1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাশরাফীর গয়না ফিরে পাওয়া ও আমার বেদনা

১৮ মে ২০২০

সরি ক্যাপ্টেন, আপনার ব্রেসলেট ফিরে পাওয়াটা ভালো লাগলো না আমার৷ যারা ফিরিয়ে দিয়েছে তারা হয়তো আপনাকে ভালোবেসে দিয়েছে, হয়তো দিয়েছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে, কিন্তু আমার খুব খারাপ লেগেছে৷ 

বা হাতে সেই ব্রেসলেটছবি: picture-alliance/A. Boyers

খারাপ লেগেছে আপনার জন্য ক্যাপ্টেন মাশরাফীঅসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিজের প্রিয় অলঙ্কার খুলে ফেলেছিলেন আপনি, ত্যাগ করতে চেয়েছিলেন ১৮ বছরের সুখ-দুঃখের সাথীকে৷ কিন্তু ভালোবাসার নামে, সম্মান জানানোর নামে তা আবার ফিরিয়ে দেওয়া আপনার সেই চাওয়াকেই যেন অসম্মান করা৷ 

মাশরাফীর ব্রেসলেট অমূল্য হয়ে ওঠে সেটি তিনি পরেছেন বলেই৷ তাকে ভালোবাসি বলেই তার স্মারক হিসেবে ওটা আমার চাই৷ দরাদরি করে নিলাম করে নিয়ে সেটি ফেরত দেওয়ার অর্থ হলো ওই বস্তুতে আমার কোনো আগ্রহ নেই৷ আমি তাকে সাধ্যমতো সাহায্য বলা উচিত বলে করুণা করতে চেয়েছি মাত্র৷ এতে হয়তো বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা বা দাতার উদারতা আছে, কিন্তু সম্মানের চিহ্ন বা ভালোবাসার কাতরতা নেই৷ 

আমাদের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশ, কোভিড ১৯ রোগের প্রকোপের এই দুঃসময়ে অসহায় মানুষের সহায়তার জন্য প্রিয় ব্রেসলেটটি নিলামে তুলেছিলেন মাশরাফী৷ পাঁচ লাখ টাকা ভিত্তিমূল্যের নিলামে সেটি বিক্রি হয়েছে ৪২ লাখ টাকায়৷ ব্রেসলেটটি কিনেছে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বিএলএফসিএ৷ নিলামে দর ছিল ৪০ লাখ টাকা৷ নিলাম আয়োজনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি যোগ করেছে আরো পাঁচ  শতাংশ৷ সব মিলিয়ে হয়েছে ৪২ লাখ টাকা৷

খালেদ মুহিউদ্দীন, প্রধান, ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগছবি: DW/P. Böll

নিলাম আয়োজনের ফেসবুক লাইভে বিএলএফসিএর চেয়ারম্যান ও আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিন ইউ ইসলাম বলেন, এটি দেশের প্রতি মাশরাফীর অবদানের সামান্য প্রতিদান৷ আপনি এই দেশকে যে সম্মান এনে দিয়েছেন, সেই সম্মানের প্রতিদান আসলে কোনোভাবেই হয় না৷ মমিন ইউ ইসলাম যখন এই কথা বলছেন, মাশরাফী তখন হাত থেকে ব্রেসলেট খুলে তুলে ধরে হাসি মুখে বলছিলেন, এটা আপনাদের, এখন আমার হাত খালি৷ ‘‘এই ব্রেসলেট ১৮ বছর ধরে আপনার সঙ্গে আছে, এটি আপনার হাতেই মানায়৷ আমরা এই ব্রেসলেট আপনাকেই উপহার দিতে চাই৷’’ মাশরাফী তখন অবিশ্বাস ও ভালোলাগায় দুই হাতে ঢেকে ফেলেন নিজের মুখ৷ 

আমরা জানি, আপনি নিজের জন্য না, এই টাকা নিচ্ছেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ ফাউন্ডেশনের জন্য যা দিয়ে সহায়তা করা হবে নড়াইল ও নড়াইলের বাইরেও৷ তাই নিলামে তোলা ব্রেসলেট ফিরে পেয়ে মাশরাফীর আনন্দে শিশুর উচ্ছাস আছে, কিন্তু এতে আমাদের হিমালয়সম ক্যাপ্টেনের আত্মসম্মানটুকু নেই৷ প্রিয় ক্যাপ্টেন, আপনি হাত দিলে চারদিক চকচকে হয়ে উঠে, আপনি হাতে দিলে যে-কোনো কিছুই হয়ে উঠে রত্ন, এমনই রাজন্য আপনি! বিশ্বাস করেন, আমরা ১৭ কোটি আপনাকে এমনই দেখি, আপনাকে করুণা করা মনে হয় দুঃসাহসের চেয়ে বেশি৷

খালেদ মুহিউদ্দীন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও টিভি উপস্থাপক৷ ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগের সাবেক প্রধান।
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ