1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মাস্ক কমিয়ে দিলো যক্ষ্মা?

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৩০ জানুয়ারি ২০২১

করোনা কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু৷ আবার ফিরিয়ে দিয়েছে মাস্ক পরার মতো কিছু অভ্যাসও৷ আর তাতেই নাকি কমেছে যক্ষ্মার মতো সংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ৷ দাবি কলকাতা পুরসভার৷

করোনা কেড়ে নিয়েছে অনেক কিছু৷ আবার ফিরিয়ে দিয়েছে মাস্ক পরার মতো কিছু অভ্যাসও৷ আর তাতেই নাকি কমেছে যক্ষ্মার মতো সংক্রামক ব্যাধির প্রকোপ৷ দাবি কলকাতা পুরসভার৷
ছবি: Payel Samanta/DW

বায়ুবাহিত রোগ যক্ষ্মা (টিবি) হাঁচি-কাশির মতো ড্রপলেট পেলেই ছড়িয়ে পড়ে৷ অনেকটা করোনার মতো৷ বিশেষজ্ঞরা বলেন, কোনো যক্ষ্মারোগী সঠিক চিকিৎসা না করালে তার থেকে বছরে ১৫ জনের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে৷ এই রোগ সংক্রামক ও এতে মৃত্যুহার বেশি৷

যক্ষ্মারোগী কমেছে

একদিকে লকডাউনে ঘরবন্দি ছিল মানুষ৷ অন্যদিকে করোনা ঠেকাতে মাস্ক পরার প্রবণতা বেড়েছে৷ তার ফলে ফ্লু, নিউমোনিয়া, হাম এবং যক্ষ্মা প্রভৃতি ব্যাকটিরিয়াঘটিত রোগ ক্রমশ কমেছে৷ ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গে ও কলকাতায় যক্ষ্মারোগীর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৪০ হাজার ও ১৬ হাজার৷ ২০২০-তে তা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৮০ হাজার ও ৯,৯৭৫৷ কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকেরা মনে করছেন, এটা মাস্ক পরার সুফল৷ কিন্তু তার জন্যই কি যক্ষ্মা এতটা কমে গেল?

পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্য

This browser does not support the audio element.

বিশিষ্ট বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ পার্থপ্রতিম ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মাস্ক পরলে সংক্রমণ কমতে পারে৷ তবে কলকাতা পুরসভা এই তথ্য কিভাবে সংগ্রহ করেছে, সেটাও দেখতে হবে৷ কাশির সঙ্গে যাদের টিবির জীবাণু বেরোচ্ছে, তেমন কতজন মাস্ক পরেছেন, বাড়িতে পরেছেন কিনা, বাড়ির লোকেদের সংক্রমণ হয়েছে কিনা, এসব ভাবার ব্যাপার আছে৷ লকডাউনের জন্য অনেক জায়গায় ভিড় কম হয়েছে৷ ভিড়ে টিবি রোগীরা যাননি, সেজন্যও টিবি কম ছড়াতে পারে৷’’

করোনায় যক্ষ্মার চিকিৎসা

অথচ গত জুন মাসে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা যে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, তা উদ্বেগের৷ আগে ভারতে যক্ষ্মায় প্রতিদিন চার হাজার রোগী মারা যেতেন৷ গবেষকদের দাবি, সেই সংখ্যা আগামী পাঁচ বছরে ৯৫ হাজার হয়ে যাবে, কারণ, মহামারি মোকাবিলাতেই চিকিৎসকরা ব্যস্ত৷ অন্যান্য রোগের তেমন চিকিৎসা হয়নি৷ এর প্রভাব পড়বে আগামী পাঁচ বছরে৷ ফলে যক্ষ্মা আরো মারাত্মক হবে৷ ডাব্লিউএইচও-এর প্রাক্তন পরামর্শদাতা ও সিনিয়র ভাইরোলজিস্ট ডা. অমিতাভ নন্দী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রত্যক্ষ সমীক্ষা, অর্থাৎ ঘরে ঘরে গিয়ে টিবি রোগী শনাক্ত করা এবং পরোক্ষ সমীক্ষা, অর্থাৎ চিকিৎসকের কাছে আসা যক্ষ্মারোগীর হিসেব, এই দুটিই লকডাউনে ব্যাহত হয়েছে৷ টিবি একটা ক্রনিক রোগ৷ এর সম্পূর্ণ প্রকাশ পেতে কয়েক মাস, এমনকি কয়েক বছর সময় লাগে৷ মার্চ-এপ্রিল থেকে মাস্ক পরলাম আর তৎক্ষণাৎ সুফল পেয়ে যাবো, এটা হয় না৷” তার বক্তব্য, ‘‘যত্রতত্র থুতু ফেলা বা বাইরে খাওয়াদাওয়া কমেছে কিনা সেটাও দেখতে হবে৷ বাড়িতেও রোগীরা মাস্ক পরে থাকেন না৷ আবার রোগীদের একাংশ দূরে যাতায়াত করছেন না৷ ফলে আগামী পাঁচ বছরে টিবি এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে না-ও পড়তে পারে, রোগটা স্থানীয় স্তরে সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে৷’’

ডা. অমিতাভ নন্দী

This browser does not support the audio element.

ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ গোবিন্দচন্দ্র মল্লিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মাস্ক পরলে টিবি হয়তো ছড়াবে না৷ তবে অনেক রোগী বুঝে ওঠার আগেই বাড়ির সদস্যদের মধ্যে রোগ ছড়িয়ে দেন৷ গ্রামীণ এলাকায় অনেক রোগী ছ-মাস ধরে নিয়মিত চিকিৎসাও করান না৷ পরিযায়ী শ্রমিকেরা কতটা রোগনির্ণয় করিয়েছেন বা ওষুধ খাচ্ছেন, সেটাও দেখতে হবে৷’’

স্বাস্থ্য দপ্তর প্রতি বছর ১ লাখ ৪০ হাজার যক্ষ্মারোগী চিহ্নিতকরণের লক্ষ্য নিয়ে এগোয়৷ এবার তার অর্ধেকের বেশি চিহ্নিত করা গিয়েছে৷ লকডাউনের মধ্যে শহরের ১৮০টি জায়গায় যক্ষ্মার চিকিৎসাকেন্দ্র খোলা ছিল৷ রোগীদের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছানো হয়েছে৷ এখানেই লুকিয়ে আছে সমস্যা৷ যক্ষ্মা নির্ণয়ের জেনএক্সপার্ট মেশিন ব্যবহার করা হয়েছে করোনা (আরটিপিসিআর) পরীক্ষার জন্য৷ ফলে চিহ্নিতকরণ থমকে গিয়েছে৷ তার উপর লকডাউনের জেরে মানুষের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে, এ জন্য অপুষ্টি বাড়বে৷ ২০২৫ সালের মধ্যে ‘ন্যাশনাল টিউবারকিউলোসিস এলিমিনেশন প্রোগ্রাম’ (এনটিইপি) প্রকল্পে ভারতকে যক্ষ্মামুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল৷ কিন্তু কোভিডের জেরে এক লক্ষের মধ্যে অন্তত একজন যক্ষ্মারোগী থেকে যাবে বলে আশঙ্কা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ