মা হওয়া নয় মুখের কথা— দশ মাস দশ দিনের সময়টা কম নয়৷ সভ্যতার বিবর্তনে যতই নানা নিয়ম আলগা হোক না কেন, মা হওয়ার নিয়ম নিয়ে এখনও কড়াকড়ি৷ তাই লোকলজ্জার হাত থেকে বাঁচতে পশ্চিমবঙ্গেও রমরমিয়ে চলছে সিলিকন পেট বা নকল পেটের ব্যবসা৷
ছবি: DW/P. Samanta
বিজ্ঞাপন
সারোগেসি বা গর্ভভাড়ার বিষয়টি ভারতীয় চলচ্চিত্রের তারকা আমির খান, শাহরুখ খান, করণ জোহর, তুষার কাপুর প্রমুখদের সৌজন্যে এখন আর অজানা নয়৷ তাঁরা প্রত্যেকেই গর্ভ ভাড়া করে সন্তান নিয়েছেন৷ কিন্তু তাতে সমাজে সারোগেসি এখনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি৷ তাই এখনো রাখঢাক করে সারোগেট মায়েদের সাহায্যে মা হওয়ার বিজ্ঞানকে লুকিয়ে রাখতে চাইছেন নারীরা৷ সিলিকনের তৈরি কৃত্রিম অঙ্গের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে নকল পেট৷
সমাজ নিয়ে বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের সমস্যা যেন সবসময়ই একটু বেশি৷ তাঁরা যে সমাজে বাস করেন, তা বহিরঙ্গে আধুনিক হলেও তার অন্দরে সংস্কারের শিকড় এখনও ছড়িয়ে৷ তাই জৈবিকভাবে সন্তানের মা হয়েও স্রেফ সমাজের কাছে মাতৃত্ব দেখানোর জন্য মহিলারা নকল পেটের আশ্রয় নিচ্ছেন৷ বাড়ির সদস্যরা হাত দিয়ে পেট ছুঁয়ে শিশুর উপস্থিতি নিয়ে যাতে সংশয় দেখাতে না পারেন, সে জন্যও রয়েছে ব্যবস্থা৷
ভারতে সারোগেসির সেকাল-একাল
ভারতে সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়া সহজলভ্য ও খরচ কম হওয়ায় বাণিজ্যের বাজার দাঁড়িয়েছে ১৫০০ কোটি টাকার মতো৷ তবে গত বছর এই পদ্ধতিকে প্রায় নিষিদ্ধ করার আইন হয়েছে৷ ছবিঘরে থাকছে ভারতের কয়েকটি ক্লিনিকের কথা৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
সারোগেসি আসলে কী?
সারোগেসি হলো সন্তান জন্মদানের জন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া নেওয়া৷ এই প্রক্রিয়ায় কোনো সন্তানহীন দম্পতি অথবা কোনো একক মা বা বাবা সন্তানলাভের জন্য কোনো নারীর গর্ভ ভাড়া নিতে পারেন৷ বলা বাহুল্য, এক্ষেত্রে ‘সারোগেট মা’ বা যিনি সেই সন্তান ধারণ করছেন, এতে তাঁর সম্মতি থাকতে হবে৷ সন্তানটি প্রসবের পর অবশ্য সারোগেট মা সদ্যজাত সন্তানকে ঐ দম্পতিকে দিতে বাধ্য থাকবেন৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Hussain
কারা এমন সন্তান চান?
বিদেশি সন্তানহীন দম্পতি, প্রবাসী ভারতীয় দম্পতি, একক বাবা-মা, সমকামী – এমন অনেকেই সারোগেসির জন্য ভারতকে বেছে নেন৷ এমন ভারতীয় দম্পতিরা, যাঁদের ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ-এর মাধ্যমে, অর্থাৎ শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটিয়ে সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়, তাঁরাও সারোগেসির দ্বারস্থ হন৷ বর্তমানে ভারতে এ ধরনের ক্লিনিক বেশি আছে দিল্লি ও মুম্বইয়ের মতো বড় বড় শহরে৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. Panthaky
ভারতে সারোগেসির সূত্রপাত
ডা. নয়না প্যাটেল ভারতে প্রথম সারোগেসি বাণিজ্যিকভাবে চালু করেন৷ আহমেদাবাদ থেকে ৯০ কিলোমিটার দূরে আনন্দ শহরে ২০০৫ সালে বাণিজ্যেকভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেন তিনি৷ সেসময় থেকেই নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে ডা. নয়না প্যাটেল এক বিশ্বস্ত ও জনপ্রিয় নাম হয়ে ওঠে৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
আকাঙ্খা ক্লিনিক
২০১৫ সালে ডা. প্যাটেল একটি ক্লিনিক চালু করেন, ঐ আনন্দেই, যার নাম আকাঙ্খা৷ সারোগেসি, আইভিএফ’সহ অন্যান্য নানা ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে৷ তবে সারোগেসির জন্য রয়েছে বিশেষ কিছু সুবিধা৷ যেমন শুক্রাণু ব্যাংক৷ এমনকি সন্তান প্রসবের পর সদ্যজাতকে যথেষ্ট পরিমাণ দুধের জোগান দিতে রয়েছে ‘মিল্ক ব্যাংক’-ও৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মায়েরা
আকাঙ্খা ক্লিনিকে সারোগেট মায়েদের গর্ভধারণ থেকে শুরু থেকে প্রসব পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হয়৷ ক্লিনিকের একেবারে নীচ তলায় তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে৷ বর্তমানে সেখানে অন্ততপক্ষে ৭০ জন সারোগেট মা রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ৬২ জন সন্তানসম্ভবা৷
ছবি: DW/D. Guha
আকাঙ্খা ক্লিনিকে খরচ
সারোগেসির জন্য এখানে খরচ পড়ে সাড়ে ৬ থেকে সাড়ে ৭ লাখ রুপি৷ তবে অর্থটা নির্ভর করে সারেগেট মা এবং ‘ইন্টেনডেড পেরেন্ট’ বা আইপি, অর্থাৎ সেই নিঃসন্তান দম্পতির শারীরিক অবস্থার ওপর৷ এক্ষেত্রে শুত্রাণু বা ডিম্বাণুর প্রয়োজন হলে অর্থের পরিমাণটি বাড়তে পারে৷ এমনকি প্রথমবারে গর্ভধারণ সম্ভব না হলে, এক-একটি প্রতিস্থাপনে বেড়ে যেতে পারে খরচ৷
ছবি: Sam Panthakya/AFP/Getty Images
বিভিন্ন সময় খবরে এসেছে যে ক্লিনিক
আকাঙ্খা ক্লিনিক যেহেতু শুরু থেকেই সারোগেসি নিয়ে কাজ করছে, তাই বহুবার পত্রিকায় খবর হয়েছে এই ক্লিনিক নিয়ে৷ এখানে সারোগেট মায়েরা পান সাড়ে ৩ থেকে সাড়ে ৪ লাখ রুপি৷ এজেন্ট, অর্থাৎ যাঁরা এই মায়েদের জোগাড় করে দেন, তাঁরা পান ২৫ হাজার রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
উরুজেন ক্লিনিক, দিল্লি
দিল্লির চিকিৎসক দম্পতি অশোক ও সুরভী গুপ্তা এই সারোগেসি ক্লিনিকটি চালু করেন৷ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাঁরা এই কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত৷ এই ক্লিনিকে সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ১২ থেকে সাড়ে ১২ লাখ রুপি৷ আগে এখানে নিঃসন্তান বিদেশি দম্পতিরাই বেশি আসতেন, তবে বর্তমান দেশি দম্পতিদের অনেকেই আসেন৷
ছবি: DW/D. Guha
অশোক গুপ্তা
উরুজেন এর চিকিৎসক অশোক গুপ্তা৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মা
উরুজেন ক্লিনিকের দু’জন সারোগেট মা৷ এই ক্লিনিকে সেই সব মায়েদের নির্বাচন করা হয়, যাঁদের নিজেদের আর সন্তানের প্রয়োজন নেই এবং যাঁদের আর বাচ্চা হবে না৷ এঁরা সন্তান গর্ভে আসা থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত নিজেদের বাড়িতেই থাকেন৷ তাই এঁরা পুরো সময়টা উপভোগ করেন এবং হাসিখুশি থাকেন৷ এই মায়েরা পান সাড়ে তিন লাখ রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
জেনোম, কলকাতা
কলকাতায় সারোগেসির জন্য এই ক্লিনিকটি সুনাম রয়েছে৷ এই ক্লিনিকে সন্তান পেতে আপনাকে খরচ করতে হবে ১০ লঅখ রুপির মতো৷ আর সারোগেট মায়েরা পান ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ রুপি৷
ছবি: DW/D. Guha
ঐন্দ্রী স্যান্নাল
এই ক্লিনিকটির চিকিৎসক ঐন্দ্রী স্যান্নাল৷
ছবি: DW/D. Guha
কাউন্সেলর
দুই সারোগেট মায়ের মাঝে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি জেনোম ক্লিনিকের সারোগেট মায়েদের কাউন্সেলিং করে থাকেন৷ তবে এই দুই সারোগেট মা এখন এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন৷ সারোগেসির ক্ষেত্রে একজন মা নিজের সন্তানসহ কেবল পাঁচবার গর্ভধারণ করতে পারবেন৷ অর্থাৎ যে মায়ের নিজের দু’টি সন্তান রয়েছে, তিনি আর তিনবার সারোগেট মা হতে পারবেন৷ তবে অস্ত্রপচার বা সিজারিয়ানের মাধ্যমে প্রসব হতে পারবে মাত্র দু’বার৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেট মায়েদের থাকার ব্যবস্থা
কলকাতায় সারোগেট মায়েদের তিনরকম থাকার ব্যবস্থা রয়েছে – হোম, নিজের বাসা, এমনকি যাঁরা বাচ্চা নেবে তাঁদের বাসাতেও চাইলে থাকতে পারেন সন্তানসম্ভবা সারোগেট মা৷
ছবি: DW/D. Guha
কলকাতার হোম
এই হোমের ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে সেখানে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের থাকার পরিবেশ ততটা ভালো নয়৷ তবে সেখানে তাঁকে তাঁর পরিবারের মানুষ দেখতে যেতে পারেন৷
ছবি: DW/D. Guha
সারোগেসি বন্ধে আইন
ভারতে সারোগেসি নিয়ে যে নতুন আইনটি উত্থাপিত হয়েছে, তা অনুযায়ী বিদেশি তো বটেই, দেশীয় নিঃসন্তান দম্পতিদের জন্যও বাণিজ্যেক সারোগেসি বন্ধ হতে যাচ্ছে৷ অর্থাৎ আইনটি পাশ হলে, অর্থের বিনিময়ে গর্ভভাড়া নেওয়া আর যাবে না ভারতে৷ কেবল নিঃসন্তান বিবাহিত দম্পতি – যাঁরা মেডিক্যাল কারণে বাবা-মা হতে পারছেন না – একমাত্র তাঁরাই সন্তানের জন্য কোনো নিকটাত্মীয়ের সাহায্য নিতে পারবেন৷
ছবি: DW/D. Guha
16 ছবি1 | 16
কলকাতার নাগেরবাজারের বাসিন্দা ৩৮ বছরের পৃথা সরকারের (নাম পরিবর্তিত) ১৩ বছর আগে বিয়ে হয়েছে৷ কিন্তু, এখনও মা হতে পারেননি৷ ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, তাঁর স্বামী সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম৷ তাই একজন পুরুষ দাতার শুক্রাণু নিয়ে পৃথার ডিম্বাণুকে কাজে লাগিয়ে সেই ভ্রূণ সারোগেট মায়ের শরীরে প্রতিস্থাপিত করা হয়৷ অর্থাৎ, সারোগেসির মাধ্যমে দশ মাস পর পৃথা মা হবেন, অথচ তাঁর বহিরঙ্গে কোনও পরিবর্তন হবে না৷ এটা কীভাবে সমাজ মেনে নেবে? কেন বিশ্বাস করবে সারোগেট মায়ের গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুটি পৃথারই উত্তরসূরি? কেনই বা তাঁকে গর্ভধারিণী মা বলে স্বীকৃতি দেবে? এই সব প্রশ্নের সমাধান করার লক্ষ্যেই এসেছে সিলিকন বেলি বা নকল পেটের ভাবনা৷
SUMITRA AG - MP3-Stereo
This browser does not support the audio element.
হাওড়া জেলার লিলুয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই কৃত্রিম অঙ্গ নিয়ে কাজ করছেন প্রস্থেটিস্ট সুমিত্রা আগরওয়াল৷ তাঁর ক্লিনিকে ক্রমশ ভিড় বেড়েই চলেছে৷ বহু মা তাঁর কাছে আসছেন, যারা নকল পেট লাগিয়ে পরিবার বা সমাজের কাছে অভিনয় করতে চান৷ সুমিত্রা বলেন, ‘‘সবাই দেখাতে চায় যে, আমি শিশুটিকে গর্ভে ধারণ করেছি৷ তাই আমাদের কাছে সিলিকন বেলি নিতে আসে৷ আমরা মহিলার কোমরের সাইজ অনুযায়ী নকল পেট তৈরি করে দিই৷ সেটিকে মহিলার পেটের উপর লাগিয়ে দেওয়া হয়৷ অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে পেটের সঙ্গে কোমরও চওড়া দেখায়৷ সিলিকন বেলি সেইভাবেই তৈরি৷ বাইরে থেকে কেউ বুঝতে পারবেন না যে, পোশাকের নীচে কী আছে৷''
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পরিবারের আপনজনেরা গর্ভবতীর পেটে হাত দিয়ে তার ভেতরের শিশুটির উপস্থিতি আঁচ করতে চান৷ সিলিকন বেলি পরলে সেটা কি বোঝা যাবে? সুমি্ত্রার জবাব, ‘‘নিশ্চয়ই বোঝা যাবে৷ যাঁদের এ ধরনের প্রয়োজন থাকে, তাঁদের আমরা নকল শিশুর ব্যবস্থাও করে দিই৷ নকল পেটের ভেতরে সেটাকে এমনভাবে রাখা হয় যাতে বাইরে থেকে হাত দিলে বোঝা যায়, ভেতরে বাড়তে থাকা শিশুটির অস্তিস্ব বা উপস্থিতি৷ সেক্ষেত্রে নকল পেটের ওজনও বেশি হয়৷''
নকল পেটের খরচ কেমন? সুমি্ত্রা জানান, ‘‘বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে পেটের দাম কেমন হবে৷ ৩, ৬ ও ৯ মাসের গর্ভাবস্থার জন্য আলাদা আলাদা আকারের সিলিকন বেলি পাওয়া যায়৷ সেই নকল পেট তৈরি করা হয় প্রত্যেক মহিলার আলাদা শারীরিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী৷ কৃত্রিম শিশু জুড়লে দাম কিছুটা বাড়ে৷ এই দামটা ১০ হাজার ৮০০ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে৷''
S M RAHMAN - MP3-Stereo
This browser does not support the audio element.
কলকাতার বিশিষ্ট প্রসূতি বিশেষজ্ঞ এবং আইভিএফ ক্লিনিকের কর্তা চিকিৎসক এস এম রহমান দীর্ঘদিন ধরেই সারোগেসির তত্ত্বাবধান করেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘অনেক মা-বাবাই আমাদের ক্লিনিকে আসেন, যাঁরা সমাজকে দেখাতে চান, তাঁরাই শিশুর জন্মদাতা বা জন্মদাত্রী৷ আমরা তাঁদের কাউন্সেলিং করাই৷ আমির খান, শাহরুখ খান, তুষার কাপুরদের উদাহরণ তুলে ধরে বলি, ওঁদের তো নকল পেট নিয়ে অভিনয় করার দরকার হয়নি৷ তাহলে আপনারা কেন প্রস্থেটিক বেলি নিয়ে ভাবছেন?''
ডাক্তার রহমানের অভিজ্ঞতাই বলে দিচ্ছে, ভারত মঙ্গলগ্রহে মানুষ পাঠানোর কথা ভাবতে পারে, কিন্তু সেই দেশের সমাজ সিঙ্গল মাদারের কথা চিন্তা করতে পারে না! চিকিৎসক আরো জানান, ‘‘আমাকে অনেক দম্পতি পাল্টা জবাব দিয়েছেন, আমির খান বা তুষার কাপুর তাঁদের মতো সাধারণ মানুষ নন৷ ওঁরা এসব সমালোচনার ঊর্দ্ধে৷ তাই আমাদের নকল পেট নিয়ে অভিনয় করা ছাড়া পথ নেই৷ সত্যিই কোনও ভুল নেই এই উপলব্ধিতে৷''
সারোগেসি এখন মাতৃত্বলাভের প্রচলিত উপায়৷ এ ক্ষেত্রে সরকারি প্রচার কি এই ধরনের মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে পারে? ডা. রহমানের মতে, ‘‘আমাদের দেশে জনসংখ্যা এত বেশি যে, সরকার কোনও দম্পতির সন্তানধারণ নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নয়৷ বরং তারা জন্ম নিয়ন্ত্রণের পক্ষে প্রচার করে৷ তাই সরকারি স্তরে কোনও উদ্যোগ দেখতে পাওয়া মুশকিল৷''
মহাভারতের কুন্তী ও মাদ্রীর স্বামী রাজা পাণ্ডু সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম ছিলেন৷ তাই নিয়োগ প্রথায় তাঁরা পঞ্চপাণ্ডবের মা হন বলে মনে করা হয়৷ অথচ কাহিনিকার বেদব্যাস তাঁদের সন্তান ধারণকে দুর্বাসা মুনির মন্ত্রের গুণ বলে দাবি করেছেন৷ এ যুগে অন্তত মন্ত্রের কথা বলে মা হওয়ার জো নেই৷ তাই সিলিকন বেলির জয়জয়কার৷ সেটাই হাসি ফোটাচ্ছে আজকের পৃথাদের মুখে৷
আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷