মুরসির ভারত সফর
১৮ মার্চ ২০১৩সোমবার থেকে ভারত সফর শুরু করছেন মিশরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসি৷ সঙ্গে আসছেন ৮০ সদস্যের এক উচ্চস্তরের প্রতিনিধিদল৷ হোসনি মুবারক পরবর্তী মুসলিম ব্রাদারহুডের ফ্রিডম ও জাস্টিস পার্টি সরকারের সঙ্গে ভারত তার সম্পর্কের নতুন মূল্যায়নের সুযোগ পাবে মুরসির এই সফরে৷ আফ্রিকা মহাদেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে মিশরকে সহযোগী দেশ হিসেবে পাওয়া ভারতের দরকার নানা কারণে৷ পাশাপাশি, মিশরীয় বিপ্লবী সরকার উদীয়মান শক্তি হিসেবে ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পরিধি বাড়াতে আগ্রহী হবে৷
ভারতের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে মিশরের প্রেসিডেন্টের আলোচনায় উঠে আসবে সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়ায় ভারতের অবস্থান ও সন্ত্রাস মোকাবিলা প্রসঙ্গ৷ গণঅসন্তোষের কারণে মিশরের আর্থিক সঙ্কট মোচনে ভারতের ভূমিকা কী হতে পারে, তা জানতেও সমান আগ্রহী হবেন প্রেসিডেন্ট মুরসি৷
আলোচনার শীর্ষে থাকবে অর্থনৈতিক সহযোগিতা৷ জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের দুটি অগ্রণী দেশের মধ্যে ব্যবসা বাণিজ্যে বর্তমানে মিশরের পাল্লা ভারি৷ মিশর রপ্তানি করে ভারতে ২৩০ কোটি ডলারের পণ্য আর ভারত থেকে আমদানি করে ২০০ কোটি ডলারের মত৷ ভারত মূলত রপ্তানি করে গম ও অন্য কৃষিজাত পণ্য, ওষুধপত্র, তথ্য প্রযুক্তি ও পরিষেবা৷ মিশরে টাটা, বিড়লা, কির্লোস্কারের মত ভারতীয় কোম্পানিগুলিতে কাজ করে প্রায় ৩০ হাজার লোক৷ বিপ্লব পরিস্থিতিতেও কোন ভারতীয় কোম্পানি মিশর ছাড়েনি৷ ভারত মিশরের সপ্তম বৃহত্তম বাণিজ্যিক সহযোগী দেশ৷
প্রেসিডেন্ট মুরসি বহু কোটি ডলারের আল-নাহাদা অর্থাৎ পুর্নজাগরণ প্রকল্পে ভারতের যোগদানের প্রস্তাব দিতে পারেন৷ এই প্রকল্প মিশর ও সুয়েজ এলাকার শিল্প ও নগরায়ণের চালচিত্রটাই বদলে দিতে পারে বলে বলা হয়েছে৷ এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারতের বিশেষজ্ঞ সহযোগিতায় আগ্রহী হতে পারে মিশর৷
শুধু তাই নয়, ভারতের সামাজিক বিবিধতা, সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থাপনা, ভর্তুকির পরিবর্তে নগদ ক্যাশ টাকা ট্রান্সফার স্কীম, মাইক্রে-ক্রেডিট ইত্যাদির অভিজ্ঞতার বিষয়ে খোঁজখবর করতে পারে৷
উল্লেখ্য, মিশরের পরিস্থিতি এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক না হওয়ায় ভারত চিন্তিত৷ যে বিপ্লবের মধ্য দিয়ে মিশরে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এখন সেই সরকারের বিরুদ্ধেই উঠছে স্বৈরাচারির অভিযোগ৷