মিয়ানমারের রাজনীতি
২১ মার্চ ২০১২![In this photo taken Tuesday, Feb.7, 2012, Myanmar pro-democracy icon Aung San Suu Kyi greets supporters as she arrives at Myaung-Mya, the Irrawaddy Delta, Myanmar. Crowds of supporters greeted Myanmar opposition leader Aung San Suu Kyi with thunderous applause as she embarked Tuesday on her first campaign trip since becoming an official candidate for April elections. (AP Photo/Khin Maung Win)](https://static.dw.com/image/15737107_800.webp)
১লা এপ্রিলের উপনির্বাচনের প্রচারের সময় সু চি নিজের পিতার উল্লেখ করেছেন৷ পূবের শান প্রদেশে এক জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘আমি এক আর্মি পরিবারে জন্মেছি৷ আমি জেনারেল অং সান'এর কন্যা, যিনি মিয়ানমারের স্বাধীনতার জনক ছিলেন৷''
এই যোগসূত্র শুধু কথায় নয়, ফুটে উঠছে গোটা প্রচারাভিযান জুড়ে৷ বড় বিলবোর্ড, স্টিকার, টি-শার্ট – সর্বত্রই সু চি'র ছবির পাশে রয়েছেন জেনারেল অং সান৷ ইয়াঙ্গনের দক্ষিণে কমু শহরে তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের দলীয় কার্যালয়েও পিতা ও কন্যার ছবির ছড়াছড়ি৷
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের বিরুদ্ধে বর্মার স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ছিলেন জেনারেল অং সান৷ ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার ৬ মাস পর দেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল তাঁর৷ কিন্তু তার আগেই ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে মাত্র ৩২ বছর বয়সে অং সান'কে হত্যা করে তাঁরই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা৷ সেই ঘটনার প্রায় ৬৪ বছর পরেও প্রয়াত জেনারেল'কে মানুষ শ্রদ্ধার আসনে বসিয়ে রেখেছেন৷
কন্যা অং সান সু চি'র জনপ্রিয়তা তো রয়েছেই৷ সম্মানসূচক সম্বোধন হিসেবে তাঁকে ‘দ' সু চি নামে ডাকা হয়৷ কিন্তু ১৯৮৮ সালে দেশে ফেরার পর অনেকেই তাঁকে সরাসরি চিনতেন না৷ অসুস্থ মা'কে দেখতে এসে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে আন্দোলনের নেত্রী হয়ে ওঠেন তিনি৷ বিরোধী নেত্রী হিসেবে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার সময়ও সু চি নিজের পিতাকেই আদর্শ হিসেবে মেনে নিয়েছিলেন৷ বলেছিলেন, ‘‘আমার পিতার কন্যা হিসেবে চারপাশের ঘটনা সম্পর্কে উদাসীন থাকা আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷ এই জাতীয় সংকটকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা যেতে পারে৷''
সামরিক সরকারের জেনারেলরা এই অবস্থায় বেশ দ্বিধার মুখে পড়েছিল৷ তখন তারা জেনারেল অং সান ও তাঁর কন্যাকে জনমানস থেকে মুছে দেবার উদ্যোগ শুরু করে৷ এমনকি ব্যাংক নোট থেকেও দূর করে দেওয়া হয় জেনারেল অং সান'এর প্রতিকৃতি৷ সু চি'কে গৃহবন্দি করে রাখা হয়৷
কিন্তু সরকারের এই উদ্যোগে ঠিক বিপরীত ফল হয়েছে৷ সু চি'র পরিবার সংক্রান্ত ছবি, বই ও অন্যান্য যে কোনো তথ্যের উৎস নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ পিতা ও কন্যার ছবি সহ অনেক কিছুই সংরক্ষণ করে রেখেছিল৷ ২০১৫ সালে জেনারেল অং সান'এর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ৩ ঘণ্টার এক তথ্যচিত্র তৈরি সহ অনেক পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ