1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিয়ানমারে অভ্যুত্থান, বাংলাদেশে শঙ্কা ও আশা

১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান কি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো প্রভাব ফেলবে? বাংলাদেশ তেমনটি আশা না করলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে যেতে পারে।

বাংলাদেশে অবস্থান করছে দশলাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী (ফাইল ফটো)ছবি: Reuters/R. Rahman

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে বাংলাদেশ আশা করছে এই কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে এ নিয়ে একটি বিবৃতি দেয়া হবে। 

Imtiaz Ahmed.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির নেত্রী অং সান সু চি, দেশটির প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ শাসক দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে সে দেশের সেনাবাহিনী আটক করে ক্ষমতা দখল করে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং হ্লেইংয়ের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। 

বাংলাদেশের জন্য এই পরিস্থিতিতে সবচয়ে বড় শঙ্কার বিষয় হলো রোহিঙ্গাদেও ফেরত পাঠানোর ইস্যুটি। ২০১৮ সালে চুক্তি সই হলেও এখনো মিয়ানমার একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি। এখন নতুন এই পরিস্থিতিতে কী হবে?

সাবেক রাষ্ট্রদূত এবং মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক এটাশে মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক বলেন, ‘‘আমার বিবেচনায় আগামী এক বছরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন পিছিয়ে গেল।  কারণ, সামরিক বাহিনীর যারা ক্ষমতায় এসেছেন, তারা এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। তারা সব এক্জিকিউটিভ, লেজিসলেটিভ এবং জুডিশিয়ারি এখন তাদের ক্ষমতায় ন্যাস্ত। আগের সিদ্ধান্ত তো ছিল অং সান সুচির, এখন তো সামরিক বাহিনী এসেছে। এখন তারা সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে এক বছরের আগে কোনো কাজ করবে বলে আমার মনে হয় না। ” 

তার কথা, ‘‘মিয়ানমারে সামরিক সরকার যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছে তা আগে পুরণ করবে। সেই টার্গেটে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া আছে বলে আমরা মনে হয় না।''

তার মতে, তিনটি কারণকে সামনে রেখে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। মিন অং হ্লেইংয়ের আগামী জুনে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল। দ্বিতীয়ত, গত  নির্বাচনে সেনা সামর্থিত দল ইউএসডিপির ভরাডুবি হয়েছে। তিনি বলেছেন নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। আর তৃতীয়ত, বাইডেন প্রশাসন দায়িত্ব নেয়ার পর মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা গণহত্যার শিকার হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখার কথা বলেছে, যা মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বড় ধরনের বিপদে ফেলতে পারে। তাই হয়ত ক্ষমতা নিয়ে সেনাবাহিনী তাদের প্রটেকশনে নিয়ে নিলো।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ মনে করেন, মিয়ানমারে সামরিক শাসনের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কারণ, এটা কোনো ব্যক্তির সাথে চুক্তি নয়, এটা রাষ্ট্রের সাথে রাষ্ট্রের চুক্তি। রাষ্ট্র ক্ষমতায় যারাই থাকুকনা কেন তারা চুক্তি বাস্তবায়নে বাধ্য। 

Sahidul Haq.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন ,‘‘ মিয়ানমার তো অধিকাংশ সময় ধরে সামরিক শাসনেই আছে। অতীতে মিয়ানমারের সামরিক শাসকরা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়েছে। বরং অং সান সুচির সময়ই কোনো রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়া হয়নি। তিনি বলেন, "৭০ এবং ৯০-এর দশকে বড় আকারের যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হয়েছে তখন কিন্তু সামরিক বাহিনী ক্ষমতায় ছিল। বরং এবার গণতন্ত্রের কথা বলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, ভারত এরা কেউ কিন্তু চাপ প্রয়োগ করেনি। তারা বলেছে, গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।”

মিয়ানমারের ব্যাপারে ইউরোপ, অ্যামেরিকার পলিসি ভুল প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই অধ্যাপক। তার মতে এখন তাদের সেখানে প্রচলিত ধারায় গণতন্ত্র উদ্ধারের প্রক্রিয়ায় কাজ হবে না। বাণিজ্যিকসহ আরো নানা ধরনের অবরোধ দিতে হবে।

তার মতে, ‘‘বাইডেন প্রশাসন বা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন যদি মিয়ানমারের ওপর চাপ দেয়, তাতেও লাভ আছে। তারা হয়ত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইবে। আর বাংলাদেশের অবস্থানের প্রশ্ন আসবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে । বাংলাদেশ তো সেখানেই জোর দেবে। সেখানে কে ক্ষমতায় থাকলো, বাংলাদেশের জন্য সেটা বড় ইস্যু নয়।''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ