1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশরে বিরোধীদের উপর হামলা বাড়ছে

মাটিয়াস সাইলার/এসবি২৪ এপ্রিল ২০১৩

মুবারকের পতনের পর মিশরে গণতন্ত্র এসেছে ঠিকই, কিন্তু ক্ষমতাসীন মুসলিম ব্রাদারহুড একের পর এক নতুন আইন অনুমোদন করে গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷

ছবি: Getty Images

সহিষ্ণুতার অভাব

মিশরের সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা করলে তার পরিণাম কঠিন হতে পারে৷ এই মুহূর্তে এমন ঝুঁকি নিতে চাইছে না অনেকেই৷ প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসির বিরুদ্ধে একটি বেফাঁস মন্তব্যের জের ধরেই পুলিশের রোষের মুখে পড়তে হতে পারে৷ মিশরের মানবাধিকার সংগঠন ইওএইচআর-এর সূত্র অনুযায়ী মুরসি ক্ষমতায় আসার পর সংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে প্রায় ৬০০ অভিযোগ জমা পড়েছে৷ সরকারের কোনো সমালোচনা করলেই মুসলিম ব্রাদারহুড ও তাদের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, যে জনগণকে হিংসায় প্ররোচনা দেওয়া হচ্ছে৷

মিশরে সংবাদ মাধ্যমের অধিকারের জন্য লড়াই করছে ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর ফ্রিডম অফ থট অ্যান্ড এক্সপ্রেশন' নামের সংস্থা৷ তাদের প্রতিনিধি নিহাদ আবুদ বললেন, ‘‘রাষ্ট্র যদি প্রতিদিন সবাইকে বলে চলে, যে মিডিয়াই হিংসার ডাক দিচ্ছে, তাহলে মুরসির ভোটাররা সেটা বিশ্বাস করে বৈকি৷'' তাই টেলিভিশনে কোনো অনুষ্ঠানের পরেই প্রায়ই দেখা যায়, যে সরকারের তাঁবেদাররা সঞ্চালক বা অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে৷

মিশরে সরকার-বিরোধীদের উপর হামলা বাড়ছেছবি: Mohammed Abed/AFP/Getty images

সাংবাদিকদের ঝুঁকি

বিক্ষোভ সমাবেশ বা সরকার-বিরোধী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটলে সাংবাদিকদের বিপদ বেড়েই চলেছে৷ প্রশাসনের প্ররোচনায় অনেক সময় সাধারণ মানুষও সাংবাদিকদের উপর চড়াও হয় বা তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়৷ গত কয়েক মাসে এমন কিছু হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে৷ সাংবাদিক নিগ্রহ, তাদের মারধর বা গুলি চালানোর প্রায় ২০টি ঘটনার কথা জানেন নিহাদ আবুদ৷

মিশরে সরকার-বিরোধীদের উপরেও নৃশংস হামলার ঘটনা বাড়ছে৷ ‘আহরাম অনলাইন' সংবাদ পোর্টালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রাদারহুডের সদর দপ্তরের সামনে সংঘর্ষের জের ধরে মুসলিম ব্রাদারহুডের সুপরিচিত আইনজীবী আব্দেল মোনেম আব্দেল মাকসুদ নিজে ১৬৯ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন৷ বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের হামলা শিকার হতে হচ্ছে৷ তাদের উপর বিশেষ ধরনের শারীরিক নিগ্রহ ঘটছে৷ যেমন ফেসবুকে সরকার-বিরোধী তৎপরতা চালান মহম্মদ এল-গিন্দি৷ আচমকা তিনি নিখোঁজ হয়ে যান৷ অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাঁকে এক হাসপাতালে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়৷ কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি৷ পুলিশ জানায়, গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল৷ তারপর জানানো হয়, তিনি মারা গেছেন৷

ব্রাদারহুডের গুণ্ডামি

অশান্তি এড়াতে কর্তৃপক্ষ গোটা ঘটনাটিকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিল, এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে৷ ব্রাদারহুডের এক প্রাক্তন সমর্থক নিউজউইক পত্রিকার কাছে দাবি করেছেন, তিনি কায়রোর বাইরে এক পুলিশ ক্যাম্পে এল-গিন্দিকে চরম আহত অবস্থায় দেখেছিলেন৷ প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, সেই ক্যাম্পে ব্রাদারহুডের সদস্যরা ‘অপরাধী'দের জেরা ও মারধর করে থাকে৷

মিশরের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুরসিছবি: Getty Images

এমন ঘটনা বিরল নয়৷ ২০১২ সালের ৫ই ডিসেম্বর প্রেসিডেন্টের প্রাসাদের সামনে সরকার-বিরোধী বিক্ষোভকারীদের উপর চড়াও হয়েছিল ব্রাদারহুডের সমর্থকরা৷ তখন থেকেই দমন-পীড়নের শুরু৷ ব্রাদারহুডের অনেক তরুণ কর্মী বিরোধীদের গ্রেপ্তার করে৷ তারপর প্রাসাদের ভিতরে প্রাচীরের আড়ালে তাদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তারেক জাগলুল আসরান৷ এমনকি প্রায়ই সরাসরি কায়রোর মিডিয়া প্রোডাকশন সিটি'র দরজা আটকে দাঁড়িয়ে থাকে ব্রাদারহুড কর্মীরা৷

‘সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা'

তারেক জাগলুল আসরানের মতে, এ সব কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এর মধ্যে স্পষ্ট পরিকল্পনার ছাপ রয়েছে৷ কারণ ব্রাদারহুড অস্থায়ী সংসদে বসে এমন সব আইন অনুমোদন করে চলেছে, যার উদ্দেশ্যই হচ্ছে দমন নীতিকে আরও জোরদার করা৷ ফলে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ থেকে শুরু করে অন্যান্য অনেক অধিকার খর্ব করে বিরোধী ও সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে৷ আসরান মনে করেন, নতুন নির্বাচনের আগেই তড়িঘড়ি করে এই সব কাজ শেষ করতে চাইছে ব্রাদারহুড৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ