মিশরে পাওয়া গেল সোনার জিভ লাগানো মমি। দুই হাজার বছরের পুরনো। ক্লিওপেট্রার মমির খোঁজ করতে গিয়ে পাওয়া গেল এই মমি।
বিজ্ঞাপন
উত্তর মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় খনন করছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। সেখানেই সমাধিতে পাওয়া গেল মমি। সোনার জিভ লাগানো। মিশরের মানুষের বিশ্বাস অনুসারে, মৃত্যুর পরের জীবনে কথা বলার জন্য এই সোনার জিভ লাগানো হতো।
মিশরের পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয়ের তরফে বলা হয়েছে, মোট ১৬টি সমাধিতে পাথর কেটে ঢোকা হয়েছিল। গ্রিস ও রোম যখন মিশর অধিকার করে রেখেছিল, সেই সময় এই ধরনের মমি রাখা হতো।
গ্রিসের সম্রাট আলেকজান্ডার ৩৩২ বিসি-তে মিশর অধিকার করেন। তাঁর মৃত্যুর পর টলেমি বংশের অধিকারে থাকে মিশর। ৩০ বিসি-তে রোমানরা তাঁদের হারিয়ে মিশর অধিকার করে নেয়। রোমানরা এরপর দীর্ঘদিন মিশর শাসন করে।
সোনার জিভ
সমাধিতে প্রচুর মমি ছিল। তবে মমিগুলি খুব ভালোভাবে সংরক্ষিত হয়নি। মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, সব মমিতেই সোনার জিভ ছিল। মিশরে মৃত্যুর দেবতা ওসিরিসের সঙ্গে যাতে কথা বলা যায়, তার জন্য সোনার জিভ পরিয়ে রাখা হতো মমির মুখে।
মিশরের শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার
মিশরের লুক্সরে সম্প্রতি একসাথে ৩০টি মমি আবিস্কার হয়েছে৷ কারুকাজ করা কাঠের কফিনে সংরক্ষিত মমিগুলো ৩০০০ বছরের পুরনো৷ শিগগিরই সেগুলো পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দিবে মিশরের সরকার৷
ছবি: Reuters/M. Abd El Ghany
মাটির নিচে বর্ণিল বাক্স
মিশরের প্রাচীন নগরী লুক্সরের একটি কবর খুঁড়ে এসব কফিনের সন্ধান মিলেছে৷ তারই একটি খুলে দেখছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা৷ এই ঘটনাকে ১৮০০ সালের পরে মানব কফিনের সবচেয়ে বড় আবিষ্কারের ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/M. Abd El Ghany
হাজার বছর ধরে
মোট ৩০টি কফিনের সন্ধান মিলেছে৷ ধর্মগুরু বা যাজক, তাদের পরিবার ও শিশুদের দেহ সেগুলোতে মমি করে রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০ শতকে তাদের সমাধিস্থ করা হয়৷ ২২ তম ফারাওয়ের রাজত্ব চলছিল তখন৷
ছবি: Reuters/M. Abd El Ghany
পর্যটনে গতি ফিরবে?
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মিশর তাদের প্রাচীন সভ্যতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে৷ ২০১১ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মুবারকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ আর ২০১৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের ঘটনায় ভাটা পড়েছে দেশটির পর্যটন শিল্প৷ এসব আবিষ্কার খাতটিকে আবারও চাঙ্গা করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/K. Desouki
রহস্যের সন্ধানে
কফিনগুলোর ভেতর আর বাহির দুই অংশেই রয়েছে নিপুণ কারুকাজ৷ সেগুলোর অবিকল রং কিংবা স্পষ্ট লিখন এখনও কীভাবে অক্ষত রয়েছে তা নিয়ে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: Reuters/M. Abd El Ghany
শতাব্দি সেরা আবিস্কার
দক্ষিণের শহর লুক্সর মিশরের ইতিহাস আর প্রত্নতত্ত্ববিদদের কাছে গুপ্তধনের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত৷ তাই বলে আল-আসাইফের দুই স্তর বিশিষ্ট কবরে এত বড় আবিস্কার সবার কাছেই ছিল অপ্রত্যাশিত৷ সবশেষ ১৮৯১ সালে একসাথে এমন অনেকগুলো কফিনের সন্ধান মিলেছিল৷
ছবি: Reuters/M. Abd El Ghany
দর্শনার্থীদের জন্য
কফিনগুলোকে ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ তারপর সেগুলোকে পাঠানো হবে গিজাতে অবস্থিত গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান জাদুঘরে৷ ২০২০ সালে সেগুলো দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে৷
ছবি: AFP/Getty Images
6 ছবি1 | 6
এই মিশনের প্রধান ক্যাথলিন মার্টিনেজ জানিয়েছেন, তাঁদের মনে হয়েছে, দুইটি মমি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি মমিতে ওসিরিসের প্রতিমূর্তি আছে। অন্যটিতে সিং সহ রাজমুকুট রয়েছে, তার সঙ্গে একটি কোবরাও আছে। সেখানে একটি পেনডেন্ট সহ নেকলেসও রয়েছে। তাঁরা একটি নারীর মুখোশও পেয়েছেন। সেই সঙ্গে আটটি মার্বেলের মুখোশও পাওয়া গেছে।
ক্লিওপেট্রার খোঁজে
আলেকজান্দ্রিয়ায় এই মিশনের উদ্দেশ্য ছিল ক্লিওপেট্রার সমাধি খুঁজে বের করা। এই অভিযানের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা যাবতীয় তথ্য জোগাড় করে ওই এলাকায় খনন করেছিলেন। তবে তাঁরা এখনো ক্লিওপেট্রার সমাধির হদিশ পাননি। খোঁজ চলবে।