মিয়ানমারে চারশোরও বেশি রাজবন্দি মুক্তি পেলেন
১৩ জানুয়ারি ২০১২লক্ষ্য - মিয়ানমারের উপর থেকে দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আন্তর্জাতিক সমাজকে রাজি করানো৷
মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে আছেন ১৯৮৮ ও ২০০৭ সালের সরকার বিরোধী গণতন্ত্রকামী ছাত্র আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতাও৷ ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি দলের একজন কর্মকর্তা এই তথ্য দিয়েছেন৷ তাছাড়া প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খিন নিউন্ট্, সংখ্যালঘু শান জাতিগোষ্ঠীর পক্ষে সংগ্রাম চালানো একটি বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা খুন তুন উ এবং ২০০৭ সালের প্রতিবাদ বিক্ষোভের এক নেতা বৌদ্ধ ভিক্ষু গাম্বিরাও ছাড়া পেয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার রাতেই এক সরকারি ঘোষণায় বলা হয়, শুক্রবার ৬৫১ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার৷
শান গোষ্ঠীর আরও পাঁচ নেতাও কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন৷ সদ্যমুক্ত খিন নিউন্ট্ ছিলেন মিয়ানমারের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান৷ কিন্তু এর আগের সামরিক জান্তার প্রধান সিনিয়র জেনারেল থান শোয়ের কুনজরে পড়েন তিনি৷ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁকে এবং তাঁর দপ্তরের বহু কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ গৃহবন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে খিন নিউন্ট্ বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট থেইন সেইন আর অং সান সু চি'র সমঝোতা উদ্যোগ আমি সমর্থন করি৷ সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চলমান আলোচনাকেও আমি স্বাগত জানাই৷''
তবে বৌদ্ধ ভিক্ষু গাম্বিরা নরওয়ে ভিত্তিক নির্বাসিত ডেমোক্র্যাটিক ভয়েস অফ বার্মা বেতারকে বলেছেন, অনেক দীর্ঘ পথ যেতে হবে এখনও৷ ওরা এখন বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে৷ কিন্তু স্বৈরশাহীর বৈশিষ্ট্য এখনও রয়ে গেছে৷ কীধরণের গণতন্ত্র এটা? আমাদের মুক্তি দিতে এতোদিন অপেক্ষা করতে হল ওদের৷''
গাম্বিরার এই বক্তব্যোর সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল৷ অ্যামনেস্টি মনে করে, আরও বেশি পদক্ষেপ নিতে পারে মিয়ানমার৷ সংগঠনের একজন গবেষক - বেঞ্জামিন জাওয়াকি বলেছেন, ‘‘রাজবন্দিদের মুক্তি বড় রকমের এক পদক্ষেপ৷ তবে বাকি সব বিবেকবন্দির জন্যও দরজাটা আরোও বেশি খুরে খুলে দিতে হবে৷
২০১০ সালের নভেম্বর মাসের সাধারণ নির্বাচনে থেন সেইনের সামরিক সমর্থনপুষ্ট ইউনিয়ন সলিডারিটি ও ডেভেলপমেন্ট পার্টি জয়ী হবার পর মার্চ মাসে তিনি ক্ষমতায় আসেন৷ তারপর তেকে তিনি এক সংস্কারমুখী পথ ধরেছেন৷
এদিকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলা সার্কোজি শুক্রবার মিয়ানমারের গণতন্ত্রকামী নেত্রী অং সান সুচিকে টেলিফোন করে জানিয়েছেন, তাঁকে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হবে৷
প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন