1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিউনিখে ক্ষমতার লড়াই

ক্রিস্টিয়ান ট্রিপে/এসবি৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

সপ্তাহান্তের মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন এবারও স্মরণীয় হয়ে থাকবে পরাশক্তিদের ক্ষমতার লড়াইয়ের পটভূমি হিসেবে৷ রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের বর্তমান সংঘাত নিয়ে মন্তব্য করেছেন ক্রিস্টিয়ান ট্রিপে৷

Ukraine Soldaten Raketenwerfer Raketen auf Donezk
ছবি: Reuters/Alexei Chernyshev

রাশিয়ার কি দীর্ঘমেয়াদি কোনো কৌশল আছে? নাকি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পরাশক্তি হিসেবে পুরানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা করে চলেছেন? বছরখানেক আগে ভ্লাদিমির পুটিন-এর ক্রাইমিয়া দখল ও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে হাইব্রিড যুদ্ধের সময় থেকেই পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করে চলেছেন৷

এতকাল মিউনিখের নিরাপত্তা সম্মেলনে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ-এর বেশ কদর ছিলো৷ রাশিয়ার ক্ষমতাকেন্দ্রে তিনিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি পশ্চিমা জগতের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেন৷ এভাবে তিনি গত কয়েক বছরে অনেক রাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে পেরেছেন৷ এবারে কিন্তু তাঁর কথা শুনে বিরক্তি, ক্ষোভ ও শ্লেষভরা হাসি দেখা গেছে৷ অনেকটা আবৃত্তিকারের মতো তিনি রুশ প্রচারণাযন্ত্রের তালে তাল মিলিয়ে গোটা সংকটের ভুল ও বিপজ্জনক ব্যাখ্যা করে গেছেন, যার মূলমন্ত্র হলো – সব দোষ আসলে পশ্চিমা বিশ্বর৷ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর থেকে তারা সুপরিকল্পিতভাবে রাশিয়ার অপমান করে চলেছে৷

মিউনিখে লাভরভের মুখেও শ্লেষভরা হাসিছবি: Reuters/M. Dalder

জ্বালাময়ী বক্তৃতার মঞ্চ

এমন মনোভাবের যৌক্তিক পরিণতিও স্পষ্ট৷ গত দুই দশকের অপমানের বদলা নিতেই রাশিয়া ঘুরে দাঁড়িয়েছে৷ অর্থাৎ নৈতিকতার বিচারেও রাশিয়ার আচরণ বৈধ৷ ক্ষোভে ফেটে পড়ে লাভরভ বলেন, বার্লিন প্রাচীর পতনের পর পশ্চিমা বিশ্ব এমন আচরণ করে চলেছে, যেন তারাই শীতল যুদ্ধে জয়লাভ করেছে৷ কিন্তু সেটাই কি ঘটে নি? রাজনীতিতে নিজেকে ভুল বোঝানোর প্রবণতা অনেক সময় নিজের ক্ষমতা সম্পর্কে ভুল ধারণার জন্ম দেয়৷ তখন অ্যাডভেঞ্চারের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়৷

সেই ২০০৭ সালেই লাভরভ-এর ‘বস' ভ্লাদিমির পুটিন মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনকে এক জ্বালাময়ী ভাষণের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন৷ সে বছর বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো তিনি আচমকা অ্যামেরিকা ও ন্যাটো-র বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন৷ এখন ফিরে তাকালে মনে হতে পারে, পুটিন-এর সেই আস্ফালন মোটেই ফাঁপা ছিল না৷ তার ঠিক পরের বছরগুলিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র নীতির মধ্যেই তার চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল৷ জর্জিয়া, মলডোভিয়া, ক্রাইমিয়া, ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের ঘটনা কারো অজানা নয়৷ এ বছর লাভরভ-এর ভাষণ যেন পুটিন-এর সেই ভাষণেরই উপসংহার ছিলো৷

পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে নতুন সংঘাত

ভবিষ্যতের ঐতিহাসিকদের মনে যদি প্রশ্ন জাগে, কবে ও কী ভাবে নতুন শীতল যুদ্ধ শুরু হয়েছিলো, তখন তাঁরা মিউনিখের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন৷ তখন মিউনিখ-কেই পূর্ব ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে সংঘাতের পটভূমি হিসেবে গণ্য করা হতে পারে৷ তবে এবারে সেই শীতল যুদ্ধ যেন কিছুটা পঙ্গু হয়ে ফিরে এসেছে৷ পশ্চিমা বিশ্বে কেউ এই সংঘাত চাইছে না, কারণ এবার কোনো আদর্শ বা প্রতিযোগিতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷ রাশিয়াও কোনো বিকল্প আদর্শগত মডেল খাড়া করতে পারছে না৷

ক্রেমলিনের নীতি স্বদেশের স্বার্থের বিরোধীছবি: Reuters/M. Zmeyev

রাশিয়ার রাজনৈতিক নেতৃত্ব তাদের নিজেদের দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে৷ কোনো যুক্তি বা প্রস্তাব নিয়ে তাঁরা মাথা ঘামাতে প্রস্তুত নন৷ ক্ষমতা ও হিংসার নীতি নিয়েই তাঁরা ব্যস্ত৷ ১৯৩৮ সালেও এই মিউনিখ শহরেই একই রকম একটা ঘটনা ঘটেছিলো৷ সে সময়ে পশ্চিমা বিশ্বের ধারণা হয়েছিলো, চেকোস্লোভাকিয়া-র অভিমত না নিয়ে সুডেটেনলান্ড জার্মানির হাতে তুলে দিলেই হিটলার-কে শেষ পর্যন্ত সামলানো যাবে৷ ফলে ‘মিউনিখ' নামটা শুনলেই ইউক্রেনে আজ ত্রাসের সৃষ্টি হচ্ছে৷ সেখানে বড় পরাশক্তিগুলির খেলার বল হতে চায় না৷

বুধবার মিনস্ক শহরে শান্তি আলোচনায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেট্রো পোরোশেঙ্কো-ও অংশ নেবেন৷ সেখানে উপস্থিত চার শীর্ষ নেতা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে অস্ত্র বিরতি নিয়ে আলোচনা করবেন৷ তবে তার ফলাফল যাই হোক না কেন, পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে ব্যবধান কাটার কোনো সম্ভাবনা নেই৷ রাশিয়া মিউনিখ সম্মেলনে যে অবস্থান নিয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে এমনটা বলা যেতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ