মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক হাই কমিশনার গ্রেপ্তার
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান ১২ বছরের বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় শরণার্থী হিসেবে বসবাস করছেন৷ তার বিরুদ্ধে ১৯৭৫ সালের জেলহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে৷ বুধবার মালয়েশিয়ার আমপাং, সেলাঙ্গর এলাকার একটি আবাসন থেকে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে, বাংলাদেশের একাধিক সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে৷
খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের খবরটি নিশ্চিত করেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জাইনুদিন৷ বৃহস্পতিবার মালয়েশীয় দৈনিক ‘দ্য স্টার' এই খবর প্রকাশ করেছে৷
হামজা জাইনুদিন জানিয়েছেন, নিয়ম মেনে খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে এবং গ্রেপ্তারের বিষয়ে বাংলাদেশের তরফে অনুরোধ করা হয়েছিল, এ কথা জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ যদিও এ নিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের কোনও বক্তব্য মেলেনি এখনও৷ কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ মিশনও এই প্রসঙ্গে কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেয়নি৷
চার দলীয় জোট সরকারের সময় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পেয়েছিলেন সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা৷ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা সরকার দেশে ফিরতে বলেছিল খায়রুজ্জামানকে৷ তার বাংলাদেশি পাসপোর্টও বাতিল করা হয়েছিল৷ কিন্তু বিপদের আঁচ টের পেয়ে ইউএনএইচসিআরের শরণার্থী কার্ড নিয়ে তিনি মালয়েশিয়ায় থেকে যান৷
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ চার সঙ্গীকে৷ স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকারকে নেতৃত্ব দেওয়া চার জন জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে হত্যা মামলার আসামি ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর৷ যদিও পরে তিনি সেই মামলা থেকে অব্যাহতি পান৷
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ৷ ফিলিপিন্সের দায়িত্বে থাকা খায়রুজ্জামানকে তখন বাংলাদেশে ডেকে পাঠানো হয়েছিল৷ সেই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷ বাধ্যতামূলক অবসরও দেওয়া হয়েছিল খায়রুজ্জামানকে৷
২০০১ সালে ক্ষমতায় আসে বিএনপি-জামাত জোট৷ সেই সময়ে জামিনে মুক্তি পান খায়রুজ্জামান৷ ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেই সময়ের সেনাকর্তা খায়রুজ্জামান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়েছিলেন৷ ২০০৩ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল তাকে৷বিএনপির আমলে ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন৷
২০০৪ সালে জেলহত্যা মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছিল আদালত৷ ২০০৭ সালে হাই কমিশনার পদে নিয়োগ করে তাকে মালয়েশিয়া পাঠানো হয়েছিল৷ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে খায়রুজ্জামানকে ঢাকায় ফিরতে বললেও তিনি ফেরেননি৷ জাতিসংঘের শরণার্থী কার্ডের মাধ্যমে মালয়েশিয়াতে থাকছিলেন৷
আরকেসি/কেএম (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)