রাখাইনে বিদ্রোহী হামলায় নিহত ৩
১২ এপ্রিল ২০১৯মিয়ানমারের সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল নিউ লাইট'-এর বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, পশ্চিম রাখাইনের ম্রক-ইউ শহরের পুলিশ সদর দপ্তরে মঙ্গলবার রাতে হামলা চালায় প্রায় ২০০ বিদ্রোহী৷ তারা ‘রাখাইন' নৃতাত্বিক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সদস্য৷
সামরিক অভিযানে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়ার পর গত এক বছর ধরে নিষ্ক্রিয় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা৷
সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন সংখ্যালঘুরা সেখানে বেশ কিছু বড় হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে৷
এই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ‘আরাকান আর্মি' দীর্ঘদিন ধরে রাখাইন অঞ্চলে স্বায়ত্তশাসনের দাবি করে আসছে, যাঁরা রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের তুলনায় বেশি সশস্ত্র ও সংগঠিত৷
গত ৪ জানুয়ারি এক হামলায় ১৩ জন পুলিশ সদস্য নিহত এবং নয়জন আহত হওয়ার পর আরাকান আর্মিকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসাবে ঘোষণা করে সরকার৷
বৃহস্পতিবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, পুলিশ ঘাঁটিতে হামলার পর চার নারী ও তিন শিশুকে অপহরণ করা হয়েছে৷ সেখানে দুইজন পুলিশ সদস্য এবং তাদের একজনের স্ত্রী নিহত হয়েছেন৷ পাশাপাশি সাত পুলিশ সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন৷
হামলার পর পুলিশের সহায়তায় ম্রক-ইউ এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়৷ একটি গ্রামে অভিযান চালিয়ে আরাকান আর্মির সদস্য সন্দেহে ২৩ জনকে আটকের কথা জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর তথ্য কর্মকর্তা৷
এদিকে হামলার পর সাতজন অপহরণের কথা মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় জানালেও তা অস্বীকার করেছে আরাকান আর্মি৷ ‘‘পুলিশের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মি পারিবারিক ডরমেটোরিতে হামলা করেছে এবং অপহরণ করেছে স্ত্রী-সন্তানদের, যাঁরা কোনোভাবে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন,'' বলা হয় তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে৷
এর বিপরীতে আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা বলছেন, তারা কেবল পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছেন৷ কোনো সাধারণ মানুষকে হত্যা কিংবা অপহরণ করেননি৷ আর সেখানে কোনো ডরমেটোরিও ছিল না৷
‘‘ওই এলাকায় প্রচুর অস্ত্রের মজুদ ছিল৷ ক্যাম্পের ভেতর থেকে গুলি চালানো হয়েছিল, এ কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷ আর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অনেকেও নিহত হয়েছেন,'' থু খাকে এভাবে উদ্ধৃত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স৷
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির গেরিলাদের মধ্যে সংঘাতের কারণে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ৷
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, তাদের কাছে ‘‘সাধারণ মানুষকে হত্যা, বাড়িঘর পোড়ানো, গণহারে গ্রেপ্তার ও গ্রামে গ্রামে অতর্কিত হামলার তথ্য রয়েছে৷''
এমবি/জেডএইচ (এপি, রয়টার্স)