1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিন্নির ‘শিখিয়ে দেওয়া জবানবন্দি' নিয়ে বিতর্ক

মাসুম বিল্লাহ
২৫ জুলাই ২০১৯

বরগুনায় প্রকাশ্য রাস্তায় শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আদালতে দেওয়া জবানবন্দি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে৷

Bangladesch Barguna | Ayesha Akter Minni ist angeklagt ihren Ehemann umgebracht zu haben
ছবি: bdnews24

মিন্নির ‘শিখিয়ে দেওয়া জবানবন্দি' নিয়ে বিতর্ক নির্যাতনের মাধ্যমে জোর করে জবানবন্দি আদায়ের অভিযোগ করেছে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন শিশির৷

শিশির বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, প্রভাবশালী মহলের চাপে ইয়াবা ব্যবসার মূল ঘটনাকে আড়াল করতে মিন্নিকে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র চলছে৷

এজন্য তিনি পুলিশকে দায়ী করে বলেছেন, ‘‘পুলিশ মামলার মুখ্য বিষয়কে এড়িয়ে তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে  নয়ন-মিন্নি- রিফাত ত্রিমুখী প্রেমের গল্পের অবতারণা করছে।'' সুষ্ঠু তদন্তে বরগুনা পুলিশের অনাস্থা জানিয়ে রিফাত হত্যা মামলা পিবিআইতে হস্তান্তরের দাবিও জানান মিন্নির বাবা৷

মেয়েকে রিমান্ডে নিয়ে তাঁর ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়েছে মন্তব্য করে শিশির বলেন, ‘‘২১ বছর বয়সি কোনো নারীকে স্বামী হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে এক নম্বর সাক্ষী থাকা অবস্থায় পুলিশ টানা ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের নজির বাংলাদেশের কোথাও নেই। পুলিশের ইতিহাসে আছে কি না আমার জানা নেই। তাঁর মেয়ে অসুস্থ। কিছু দিন আগেও তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। পুলিশি নির্যাতনে তাঁর মেয়ে ভারসম্যহীন হয়ে পড়েছে। তাঁর সুচিকিৎসা প্রয়োজন।''

তবে মিন্নিকে রিমান্ডে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে জবানবন্দি নেওয়াকে ম্যাজিস্ট্রেটের বিষয় হিসাবে উল্লেখ করেছেন বরগুনার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন৷

‘‘এগুলো আমাদের সাবজেক্ট না৷ এগুলো ম্যাজিস্ট্রেটের বিষয়৷ এগুলো জেল সুপারের বিষয়, জেল সুপার দেখবে, সে শারীরিকভাবে সুস্থ কি-না, সক্ষম কি-না৷ অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখাবে৷ রিমান্ডে কোনো অনিয়ম হলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেখবে,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন পুলিশ সুপার৷

তিনি দাবি করেন, ‘‘কারো বক্তব্যের বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নাই৷ আইনি প্রক্রিয়ায় পেশাদারিত্বের সঙ্গে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি৷ সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে যা যা করা দরকার আমরা সেগুলো করছি৷

গত ২৬ জুন মিন্নির স্বামী রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করে একদল লোক। এ ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত ছয়জন ও মিন্নিসহ মোট ১৩ জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি সাব্বির আহম্মেদ নয়ন ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

পুলিশ মিন্নিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার পর ৪৮ ঘণ্টার মাথায় তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ভয় দেখিয়ে ও নির্যাতন করে ওই জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ মিন্নির বাবা ও আইনজীবীর৷

এদিকে মিন্নির  বিতর্কিত ওই জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন সোমবার করা হলেও আদালত তা খারিজ করে দেয়৷ তবে, তার চিকিৎসার বিষয়টি দেখার কথা জানায় জেল কর্তৃপক্ষ৷ চিকিৎসকের পরিবর্তে একজন নার্সের পরামর্শে মিন্নিকে বৃহস্পতিবার ওষুধ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বরগুনার জেল সুপার৷

মেন্টালি সে একটু ডিজরাপ্টেড আছে, যেহেতু এই রকম একটা অভিযোগে অভিযুক্ত : পুলিশ সুপার মারুফ

This browser does not support the audio element.

মিন্নির চিকিৎসার বিষয়ে পুলিশ সুপার মারুফ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘জেল সুপারের সঙ্গে আমার অফিসারের কথা হয়েছে৷ জেল সুপার বলেছে, সে সুস্থ আছে৷ মেন্টালি সে একটু ডিজরাপ্টেড আছে, যেহেতু এই রকম একটা অভিযোগে অভিযুক্ত বা কিছু৷''

২৬ জুন প্রকাশ্য রাস্তায় রিফাত শরীফকে কোপানোর একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মিন্নি রিফাতকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর রিফাত মারা যান।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করনে। মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিকে এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান সাক্ষী করা হয়। ঘটনার ১৯ দিন পর ১৩ জুলাই রিফাতের বাবা আবদুল হালিম সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার সঙ্গে পুত্রবধু জড়িত বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

পরদিন ১৪ জুলাই মিন্নিকে দাবিতে বরগুনা শহরে  মানববন্ধন করা হয়, যেখানে সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ছেলে সুনাম দেবনাথ উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন।  এই ঘটনার দুই দিনের মাথায় ১৬ জুলাই আয়শাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ৷

মিন্নিকে আদালতে তোলার তার পক্ষে কোনো আইনজীবী দাঁড়াননি৷ বরগুনা বারেরই আইনজীবী সুনাম ও তার বাবা শম্ভুর রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের৷

মিন্নির পক্ষে কোনো আইনজীবী না দাঁড়ানোর প্রেক্ষাপটে ব্যাপক সমালোচনার তাকে আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)৷ এখন মিন্নির পক্ষে আদালতে লড়ছেন অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল বারী অসলাম৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ