1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিষ্টি কি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে?

সমীর কুমার দে ঢাকা
৮ মে ২০১৮

দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে মিষ্টির বিখ্যাত ব্র্যান্ড বাগাট রাজকুমার মিষ্টান্ন ভান্ডারের সত্ত্বাধিকারী রাজকুমার ঘোষ বলেন, সব মিষ্টিই স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না৷ যেসব মিষ্টিতে চিনির ব্যবহার বেশি, সেগুলো ক্ষতি করে৷

ছবি: Privat

ডয়চে ভেলে : আপনারা কী কী দিয়ে মিষ্টি তৈরি করেন?

রাজকুমার ঘোষ: মিষ্টির উপাদানের বড় অংশটাই হলো দুধ৷ গরুর দুধ আর চিনি৷ এটা দিয়েই মূলত মিষ্টি তৈরি হয়৷ এর বাইরে সামান্য একটু ময়দা ব্যবহার করা হয়৷

মিষ্টির স্বাদ বাড়াতে কি এর বাইরে কিছু ব্যবহার করা হয়?

মিষ্টি তৈরির সময় যদি চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়া হয় আর ছানার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়, তাহলে মিষ্টির স্বাদ বেড়ে যায়৷ এছাড়া যেসব মিষ্টি শুধু চিনির শিরা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে বা চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, সেসব মিষ্টির কোয়ালিটি একটু কম থাকে৷ দুধ দিয়ে শুধু ছানা তৈরি করা হয় না, বিভিন্ন ধরনের ক্ষিরসা তৈরি করা হয়৷ এই ক্ষিরসা আর ছানার সংমিশ্রণে সুস্বাদু মিষ্টি তৈরি করা হয়৷ 

Sweet Maker Rajkumar for dwAlaap - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

মিষ্টির কারিগরদের কি কোনো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়?

আমরা তো আসলে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে মিষ্টি সংগ্রহ করে থাকি৷ ওইসব জায়গা থেকে আমরা কারিগরদের নিয়ে আসি৷ তাঁদের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করি, কীভাবে তাঁরা মিষ্টিগুলো বানিয়েছেন৷ আমাদের কারিগররা তাঁদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন৷ আসলে ভালো মিষ্টি তৈরির জন্য প্রশিক্ষণ অবশ্যই প্রয়োজন৷

মিষ্টিতে স্বাস্থ্যের ঝুঁকি আছে এমন উপাদান ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ আছে৷ আপনি কী বলেন?

শুধু মিষ্টি না, চিনিযুক্ত খাবার সবার জন্যই ক্ষতিকর৷ এতে ডায়াবেটিস বেড়ে যায়৷ শরীরের ওজন বেড়ে যায়৷ এর কিন্তু উপকারিতাও আছে৷ আসলে মিষ্টির মূল উপাদান ছানা৷ এই ছানা হয় গরুর দুধ থেকে৷ আমরা ছানা তৈরির জন্য দুধ সংগ্রহ করি একেবারেই গ্রামের কৃষকের কাছ থেকে৷ কৃষকরা সেখান থেকে দুধ সংগ্রহ করে আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়৷ আমাদের মিষ্টি তৈরির যে ফর্মুলা, সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না৷ যাঁরা অনৈতিকভাবে ব্যবসা করেন, তাঁরা কী কারণে করেন, আমি জানি না৷

চিকিৎসকরা বলছেন, শুধু দুধ দিয়ে মিষ্টি তৈরি করলে একদিনের বেশি ভালো থাকার কথা নয়৷ কিন্তু আপনাদের তৈরি মিষ্টি কয়েকদিন থাকলেও তো নষ্ট হচ্ছে না...

আমরা যেসব মিষ্টি তৈরি করি এর মধ্যে অনেক মিষ্টি আছে যা একদিন নয়, ৬ ঘণ্টাও বাইরে রাখলে নষ্ট হয়ে যায়৷ কারণ, যেসব মিষ্টিতে মিষ্টির পরিমাণ বা চিনি একদমই কম সেগুলো বেশি সময় রাখা যায় না৷ আর যেসব মিষ্টিতে চিনির পরিমাণ বেশি সেগুলো বেশি সময় রাখলেও নষ্ট হবে না৷ আমরা ওই মিষ্টিগুলো বিক্রির সময় ক্রেতাদের বলে দেই যে, ওই মিষ্টিটা এসি গাড়িতে নিয়ে যেতে হবে বা দ্রুত বাসায় নিয়ে ফ্রিজে রাখতে হবে৷ তা না হলে ৬ ঘণ্টা পরই নষ্ট হয়ে যাবে৷   

মিষ্টি তৈরিতে কি তাহলে কোনো রাসায়নিকের প্রয়োজন হয় না?

কোনো রাসায়নিকের প্রয়োজন হয় না৷ তবে যদি কোনো মিষ্টি আপনি একমাস রাখতে চান, তাহলে কিছু রাসায়নিকের ব্যবহার করতে হবে৷ সেটা অবশ্যই স্বাস্থ্যকর৷ ভারতের হলদিরাম বিখ্যাত মিষ্টি তৈরি করছে৷ তারা সারা পৃথিবীতেই মিষ্টি সরবরাহ করে৷ তারা ওই ধরনের কিছু কেমিকেল হয়ত ব্যবহার করে থাকে৷ তা না হলে এত দূর-দূরান্তে মিষ্টি পাঠানো সম্ভব হতো না৷

মিষ্টিতে  কিফরমালিনের ব্যবহার হয়?

আমি কখনও শুনিনি৷ ফরমালিন নিয়ে তো আমরা বিশাল স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি৷ আমাদের ফলমূলে ফরমালিন ব্যবহার হয়৷ দুধে এটার ব্যবহার আমার জানা মতে হয় না৷

দেশে কত প্রকারের মিষ্টি আছে? এ বিষয়ে কিছু জানেন?

সারাদেশে ৪০ থেকে ৫০ ধরনের মিষ্টি তৈরি হয়ে থাকে৷

বছরের কোন সময়ে মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়?

বিশেষ করে উৎসবের সময় মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়৷ ঈদের সময়, পহেলা বৈশাখের সময় বা পূজা-পার্বণের সময়ও মিষ্টি বেশি বিক্রি হয়৷ আবার বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান হলে তখনও মিষ্টি বেশি কেনে মানুষ৷ সব মিলিয়ে কোনো উৎসব ঘিরে মিষ্টি বিক্রি বেশি হয়৷ সবচেয়ে বেশি হয় ঈদ আর পহেলা বৈশাখে৷

মিষ্টি  তৈরিতে নারীদের অংশগ্রহণ কেমন?

দেখেন মিষ্টি যাঁরা তৈরি করেন, তাঁদের বলা হয় ময়রা৷ আগে হিন্দু ময়রারাই সব মিষ্টি তৈরি করতেন৷ এখন অনেক ব্যবসায়ী এর মধ্যে ঢুকে পড়েছেন৷ ময়রাদের আগে মিষ্টির দোকান ছিল৷ সেখানে পরিবারের নারীদের সঙ্গে নিয়েই তাঁরা মিষ্টি তৈরি করতেন৷ এখন বাণিজ্যিকভাবে যে মিষ্টি তৈরি হচ্ছে, সেখানে নারীদের অংশগ্রহণ তেমন নেই৷ তবে আমার ইচ্ছে আছে নারীদের এই কাজে নিয়ে আসার৷ তাঁদের একটা কর্মসংস্থানও তাতে হবে৷ 

মিষ্টি বিক্রি আগের তুলনায় বেড়েছে, না কমেছে?

মিষ্টি বিক্রি আগের তুলনায় বেড়েছে, আবার কমেছেও৷ দেশে মানুষ তো বাড়ছে৷ ফলে বিক্রি সেভাবে কমছে না৷ আগে মানুষের এত রোগ ছিল না৷ ফলে তারা মিষ্টি খেতো৷ এখন রোগ-ব্যাধি বেড়েছে৷ ফলে তাঁরা মিষ্টি কম খাচ্ছেন৷ আবার দেশে মানুষ বাড়ায় মিষ্টির চাহিদাও বাড়ছে৷ এখন দেখেন কোনো বাড়িতে বিয়ে হচ্ছে বা কোনো উৎসব হচ্ছে, তখন তাঁরা কিন্তু মিষ্টি সিলেক্ট করে৷ কেউ খাক আর না খাক৷ বাংলাদেশে মিষ্টির এখনো একটা অবস্থান আছে৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ