মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সোমবার কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা নিয়ে যাবার সময় গুলিতে একজন স্বাস্থ্যকর্মী আহত ও গাড়ির ড্রাইভার নিহত হয়েছেন৷ জাতিসংঘ এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
জাতিসংঘ বলছে, হামলাটি ‘অ্যামবুশ’ করে চালানো হয়েছে৷ রাখাইনে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সংঘাত দীর্ঘদিনের৷ হামলার জন্য দু'পক্ষই একে অপরকে দুষছে৷
সোমবার সন্ধ্যায় মিনবিয়া শহরের কাছে একটি ব্রিজে হামলার ঘটনা ঘটে৷ জাতিসংঘের একটি বাহনে করে ঐ স্বাস্থ্যকর্মী ও গাড়ির ড্রাইভার কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা নিয়ে যাচ্ছিলেন৷ ২৮ বছর বয়সি নিহত ড্রাইভার পিয়াই সোন উইন মুয়াং র জন্য কাজ করতেন৷
জাতিসংঘ বিবৃতিতে বলেছে, তারা ঘটনার জন্য ‘গভীরভাবে ব্যথিত’৷
করোনা: এসব গুজবে কান দেবেন না
পুরো বিশ্বে নভেল করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর এ নিয়ে গুজবের শেষ নেই৷ বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব সবচেয়ে বেশি৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এমনই কয়েকটি গুজবের জবাব দিয়েছে৷ দেখুন ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
১. ফাইভ-জি মোবাইল নেটওয়ার্কে করোনা ছড়ায়?
রেডিও তরঙ্গ বা মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কোন ভাইরাস ছড়ায় না৷ এমন অনেক দেশেই করোনা’র সংক্রমণ হয়েছে, যাদের ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
২. রোদের তাপ কি করোনা প্রতিরোধ করে?
তাপমাত্রা যত বেশিই হোক না কেনো, যেকোন তাপমাত্রায় আপনি সংক্রমিত হতে পারেন৷ ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা আছে এমন অনেক দেশেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. van den Bergh
৩. একবার সংক্রমণ, সারাজীবনের সংক্রমণ?
করোনা আক্রান্ত যেকোন মানুষ পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেন৷ আপনার লক্ষণ চিনতে হবে এবং সেই বুঝে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে৷ আপনার যদি জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট থাকে তাহলে ডাক্তারকে ফোন দিন৷
ছবি: AFP/B.R. Smith
৪. ১০ সেকেন্ডের নাই ভরসা
অনেকে মনে করেন কোনো ধরনের কষ্ট বা কাশি ছাড়া ১০ সেকেন্ড বা তার বেশি সময় শ্বাস আটকে রাখতে পারলে তার করোনা নেই৷ এই ধারণা ভুল৷ করোনা ভাইরাসের খুব সাধারণ একটি লক্ষণ হল শুকনো কাশি, ক্লান্তি এবং জ্বর৷ কারো কারো ক্ষেত্রে ভয়াবহ ধরনের নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যায়৷ আপনার উচিত এসব লক্ষণ থাকলে আগে পরীক্ষা করা৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Campodonico
৫. মদে মুক্তি?
বেশি বেশি মদ বা অ্যালকোহল খেলে করোনা প্রতিরোধ হয় না বরং তা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J.-P. Muller
৬. তীব্র শীতে করোনা মরে?
এটা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই যে তীব্র শীত বা বরফে করোনা ভাইরাস টিকে থাকতে পারে না৷ কারণ বাইরের তাপমাত্রা যাই হোক না কেনো আপনার শরীরের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস৷
ছবি: picture-alliance/AA/A. Ozdil
৭. হ্যান্ড ড্রায়ার করোনা মারে?
না৷ হাত শুকানোর যে মেশিন, করোনা ভাইরাসের উপর তার কোন প্রভাব নেই৷ আপনার যা করণীয় তা হল: বার বার সবান পানি বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া৷ এরপর টিসু, তোয়ালা বা গরম ড্রায়ার দিয়ে হাত শুকাতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/AP/NIAID-RML
৮. নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন কি করোনায় কার্যকর?
না৷ নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন যেমন: নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন বা হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি ভ্যাকসিন করোনার ক্ষেত্রে কার্যকর নয়৷ এই ভাইরাস একেবারে নতুন এবং ভিন্ন ধরনের, যার জন্য চাই আলাদা ভ্যাকসিন৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় গবেষকরা এ বিষয়ে কাজ করছেন৷
ছবি: Reuters/B. Guan
৯. নাকের ড্রপ কি সংক্রমণ থেকে বাঁচায়?
না৷ এমন কোন তথ্য-প্রমাণ এখনো মেলেনি যে নিয়মিত স্যালাইন পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করলে এই সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়৷
ছবি: Imago Images/Panthermedia/A. Guillem
১০. করোনা প্রতিরোধে বিশেষ কোন ওষুধ?
করোনা প্রতিরোধে এখন পর্যন্ত কোন ওষুধ নেই৷ কেবল লক্ষণ অনুযায়ী এ রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকেরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Geisler-Fotopress
10 ছবি1 | 10
ড্রাইভারের পিতা তায় উইন মুয়াং বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘সে ফোন করতে মানা করেছিল, যেহেতু সে গাড়ি চালাচ্ছিল৷’’ ভগ্ন হৃদয়ে তিনি বলেন, ‘‘এটাই শেষ কথা ছিল৷’’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসুস টুইট করে তাঁর শোক জানান৷ ‘‘বিশ্বকে নিরাপদ রাখতে গিয়ে প্রাণ দিলেন,’’ লিখেছেন তিনি৷
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং এর পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্তের দাবি করেছেন৷
মিয়ানমারের মিলিটারি মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জ মিন টুন এএফপিকে জানান যে, স্বাস্থ্যকর্মী অং মিও উ-কে রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিতওয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
মিলিটারির গুলি করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘তাদের মিলিটারি কেন গুলি করবে? তারা তো দেশের জন্য কাজ করছিলেন৷’’
গত বছরের শুরু থেকে রাখাইনে নতুন করে আরাকান আর্মির সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাত শুরু হয়৷ গত বছর শুরু হওয়া সংঘাতে এ পর্যন্ত দু'পক্ষেরই অসংখ্য নিহত ও আহত হয়েছেন৷ আরাকান আর্মি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রাখাইনদের একটি বিদ্রোহী দল৷ মিয়ানমার সরকার এই দলটিকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে চিহ্নিত করেছেন৷