থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে একটি সেনা ঘাঁটি দখল করলো সখ্যালঘু ক্যারেন বিদ্রোহীরা। সংঘর্ষে মৃত বহু।
বিজ্ঞাপন
মিয়ানমারের সঙ্গে থাইল্যান্ডের সীমানার কাছে একটি সেনা ঘাঁটি দখল করলো ক্যারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন(কেএনইউ) বিদ্রোহীরা।
কেএনইউ-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান তাও নি জানিয়েছেন, ''আমাদের বাহিনী সেনা ঘাঁটি দখল করে নিয়েছে।''
মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের সীমানা দিয়ে বয়ে চলা সালউইন নদীর কাছে এই ঘাঁটি ছিল। সেটাই আক্রমণ করে বিদ্রোহীরা। গ্রামবাসীরাও প্রচুর গোলাগুলির শব্দ পেয়েছেন।
তাও নি জানিয়েছেন, কতজন মারা গেছেন, কতজন আহত সেই তথ্য তারা এখন সংগ্রহ করছেন।
কারা এই বিদ্রোহী
ক্যারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি হলো কেএনইউ-র সামরিক বাহিনী। ১৯৪৯ সাল থেকে তারা মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তারা ক্যারেন জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র চায়।
মিয়ানমার: এখনই অভুক্ত ১৩ লাখ, ছয় মাসে বেড়ে হবে ৪০ লাখ
মিয়ানমারে সাধারণ মানুষ খাবার পাচ্ছেন না। জাতিসংঘ জানিয়েছে, এখনই ১৩ লাখ মানুষ অভুক্ত। ছয় মাসে তা বেড়ে হবে প্রায় ৪০ লাখ।
ছবি: YE AUNG THU/AFP
জাতিসংঘের হিসাব
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম মিয়ানমারের ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে। এখনই ১৩ লাখ অভুক্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিতে হচ্ছে। ছয় মাসের মধ্যে অভুক্ত মানুষের সংখ্যাটা ৩০ থেকে ৪০ লাখ হতে পারে বলে তারা জানিয়েছে।
ছবি: imago images/Cavan Images
কেন এই অবস্থা
করোনা, সেনা অভ্যুত্থান ও দারিদ্রের কারণে এই অবস্থা বলে জাতিসংঘের ওই সংস্থা জানিয়েছে। আড়াই লাখ মানুষ গৃহহীন। দেশের প্রধান শহর ইয়াঙ্গনের গরিব মানুষরা কেউ একবেলা খাচ্ছেন, কেউ সারাদিনে খুব সামান্য খাবার জোগাড় করতে পারছেন। করোনা ও অভ্যুত্থানের জেরে প্রচুর মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। ছবিতে ফেলে দেয়া খাবারের খোঁজ চলছে।
ছবি: AFP/Getty Images
মাত্রাছাড়া দাম
জিনিসের দামও মাত্রাছাড়া জায়গায় চলে গেছে। ফলে গরিব মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকাই কষ্টকর হয়ে উঠেছে।
ছবি: dpa/AP/picture alliance
লম্বা লাইন
মিয়ানমারে ব্যাঙ্কের সামনে লম্বা লাইন। সামান্য পুঁজি থেকে কিছুটা তুলে খাবার কেনার রশদ জোগাড় করার অপেক্ষায় মানুষ।
ছবি: AFP/Getty Images
অর্থ চাই
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম জানিয়েছে, মিয়ানমারের অভুক্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার জন্য তাদের আট কোটি ৮০ লাখ ইউরো চাই। তাদের আবেদন, এই মানবিক সংকট থেকে মিয়ানমারকে বাঁচাতে গোটা বিশ্ব এগিয়ে আসুক।
ছবি: YE AUNG THU/AFP
সেনা শাসনের প্রতিবাদ
গত ফেব্রুয়ারি থেকে সেনা শাসনের প্রতিবাদে মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন। তারপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৭৩৮ জন মারা গেছেন। তিন হাজার ৩০০ মানুষ জেলে। অ্যামেরিকা সহ বিশ্বের অনেক দেশ দাবি তুলেছে, মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। সু চি-কে মুক্তি দিতে হবে। সেনাকে শাসনভার ছাড়তে হবে। সেনা শাসন, বিক্ষোভ, সরকারি কর্মীদের ধর্মঘট পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলেছে।
ছবি: Min Htet San
6 ছবি1 | 6
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সেনা শাসন চলছে। সু চি সহ বহু রাজনৈতিক নেতাকে আটক করা হয়েছে। সেনা শাসনের বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ হচ্ছে। সেনা ও পুলিশ তা কড়াহাতে দমন করছে। প্রায় সাড়ে সাতশ বিক্ষোভকারী মারা গেছেন। প্রচুর বিক্ষোভকারীকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলি মিয়ানমারে সেনা শাসনের বিরোধী। তারা অবিলম্বে গণতন্ত্র ফেরানোর জন্য সেনার উপর চাপ সৃষ্টি করেছে। তবে তাতে এখনো পর্যন্ত কোনো লাভ হয়নি।
এই অবস্থায় সেনা শাসনের বিরোধীদের কেএনইউ আশ্রয়ও দিচ্ছে।