মিসর
২ ডিসেম্বর ২০১২সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুরসি এক বিশেষ আদেশে বিচার বিভাগের ক্ষমতা সীমিত করে ফেলেছেন৷ সেই আদেশ অনুসারে, প্রেসিডেন্টের কোন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আদালত কোন আপত্তি তুলতে পারবে না৷ এই আদেশ জারির প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট মুরসির বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও আন্দোলন শুরু করে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, উদারপন্থী ও খ্রিস্টীয় আদর্শের দলগুলো৷ তবে সেই আন্দোলনের মোড় ঘুরে যায় প্রেসিডেন্ট মুরসি এবং তাঁর ইসলামপন্থী সাংসদদের তড়িঘড়ি করে তৈরি করা সংবিধানের খসড়ার দিকে৷ এখন বিরোধীদের আন্দোলনে যোগ হয়েছে এই খসড়া সংবিধানের সমালোচনা এবং এটি বাতিলের দাবি৷
কিন্তু সেদিকে যেন আদৌ ভ্রুক্ষেপ করছেন না মুরসি কিংবা তাঁর সমর্থনপুষ্ট সংসদ৷ শনিবার ১০০ সদস্যের সংবিধান প্রণয়ন পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধানের খসড়া তুলে দিয়েছেন মুরসির হাতে৷ এরপরই প্রেসিডেন্ট মুরসি ঘোষণা দিয়েছেন আগামী ১৫ই ডিসেম্বর এই খসড়া সংবিধানের উপর গণভোট আয়োজনের৷
তবে দেশটির সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালত এই খসড়া সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ধারা-উপধারা এবং এটির প্রণয়নকারী পরিষদের বৈধতা নিয়ে রবিবার শুনানির দিন ধার্য্য করেন৷ কিন্তু ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতা-কর্মীরা এই সর্বোচ্চ আদালতের শুনানি বানচাল করতে শনিবার রাত থেকেই মোটা কম্বল ও পোস্টার-ব্যানার নিয়ে নীল নদ থেকে আদালতে যাওয়ার পথে অবস্থান গ্রহণ করে৷ এছাড়া রবিবার ভোর হতে না হতেই তাদের সাথে যোগ দিয়েছে আরো হাজার হাজার সমর্থক৷ ৩৯ বছর বয়সি ইসলামপন্থী বিক্ষোভকারী ইসমাইল আহমেদ বলেন, ‘‘হাতে গোনা কয়েকজন বিচারকের চেয়ে জনগণের দাবি অনেক বেশি শক্তিশালী৷''
এদিকে, ইসলামপন্থীদের বাধার মুখে আদালতে হাজির হয়ে শুনানি করতে না পারার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য কার্যক্রম স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সাংবিধানিক আদালতের বিচারকরা৷ মিশরের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা মেনা জানিয়েছে, সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতের এক বিবৃতিতে এর কার্যক্রম অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য মুলতবি রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘‘বিচারকদের উপর এমন মানসিক আঘাত করার ঘটনায় আদালত অত্যন্ত মর্মাহত৷ তাই এমন মানসিক এবং বস্তুগত চাপ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আদালতের বিচারকরা তাঁদের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷''
এএইচ / আরআই (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)