মুসলিম অধ্যুষিত মালয়েশিয়ার হোটেল-রেস্টুরেন্ট ‘হটডগ'এর নাম না বদলালে, হালাল সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে না৷জানিয়ে দিয়েছে সে দেশের ধর্ম সংক্রান্ত সরকারি বিভাগ৷ দৃশ্যত বিদেশ থেকে আগত মুসলিম টুরিস্টরা অভিযোগ করেছিলেন হটডগ নিয়ে৷
বিজ্ঞাপন
ইসলামি উন্নয়ন বিভাগ নামের সরকারি আফিসটির হালাল ডিভিশনের পরিচালক সিরাজুদ্দিন সুহাইমি বলেছেন, ‘‘যেসব হালাল পণ্য ক্রেতাদের দ্বিধায় ফেলে, সেগুলি আমরা বদলাতে বাধ্য৷ ইসলামে কুকুর প্রাণীটিকে নাপাক বলে গণ্য করা হয় এবং হালাল সার্টিফিকেশনের সঙ্গে তার সংযোগ থাকতে পারে না৷''
মালয়েশিয়ায় বহু ফেরিওযালাই হটডগ বিক্রি করেন৷ এছাড়া অনেক হালাল রেস্টুরেন্টেও বিক্রি হয় হটডগ৷ এদের সকলকেই প্রতি দু'বছর অন্তর ‘ডিপার্টমেন্ট অফ ইসলামিক ভেলপমেন্ট' থেকে তাদের হালাল সার্টিফিকেট রিনিউ করাতে হয়৷ সিরাজুদ্দিন জানিয়েছেন, তখনই ধাপে ধাপে পরীক্ষা করে দেখা হবে,হটডগ নামটি ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা৷
যে দেশে জিন্স ‘হারাম’, গাঁজা ‘হালাল’
দেশটি এতটাই যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী যে সেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবেই ‘জিন্স’-এর পোশাক পরা নিষিদ্ধ৷ অথচ অন্যদিকে যে যত খুশি ‘গাঁজা’ সেবন করতে পারবেন! এমন দেশ উত্তর কোরিয়া সম্পর্কে জানুন মজার কিছু তথ্য৷
ছবি: Getty Images/C. Chu
ইচ্ছে মতো চুল কাটা মানা
হ্যাঁ, উত্তর কোরিয়ায় যার যেমন খুশি চুল কাটবেন সে উপায় নেই৷ স্বৈরশাসক কিম জং উন ক্ষমতায় আসার পর পরই ঠিক করে দিয়েছেন, দেশের সব পুরুষকে বিশেষ ১০টি আর মেয়েদের ১৮টি হেয়ার স্টাইলের মধ্যেই যে কোনো একটি বেছে নিতে হবে৷ আর কিম জং উন যেভাবে চুল কাটান সেভাবে দেশের আর কেউ কাটাতে পারবেন না৷
ছবি: picture alliance/AP Images
যে দেশে ‘স্বর্গ’ আছে...
উত্তর কোরিয়ার সব মানুষ মন থেকে নিজের দেশকে ‘স্বর্গ’ না বললেও, যাঁরা গাঁজা সেবন করেন, তাঁরা নিশ্চয়ই বলেন৷ এ দেশে যে যত খুশি গাঁজা খেতে পারেন৷ গাঁজা সেখানে কোনো নিষিদ্ধ মাদক নয়৷ সুতরাং যে যত খুশি গাঁজা খেলে কোনো সমস্যাই নেই৷
ছবি: picture alliance/Photopqr/l'Alsace
সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম
বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়ামটি কিন্তু উত্তর কোরিয়ায়৷ নাম রুনগ্রাদো মে ডে স্টেডিয়াম৷ ১৯৮৯ সালের পহেলা মে স্টেডিয়ামটির কাজ শেষ হয়েছিল বলে নামের সঙ্গেও জুড়ে দেয়া হয়েছে ‘মে দিবস’৷ ১ লক্ষ ৫০ হাজার দর্শকের আসন আছে স্টেডিয়ামটিতে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
জন্মদিনেও বাধা...
উত্তর কোরিয়ায় বছরের বিশেষ দু’টি দিনে কেউ জন্ম নিলে সেই দিনে জন্মদিন উদযাপন করা যাবে না৷ উত্তর কোরিয়া সাবেক দুই শাসক কিম ই সুং এবং কিম জং ইল মৃত্যুবরণ করেছিলেন বলে সেই দিনগুলোতে দেশের কোনো সাধারণ মানুষের জন্মদিন উদযাপন রাষ্ট্রীয়ভাবে নিষিদ্ধ৷ এ নিয়ম মানতে গিয়ে প্রায় ১ লাখ মানুষকে ৮ জুলাই বা ১৭ ডিসেম্বরের জন্মদিন উদযাপন করতে হয় একদিন পর, অর্থাৎ ৯ জুলাই এবং ১৮ ডিসেম্বরে৷
ছবি: Fotolia/Jenny Sturm
যুক্তরাষ্ট্র ‘শত্রু’, তাই...
এক সময় উত্তর কোরিয়ায় সমাজতন্ত্র কায়েমের চেষ্টা ছিল, কিন্তু এখন যে ধরনের শাসন চলছে তাকে সমাজতান্ত্রিক বলার উপায় নেই৷ দেশের নাম ‘ডেমোক্র্যাটিক পিপল’স রিপাবলিক অফ কোরিয়া’, অথচ ঘোষিতভাবেই চলছে একদলীয় শাসন৷ তবে সমাজতন্ত্র না থাকলেও উত্তর কোরিয়ার সেই ‘শীতল যুদ্ধের’ সময়কার যুক্তরাষ্ট্রবিরোধিতা ঠিকই আছে৷ যুক্তরাষ্টের মানুষ বেশি জিন্স পরে বলে এ দেশে জিন্স পরা নিষিদ্ধ৷
ছবি: picture-alliance/chromorange
5 ছবি1 | 5
মার্কিন প্রেটজেল চেইন ‘আন্টি অ্যান'স'-এর মালয়েশিয়ায় ৪৫টি আউটলেট আছে৷ এই সংখ্যা ভবিষ্যতে আরো বাড়বে৷ আন্টি অ্যান'স-এর হালাল সার্টিফিকেটের আবেদন আপাতত বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে৷ সিরাজুদ্দিন নাকি তাদের প্রেটজেল ডগগুলির নাম বদলে প্রেটজেল সসেজ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন৷ তাতে আন্টি অ্যান'স-এর দৃশ্যত কোনো আপত্তি নেই৷
হটডগের নাম পাল্টানো নিয়ে ব্যঙ্গকৌতুকের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ এক ফেসবুক ব্যবহারকারী সরকারকে ইংরেজি ভাষা নিয়ে পণ্ডিতি করা ছেড়ে, ধর্ম নিয়ে থাকতে বলেছেন৷ আরেক জন পোস্ট করেছেন, ‘‘পেট শপদের এবার কুকুরদের নাম বদলে সসেজ রাখতে হবে৷'' হালালের নীতি অনুযায়ী, শূকরের মাংস, সুরা বা হালাল মতে বধ না করা সব জীবজন্তুর মাংস ‘হারাম'৷ মালয়েশিয়ায় বহুদিন ধরে ইসলামের একটি মধ্যমপন্থি সংস্করণ চালু থাকার পর এখন সনাতনপন্থি মনোভাব মাথা চাড়া দিচ্ছে৷ গতবছর একটি কোম্পানি মালয়েশিয়ায় হালাল ‘বটল্ড মিনারাল ওয়াটার' চালু করে৷ অপরদিকে ‘ইসলামিক স্পিড ডেটিং' ক্রমেই আরো জনপ্রিয় হচ্ছে, যে ডেটিং-এ মেয়েদের সঙ্গে কোনো অভিভাবিকা থাকেন৷ গতবছর কুয়ালালামপুরের একটি হালাল কনভেনশনে কয়েক হাজার হাজার প্রতিনিধি আর কয়েকশ' প্রদর্শক এসেছিলেন৷
এসি/এসিবি (এএফপি)
মুসলিম পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় ১০টি ভ্রমণ স্থান
পর্যটন সংস্থা ‘ক্রিসেন্ট’ সম্প্রতি মুসলিম পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য কয়েকটি স্থানের কথা উল্লেখ করেছে যেখানে হালাল খাবার ও নামাজ আদায়ের স্থান রয়েছে৷
ছবি: DW/S. Dege
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ার প্রধান প্রধান শহরগুলোতে মুসলিম পর্যটকদের জন্য সবধরনের সুব্যবস্থা রয়েছে৷ আছে হালাল খাবারের দোকান, পাশাপাশি রয়েছে নামাজ পড়ার স্থান৷ সিডনি, মেলবোর্ন বা গোল্ড কোস্ট সব শহরেই পাবেন এসব সুব্যবস্থা৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO
ভারত
ইসলামি রাষ্ট্র না হলেও ভারতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা অনেক৷ মুসলিম পর্যটকরা দেশটির শ্রীনগরের হযরতবল মাজারে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণ করেন৷ বিশ্বাস করা হয় সেখানে মহানবি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর মাথার চুল রয়েছে৷
ছবি: Fotolia/Tepfenhart
হংকং
হংকং এ বিশাল আকারের ৬টি মসজিদ রয়েছে৷ কেন্দ্রীয় স্টেশনের কাছে রয়েছে জামিয়া মসজিদ৷ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সেখানে ৪৪টি রেস্তোরাঁ, খাদ্যদ্রব্যের দোকান এবং পিৎজা ও কাবাব হাউজ রয়েছে, যেগুলো হালাল৷
ছবি: A.Ogle/AFP/Getty Images
তানজানিয়া
তানজানিয়ার সেরেঙ্গেটি জাতীয় উদ্যান এবং জানজিবার দ্বীপ পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ৷ আফ্রিকার এই দেশটি মুসলিম পর্যটকদের কাছে অতি জনপ্রিয়, কারণ এখানে রয়েছে অনেক মসজিদ এবং হালাল খাবারের দোকান৷
জার্মানি
জার্মানিতে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রতিনিধিত্ব করছে তুর্কীরা৷ এ কারণে বড় মসজিদ বা কাবাবের দোকান খুঁজে পাওয়াটা জার্মানিতে খুব একটা মুশকিল নয়৷
ছবি: DW/S. Dege
বসনিয়া হার্ৎসেগোভিনা
সার্বিয়া যুদ্ধে যেসব মুসলিম স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে, সেসব স্থান পরিদর্শন করতে বসনিয়ায় যান অনেক মুসলিম পর্যটক৷ মুসলিম পর্যটকদের জন্য বিশেষ বিশেষ প্যাকেজ দিয়ে থাকে সেখানকার ট্র্যাভেল এজেন্সিগুলো৷
ছবি: World Music Centre
থাইল্যান্ড
সুবর্ণভূমি বিমানবন্দরে ঢুকলেই আপনি নামাজের স্থান খুঁজে পাবেন৷ যদিও বৌদ্ধ ধর্মালম্বীর সংখ্যা সেখানে বেশি, তবুও থাইল্যান্ড মুসলিম পর্যটকদের পছন্দের স্থান হিসেবে পরিচিত৷ কেবল রাজধানী ব্যাংককে রয়েছে ১০০টি মসজিদ৷
ছবি: picture-alliance/ZB
দক্ষিণ আফ্রিকা
বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকার মোট জনসংখ্যার ১.৫ শতাংশ মানুষ ইসলাম ধর্মাবলম্বী৷ এ কারণে খুব সহজেই সেখানকার বড় বড় শহরগুলোতে হালাল খাবারের দোকান এবং মসজিদ দেখতে পাওয়া যায়৷
ছবি: picture alliance/dpa
সিঙ্গাপুর
সিঙ্গাপুর এমন একটি অমুসলিম দেশ, যেটি মুসলিম পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়৷ হালাল খাবার, পানীয়, নামাজের স্থান- এই তিনটির বিচারে সিঙ্গাপুর মুসলিম পর্যটকদের প্রধান গন্তব্য বলে মনে করা হয়৷
ছবি: Reuters
যুক্তরাজ্য
ব্রিটেনে ইসলাম ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি৷ এ কারণে দেশটিতে মুসলিম পর্যটকদের জন্য সবধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে৷ প্রধান শহরগুলোতে মসজিদ খুঁজে পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়৷ বার্মিংহামে ১৫০টিরও বেশি মসজিদ রয়েছে৷