চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার বিষয়ে এখন নতুন করে নানা ধরণের প্রশ্ন উঠছে৷ আছে গুজবও৷ দু'জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন৷ বলা হচ্ছে তারা ভাড়াটে খুনি৷
বিজ্ঞাপন
এসপি বাবুল আক্তারকে ঢাকার বাসা থেকে নিয়ে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করায় নানা ধরণের প্রশ্ন উঠেছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে দু-একজন ধরা পড়েছে৷ আমি সুনিশ্চিত, ভবিষ্যতে আরও ধরা পড়বে৷''
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর মিতুর স্বামী বাবুল আক্তারকে ঢাকায় তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নিয়ে যায় পুলিশ৷ পরের দিন, অর্থাৎ শনিবার বিকেল ৪টার দিকে তাঁকে আবার বাসায় দিয়ে আসা হয়৷ তাঁর শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘তাকে নিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ সময় আমরা তার অবস্থান জানতাম না৷ তার মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিল৷ এটা আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে৷ ১৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি৷ আমি বিশ্বাস করি না যে সে কোনোভাবে মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত৷''
মোশাররফ হোসেন
তিনি বলেন, ‘‘বাবুল আক্তার সন্ত্রাসি ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অনেক সহসী কাজ করেছেন৷ সরকার তার এই কাজকে কীভাবে দেখছে তা আমার কাছে পরিষ্কার নয়৷ সরকার তার কাজকে কীভাবে বিবেচনা করছে তাও আমি জানি না৷''
রবিবার চট্টগ্রামের আদালতে মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে দু'জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন৷ তারা হলেন, ওয়াসিম এবং আনোয়ার৷ চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার জানিয়েছেন, ‘‘হত্যাকাণ্ডের সময় মোটরসাইকেলে থাকা তিনজনের একজন হলো ওয়াসিম৷ সে সরাসরি মিতুকে গুলি করে বলে আদালতে স্বীকার করেছে৷'' তিনি জানান, ‘‘হত্যাতাণ্ডে ৭/৮ জনের একটি পেশাদার চক্র জড়িত৷ বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে৷''
তবে হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য বা ‘মোটিভ' সম্পর্কে পুলিশ কোনো তথ্য এখানো জানায়নি৷ আর পেশাদার বা ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের কারা ভাড়া করেছে, নেপথ্যে কে আছে, তাও জানায়নি পুলিশ৷ পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘‘কার নির্দেশে এবং কেন মিতুকে হত্যা করা হয়েছে, তা এখন বলা সম্ভব নয়৷''
এদিকে ঢাকায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সোমাবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘‘বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর দুই খুনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ এই হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও দু-একজন ধরা পড়বে৷''
নিরাপত্তা নিয়ে যা ভাবছে দেশের মানুষ
বাংলাদেশে একের পর এক মুক্তমনা, ধর্মনিরপেক্ষ লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও ভিন্ন ধর্মের মানুষ খুন হচ্ছে৷ পুলিশ এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বললেও, দেশের মানুষ খুব উদ্বিগ্ন৷ ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে রিকশা চালক – আজ কতটা নিরাপদ আমরা?
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
আব্দুল্লাহ রিফাত, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ রিফাত৷ তার মতে, বাড়ি কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় – কোথাও তেমন নিরাপদ না কেউই৷ তবে দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে তিনি ভাবছেন না এই মুহূর্তে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
নাফিউল হাসান, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাফিউল হাসান মনে করেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউই নিরাপদ নয়৷ আমরা একরকম ভয়ের মধ্যেই বসবাস করছি৷ যতক্ষণ বাইরে থাকি, বাসায় অভিভাবকরা চিন্তায় থাকেন৷ অনেক সময় তো স্বাভাবিক ঘোরাফেরাও বন্ধ করতে হচ্ছে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
প্যারিস তালুকদার, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের ছাত্র
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া প্যারিস তালুকদার মনে করেন, গত দুই বছরের আগ পর্যন্ত নিজের নিরাপত্তা নিয়ে কখনো ভাবিনি, গভীর রাত পর্যন্তও ঘুরে বেড়াতাম বিভিন্ন জায়গায়৷ তবে গত দিনগুলোর নানান ঘটনায় আমার নিজেরই খুব ভয় হয়৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
ফারিয়া রিফাত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী
বেশ নির্ভিক টাইপের মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ফারিয়া রিফাত৷ কিন্তু দেশের বর্তামান পরিস্থিতিটা তার কাছে খুবই ঘোলাটে মনে হচ্ছে৷ প্রত্যেক দিনই বড় কোনো অঘটন ঘটছে৷ পত্রিকা খুললেই খুন-খারাবির খবর, মনে হচ্ছে ‘মার্ডার’ করাটা এখন সহজ ক্রাইম৷ আমরা প্রত্যেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি৷ ঘর থেকে বেড়িয়ে আবার যে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারব, এই নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারছে না৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
আরিফ জেবতিক, ব্লগার
ব্লগার আরিফ জেবতিক বললেন, ‘‘নিরাপত্তাহীনতার মধ্যেই আছি৷ ব্যক্তিগতভাবে যে যেভাবে পারছি সাবধানে থাকার চেষ্টা করছি৷ জীবনযাত্রায় অনেক পরিবর্তন আনতে হয়েছে৷ এই যেমন, ‘পাবলিক প্লেসে’ যাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছি৷ সিনেমা দেখতাম, নাটক দেখতাম, জগিং করতাম৷ এখন এগুলো আর করতে পারি না৷ যেহেতু পরিস্থিতির কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নেই, তাই এভাবেই সাবধানে থাকতে হচ্ছে৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
হযরত আলী, ব্যবসায়ী
পুরনো ঢাকার ব্যবসায়ী হযরত আলী৷ তাঁর মতে, দেশের কোনো শ্রেণির মানুষেরই নিরাপত্তা নেই৷ দিনে-দুপুরে খুন-খারাবি চলছে৷ তাই দিন কিংবা রাত – কখনোই নিরাপদ নই আমরা৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
হারিছ মিয়া, ফল ব্যবসায়ী
মাদারীপুরের হারিছ মিয়া গত প্রায় ১৭ বছর ধরে ঢাকায় ফলের ব্যবসা করেন৷ গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে খুন-খারাবি বেড়ে যাওয়ায় খুবই চিন্তিত তিনি৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
আক্কাস আলী, দিনমজুর
পুরনো ঢাকায় ঠেলাগাড়ি চালান আক্কাস মিয়া৷ জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবার সময় নেই তাঁর৷ আপাতত সন্তানদের মুখে তিনবেলা খাবার তুলে দিতে পালেই সন্তুষ্ট তিনি৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
আব্দুর রহমান, রিকশা চালক
লালমনির হাটের আব্দুর রহমান ঢাকায় রিকশা চালান গত প্রায় ছ’বছর ধরে৷ জীবনের নিরাপত্তার চেয়েও তাঁর কাছে বেশি চিন্তার বিষয় ছিনতাই৷ রাস্তায় থাকা হয় বলে প্রতিনিয়ত অনেক ছিনতাইয়ের সাক্ষী তিনি্৷ কিন্তু জীবনের ভয়ে সেগুলোর প্রতিবাদ না করে নিরব দর্শকের ভূমিকাই পালন করতে হয় তাঁকে৷ কিন্তু এতে খুবই মনোকষ্টে ভোগেন বিদ্যালয়ের প্রাথমিকের গণ্ডি পার হতে না পারা এই রিকশা চালক৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
আবুল কালাম, অটোরিকশা চালক
শেরপুরের আবুল কালাম অটোরিকশা চালান ঢাকা শহরে৷ তাঁর কথায়, দেশে কোনো নিরাপত্তা নেই৷ যে যেভাবে পারছে খুন-খারাবি করে যাচ্ছে৷ অপরাধীরা থাকছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে৷ অনেকে ধরা পড়ার খবর শুনলেও তাদের বিচারের আর কোনো খবর পান না বলে জানালেন এই অটোরিকশা চালক৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigr Rahman
10 ছবি1 | 10
মন্ত্রী বলেন, ‘‘সন্দেহভাজন দু-একজনকে গ্রেপ্তারের পর সঠিক ব্যক্তিদের ধরা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ সেখানে তাদেরকে বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করানো হয়৷'' সন্দেহভাজন নতুন কেউ ধরা পড়লে মামলার বাদী বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারো ডাকা হতে পারে বলে মন্ত্রী জানান৷
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু৷ প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল, জঙ্গিরা এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, কারণ, তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী অপারেশনের প্রথম সারির কর্মকর্তাদের একজন৷
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বিকেলে বাসায় ফেরার পর থেকে এসপি বাবুল আক্তার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না৷ টেলিফোনও ধরছেন না৷ তিনি এখনো তার শ্বশুরের বাসায়ই অবস্থান করছেন৷ এরপর থেকে তিনি আর বাসার বাইরেও বের হচ্ছেন না৷ বাসার সামনে নিয়মিত আটজন পুলিশ পাহারায় থাকছে৷
শ্বশুর মোশাররফ হোসেন ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই৷ এমনিতেই বাবুল আক্তার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন না, বাইরে যাচ্ছেন না৷ আর মিতু হত্যার পর থেকেই পুলিশ পাহারা দেয়া হয়েছে৷''
বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার শিকার যারা
চলতি বছর ইসলামপন্থিরা একের পর এক হামলা চালিয়ে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দিয়েছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন৷ চলুন জানা যাক ২০১৫ সালের কবে, কারা হামলার শিকার হয়েছেন...৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্লগার খুন
একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে খুন হন ব্লগার এবং লেখক অভিজিৎ রায়৷ কমপক্ষে দুই দুর্বৃত্ত তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ এসময় তাঁর স্ত্রী বন্যা আহমেদও গুরুতর আহত হন৷ বাংলাদেশি মার্কিন এই দুই নাগরিককে হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’৷ পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
বাড়ির সামনে খুন
ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে হত্যা করা হয় ঢাকায়, গত ৩০ মার্চ৷ তিন দুর্বৃত্ত মাংস কাটার চাপাতি দিতে তাঁকে কোপায়৷ সেসেময় কয়েকজন হিজরে সন্দেহভাজন দুই খুনিকে ধরে ফেলে, তৃতীয়জন পালিয়ে যায়৷ আটকরা জানায়, তারা মাদ্রাসার ছাত্র ছিল এবং বাবুকে হত্যার নির্দেশ পেয়েছিল৷ কে বা কারা এই হত্যার নির্দেশ দিয়েছে জানা যায়নি৷ বাবু ফেসবুকে ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের বিরুদ্ধে লিখতেন৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
সিলেটে আক্রান্ত মুক্তমনা ব্লগার
শুধু ঢাকায় নয়, ঢাকার বাইরে ব্লগার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ গত ১২ মে সিলেটে নিজের বাসার কাছে খুন হন নাস্তিক অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট এবং ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস৷ ভারত উপমহাদেশের আল-কায়েদা, যাদের সঙ্গে ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’-এর সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ দাস ডয়চে ভেলের দ্য বব্স জয়ী মুক্তমনা ব্লগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/EPA/Str
বাড়ির মধ্যে জবাই
ব্লগার নিলয় চট্টোপাধ্যায়কে, যিনি নিলয় নীল নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন, হত্যা করা হয় ঢাকায় তাঁর বাড়ির মধ্যে৷ একদল যুবক বাড়ি ভাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করে ৮ আগস্ট তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে৷ নিজের উপর হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন নিলয়৷ কিন্তু পুলিশ তাঁকে সহায়তা করেনি৷ ‘আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে, তবে তার সত্যতা যাচাই করা যায়নি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Uz Zaman
জগিংয়ের সময় গুলিতে খুন বিদেশি
গত ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে জগিং করার সময় ঢাকার কূটনৈতিক এলাকায় খুন হন ইটালীয় এনজিও কর্মী সিজার তাবেলা৷ তাঁকে পেছন থেকে পরপর তিনবার গুলি করে দুর্বৃত্তরা৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে বলে দাবি করেছে জিহাদিদের অনলাইন কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখা একটি সংস্থা৷ তবে বাংলাদেশে সরকার এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে ‘এক বড় ভাইয়ের’ তাঁকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/ A.M. Ahad)
রংপুরে নিহত এক জাপানি
গত ৩ অক্টোবর রংপুরে খুন হন জাপানি নাগরিক হোশি কুনিও৷ মুখোশধারী খুনিরা তাঁকে গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়৷ ইসলামিক স্টেট এই হত্যাকাণ্ডেরও দায় স্বীকার করেছে, তবে সরকার তা অস্বীকার করেছে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না যে তাঁর দেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির উপস্থিতি রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
হোসনি দালানে বিস্ফোরণ, নিহত ১
গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার ঐতিহ্যবাহী হোসনি দালানে শিয়া মুসলমানদের আশুরার প্রস্তুতির সময় বিস্ফোরণে এক কিশোর নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হন৷ বাংলাদেশে এর আগে কখনো শিয়াদের উপর এরকম হামলায় হয়নি৷ এই হামলারও দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট, তবে সরকার সে দাবি নাকোচ করে দিয়ে হামলাকারীরা সম্ভবত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি গোষ্ঠী জেএমবি-র সদস্য৷ সন্দেহভাজনদের একজন ইতোমধ্যে ক্রসফায়ারে মারা গেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Zaman
ঢাকায় প্রকাশক খুন
গত ৩১ অক্টোবর ঢাকায় দু’টি স্থানে কাছাকাছি সময়ে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়৷ এতে খুন হন এক ‘সেক্যুলার’ প্রকাশক এবং গুরুতর আহত হন আরেক প্রকাশক ও দুই ব্লগার৷ নিহত প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের সঙ্গে ঢাকায় খুন হওয়া ব্লগার অভিজিৎ রায়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল৷ জঙ্গি গোষ্ঠী ‘আনসার-আল-ইসলাম’ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. Uz Zaman
প্রার্থনারত শিয়াদের গুলি, নিহত ১
গত ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশের বগুড়ায় অবস্থিত একটি শিয়া মসজিদের ভেতরে ঢুকে প্রার্থনারতদের উপর গুলি চালায় কমপক্ষে পাঁচ দুর্বৃত্ত৷ এতে মসজিদের মুয়াজ্জিন নিহত হন এবং অপর তিন ব্যক্তি আহত হন৷ তথকথিত ইসলামিক স্টেট-এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা দাবি করা স্থানীয় একটি গোষ্ঠী হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷