1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
দুর্নীতিবাংলাদেশ

মালয়েশিয়ায় চাকরি: ৭৯ হাজার টাকার খরচ বেড়ে পাঁচ লাখ

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সিন্ডিকেটের কারণে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় শ্রমশক্তি রপ্তানির ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ৷ তারপরও সেই সিন্ডিকেট ভাঙছে না৷ ফলে সিন্ডিকেটের হাতেই যাচ্ছে শ্রমিকদের হাজার হাজার কোটি টাকা৷

Bangladesch |  Chaos am Flughafen Dhaka
ছবি: bdnews24.com

এর আগেও সিন্ডিকেটের এমন দৌরাত্ম্যে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল মালয়েশিয়া৷   

নতুন করে আবার বাংলাদেশ থেকে লোক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশের পর মালশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে ব্যয় কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে৷ কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে খরচ কমিয়ে আনতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়৷     

বাংলাদেশ থেকে মাত্র একশ এজেন্টের তালিকা পাঠানো হয়েছে মালয়েশিয়াকে৷ জানা গেছে, মালয়েশিয়া সরকার চাচ্ছে বাংলাদেশের সব যোগ্য রিক্রুটিং এজেন্ট মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ পাক৷ কিন্তু ওই তালিকাতেই অটল রয়েছে বাংলাদেশ৷

এর আগে ২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের কারণেই বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিল মালয়েশিয়া৷ ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর আবারো বাংলাদেশের সঙ্গে শ্রমিক নেয়ার চুক্তি করে দেশটি৷

এরপর দুই মাসের মধ্যে দুই লাখ কর্মী নেয়ার কথা থাকলেও দেড় বছরে নেয়া হয়েছে মাত্র ৬০ হাজার৷ একশটি রিক্রুটিং এজেন্সি সিন্ডিকেট করে ওই কর্মী পাঠায়৷ ফলে অভিবাসনের ব্যয়ও অনেক বেশি পড়ছে৷

সিন্ডিকেটে ঢুকতে প্রতি এজেন্সিকে দিতে হয় আট কোটি টাকা: মো. টিপু সুলতান

This browser does not support the audio element.

এই অবস্থায় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন বিন ইসমাইল শনিবার দুই দিনের সফরে ঢাকা আসেন৷ তিনি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ছাড়াও জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷

দুই মন্ত্রী যা বললেন

বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে কর্মী  নেয়া সহজ করতে চায় মালয়েশিয়া৷ আমাদের আজকে (রবিবার) দুইটি ইস্যুতে ফলপ্রসূ আলাপ হয়েছে৷ প্রথমত রিক্যালিব্রেশন (অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করা) প্রোগ্রাম আরো করা৷ দ্বিতীয়ত, মালয়েশিয়া সরকার অভিবাসন ব্যয় কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা আগের করা সমঝোতা চুক্তি নিয়ে কথা বলেছি৷ আলোচনার একটা বড় অংশ জুড়েই ছিল এই চুক্তি৷ মালয়েশিয়া সরকার জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে চায়, যাতে মূল লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়৷ মূল লক্ষ্য হচ্ছে, চাহিদা পূরণ করা, ব্যয় কমানো ও বিদেশি কর্মীদের সম্মান রক্ষা করা৷ যদি বর্তমান প্রক্রিয়ায় সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো না যায়, আমরা পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত৷ সেজন্য আমরা আলোচনায় বসবো৷ আমি মন্ত্রী ইমরান আহমেদকে অনুরোধ জানিয়েছি সহযোগিতার জন্য, বাংলাদেশ যেন তাদের অংশটুকু পালন করে, যেন আমরা আমাদের কর্মীর চাহিদা পূরণ করতে পারি৷’’

বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ সিন্ডিকেট ও এজেন্সি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘‘মনে রাখতে হবে মালয়েশিয়ায় নতুন সরকার৷ তাই আমাদের আগের করা এমওইউতে পরিবর্তন আসবে৷ আমাদের জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হবে৷ সেখানে অভিবাসন ব্যয়সহ আরো অনেক বিষয় ঠিক করা হবে৷’’

‘গ্রিসে বৈধ হওয়ার সুযোগ নেবো’

03:08

This browser does not support the video element.

সিন্ডিকেট সক্রিয়

২০২১ সালে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগের এমওইউ সই হওয়ার পর বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি ৬০ হাজারের মত কর্মী পাঠিয়েছে৷ কিন্তু মালয়েশিয়া পাঁচ লাখেরও বেশি কর্মী নিতে চায় বাংলাদেশ থেকে৷

মালয়েশিয়ার নতুন সরকার চায় এমওইউ রিভাইজ করতে৷ ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়ায় শ্রমশক্তি পাঠানোর জন্য যে নির্ধারিত তা তারা মানতে চায় না৷ তারা চায় এটা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হোক৷

কারণ এই এজেন্সিগুলো জন প্রতি চার লাখ ৫০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়েছে৷ এই টাকা খরচ করে যারা মালয়েশিয়া গিয়েছে তাদের পক্ষে এই টাকা কাজ করে তোলা কঠিন৷

সিন্ডিকেটের এজেন্সিগুলো কর্মীদের মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে তাদের নির্ধারিত হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাচ্ছে৷ তাতে জনপ্রতি নেয়া হচ্ছে  ১৬ হাজার টাকা করে৷ তারা এরইমধ্যে কয়েক লাখ কর্মীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামেও বিপূল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ৷

অভিযোগ আছে, সিন্ডিকেট প্রতি কর্মীর কাছ থেকে কমপক্ষে চার লাখ টাকা বেশি নিচ্ছে৷ এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষায় পাঁচশ টাকার পরিবর্তে ১৬ হাজার টাকা নিয়ে জন প্রতি ১৫ হাজার ৫০০ টাকা বেশি নিচ্ছে৷

খরচের নামে টাকা নেয়া হচ্ছে অনেক বেশি: আবুল বাসার

This browser does not support the audio element.

বায়রার যুগ্ম সম্পাদক মো. টিপু সুলতান বলেন, ‘‘এই সিন্ডিকেটের কারণে যারা মালয়েশিয়া যেতে চান তাদের যেমন খরচ বেড়ে গেছে, তেমনি এজন্সির খরচও বেড়ে গেছে৷ সিন্ডিকেটে ঢুকতে প্রতি এজেন্সিকে দিতে হয় আট কোটি টাকা৷ কর্মী প্রতি  সিন্ডিকেটকে দিতে হয় এক লাখ সাত হাজার টাকা৷ মন্ত্রী বললেন, একজনকে মালয়েশিয়া যেতে খরচ হবে ৭৯ হাজার টাকা৷ আর এখন খরচ হচ্ছে পাঁচ লাখ টাকা৷’’

তার কথা, ‘‘এটা শুধু বাংলাদেশেই৷ মালয়েশিয়া আরো ১৪টি দেশ থেকে লোক নেয়৷ সেখানে সিন্ডিকেট নেই৷ নেপালে এক হাজার ৬০০ এজেন্সি৷ তারা সবাই লোক পাঠায়৷ আমাদের ২০০০ এজেন্সি৷ আমাদের সবাইকে সুযোগ দেয়া উচিত৷ তাহলে কম খরচেই কর্মীরা মালয়েশিয়া যেতে পারবেন৷’’

সংগঠনটির সভাপতি আবুল বাসার বলেন, ‘‘এখনো মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাচ্ছেন৷ তবে তা ধীর গতিতে৷ একশ এজেন্সির বাইরে কেউ পাঠাতে পারছে না৷ খরচের নামে টাকা নেয়া হচ্ছে অনেক বেশি৷ আমরা মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বিষয়গুলো বিস্তারিত জানিয়েছি৷ মাললেশিয়ার নতুন সরকারও চায় অভিবাসন ব্যয় কমাতে৷ তারা চায় যে সবাই যেন কর্মী পাঠাতে পারেন৷ মন্ত্রী মালয়েশিয়া গিয়ে তার সরকারের কাছে বিষয়গুলো তুলে ধরে নতুন একটি ব্যবস্থায় আসার আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের৷ তাদের নতুন সরকার এমওইউতে পরিবর্তন আনতে চায়৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ