হাউজ রয়েছে, যেগুলো হালাল৷
ছবি: A.Ogle/AFP/Getty Images
তানজানিয়া
তানজানিয়ার সেরেঙ্গেটি জাতীয় উদ্যান এবং জানজিবার দ্বীপ পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ৷ আফ্রিকার এই দেশটি মুসলিম পর্যটকদের কাছে অতি জনপ্রিয়, কারণ এখানে রয়েছে অনেক মসজিদ এবং হালাল খাবারের দোকান৷
জার্মানি
জার্মানিতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব করছে তুর্কীরা৷ এ কারণে বড় মসজিদ বা কাবাবের দোকান খুঁজে পাওয়াটা জার্মানিতে খুব একটা মুশকিল নয়৷
ছবি: DW/S. Dege
বসনিয়া হার্ৎসেগোভিনা
সার্বিয়া যুদ্ধে যেসব মুসলিম স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, সেসব স্থান পরিদর্শন করতে বসনিয়ায় যান অনেক মুসলিম পর্যটক৷ মুসলিম পর্যটকদের জন্য বিশেষ বিশেষ প্যাকেজ দিয়ে থাকে সেখানকার ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো৷
ছবি: World Music Centre
থাইল্যান্ড
সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে ঢুকলেই আপনি নামাজের স্থান খুঁজে পাবেন৷ যদিও বৌদ্ধ ধর্মালম্বীর সংখ্যা সেখানে বেশি, তবুও থাইল্যান্ড মুসলিম পর্যটকদের পছন্দের স্থান হিসেবে পরিচিত৷ কেবল রাজধানী ব্যাংককে রয়েছে ১০০টি মসজিদ৷
ছবি: picture-alliance/ZB
দক্ষিণ আফ্রিকা
বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ১.৫ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী৷ এ কারণে খুব সহজেই সেখানকার বড় বড় শহরগুলোতে হালাল খাবারের দোকান এবং মসজিদ দেখতে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa
সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুর এমন একটি অমুসলিম দেশ, যেটি মুসলিম পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়৷ হালাল খাবার, পানীয়, নামাজের স্থান- এই তিনটির বিচারে সিঙ্গাপুর মুসলিম পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য বলে মনে করা হয়৷
ছবি: Reuters
যুক্তরাজ্য
ব্রিটেনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি৷ এ কারণে দেশটিতে মুসলিম পর্যটকদের জন্য সবধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷ প্রধান শহরগুলোতে মসজিদ খুঁজে পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়৷ বার্মিংহামে ১৫০টিরও বেশি মসজিদ রয়েছে৷
ছবি: picture alliance / dpa
10 ছবি1 | 10
ইসলামি আইন মেনে যাত্রী সাধারণকে উন্নত সেবা দানের অঙ্গীকার করলেও রায়ান এয়ার ছ'মাসও ঠিকভাবে যাত্রীসেবা দিতে পারেনি৷ বিমানে মদ ছিল নিষিদ্ধ, সব যাত্রীকে ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী ‘হালাল' খাবার দেয়া হতো, সব মুসলিম ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক ছিল, অমুসলিম ফ্লাইট অ্যাটেন্টদের পরতে হতো ‘শালীন' পোষাক৷ এ সব কারণে শুরু থেকেই সংবাদমাধ্যমের নজর কাড়ে রায়ান এয়ার৷
২৩৯ জন যাত্রী নিয়ে বেইজিংয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর কিছুক্ষণ পরই এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের বিমান নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে মালয়েশিয়ার বিমান পরিবহন ব্যবসায় মন্দা চলছে৷ ঐ বিমান নিখোঁজ হওয়ার ছয় মাস পরে রহস্যজনকভাবে পূর্ব ইউক্রেনে ঢুকে পড়ে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের আরেকটি বিমান৷ ২৯৮ জন যাত্রী নিয়ে সেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে৷ সেই থেকে মালয়েশিয়ার পর্যটন শিল্প দুঃসমযের মধ্য দিয়েই যাচ্ছে৷