1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিয়ানমারে তিন হাজার রোহিঙ্গা নিহত

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে চাপে আছে বাংলাদেশ সরকার৷ বিভিন্ন সংগঠন তাদের নিয়ে সরকারের কূটনৈতিক তৎপরতায় অষন্তোষ প্রকাশ করেছে৷ এই প্রেক্ষাপটে ১২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশমুখী যাত্রা
ছবি: Reuters/D. Siddiqui

ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে রবিবার ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রদূত জর্জ কোচেরি বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন যে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত তিন হাজার রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে৷ বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর জর্জ কোচেরি বলেন, ‘‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের জানিয়েছেন, এই সহিংসতায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হাতে তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গা মারা গেছেন৷ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন৷''

Kabir.mp3 - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

অন্যদিকে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, বাংলাদেশে এখন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা সাত লাখেরও বেশি৷ ২৫ আগস্ট থেকে এখন অবধি রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে তিন লাখ বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি৷ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কক্সবাজার ও সংলগ্ন জেলাগুলোকে কাজ শুরুর নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ তারা রোহিঙ্গাদের নাম, ঠিকানা, ছবি এবং সম্ভব হলে হাতের ছাপ নেবেন৷ আর সব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের এক জায়গা রাখার জন্য কক্সবাজারের মধ্যেই আপাতত দুই হাজার একর জমি খোঁজা হচ্ছে৷''

এদিকে, সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে যে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গাদের খাবার, আশ্রয় নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে সরকার সেদিকে নজর রাখছে৷ বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটর ও নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘রোহিঙ্গা সেল' গঠন করেছে৷

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতসহ আরো অনেক রাজনৈতিক দল রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে সরকারের ওপর চাপ দিচ্ছে৷ তারা দাবি করছে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ‘ব্যর্থ' হয়েছে৷ গণজাগরণ মঞ্চ সোমবার বিকেলে ঢাকায় মিয়ারমার দূতাবাস ঘোরওয়ের ঘোষণা দিয়েছে৷ আর হেফাজতে ইসলাম ঘোরাও করবে ১৯ সেপ্টেম্বর৷ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিদিনই ঢাকায় বিক্ষোভ করছে৷ ধারণা করা হচ্ছে আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকাসহ সারাদেশে বড় আকারের বিক্ষোভ হতে পারে৷

প্রসঙ্গত, ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা শুরু করলে প্রথমে সীমান্ত সিল করা দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু কয়েকদিন পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরনের নির্দেশ দিলে সীমান্ত শিথিল হয় এবং ব্যাপকহারে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসতে শুরু করে৷ আন্তর্জাতিক চাপের মুখেই বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিচ্ছে৷ তবে বাংলাদেশ কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে৷ তারই অংশ হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার পশ্চিমা দেশগুলোর রাষ্টদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷

বাংলাদেশে এখন সব মিলিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্য কমপক্ষে সাত লাখ৷ এরমধ্যে নিবন্ধিত মাত্র ৩০ হাজার৷ কূটনীতিক এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমাযূন কবির ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের এখন প্রধান কাজ তিনটি৷ প্রথমত, নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় এবং খাদ্যের ব্যবস্থা করা৷ দ্বিতীয়ত, শরণার্থী ক্যাম্প এবং সংলগ্ন এলাকার আইন শৃঙ্খলা নিশ্চিত এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তালিকাভুক্ত করা৷ তৃতীয়ত, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা৷''

তিনি বলেন, ‘‘রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি এবং কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে হলে বাংলাদেশকে বড় ধরনের কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে৷ শুধু ঢাকায় বসে হবে না৷ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোতে বিশেষ দূত পাঠাতে হবে৷ ওইসব দেশকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানাতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ