মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের উপর নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতার নিন্দায় জাতিসংঘ। তবে চীনের হস্তক্ষেপে বিবৃতি লঘু করা হলো।
বিজ্ঞাপন
মিয়ানমার নিয়ে বিবৃতি দিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। মূল বিবৃতিটি ছিল বেশ কড়া। কিন্তু চীনের হস্তক্ষেপে তা কিছুটা নরম করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে খুবই উদ্বিগ্ন। যেভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালানো হচ্ছে, নারী-শিশু সহ শয়ে শয়ে বিক্ষোভকারী মারা গিয়েছেন, তাতে উদ্বেগ বেড়েছে।
প্রথমে যে বিবৃতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল, তাতে বলা ছিল, নিরাপত্তা পরিষদ পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার কথা ভাববে। সেখানে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল। দুই দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলে। চীন ওই কড়া ভাষা ব্যবহার করতে দিতে রাজি হয়নি। তারপর বিবৃতি কিছুটা লঘু করে দেয়া হয়।
সেনা-বিরোধী প্রতিবাদ
মিয়ানমারে সেনার বিরুদ্ধে রোজ বিক্ষোভ হচ্ছে। বিক্ষোভকারীরা গণতন্ত্র ফেরানোর এবং সু চি সহ অন্য আটক নেতাদের মুক্তির দাবি করছেন। কিন্তু সেনা-শাসকরা সেই বিক্ষোভ সহিংস উপায়ে দমন করতে চাইছেন।
মিয়ানমার: সেনাশাসন, বন্দুকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও গুলতির প্রতিরোধ
দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমার সেনাশাসনে৷ সেনাশাসনবিরোধী বিক্ষোভের ওপর চলছে গুলি৷ গুলির জবাব দেয়া হচ্ছে গুলতিতে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: REUTERS
প্রতিদিন রাজপথে রক্ত
১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চি-কে আটক করে সেনাবাহিনী৷ এভাবে সেনাশাসন শুরুর পর সু চি-র মুক্তি এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভে নামে জনতা৷বিক্ষোভ মিছিলে সেনাবাহিনীর হামলা চলতে থাকে নিয়মিত৷ হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ১৮০ জন বিক্ষোভকারী প্রাণ হারিয়েছেন৷ ছবিতে গুলিতে আহত একজনকে হাসপাতালে নিয়ে যা্চ্ছেন বিক্ষোভকারীরা৷
ছবি: REUTERS
শেষ শ্রদ্ধা
সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে ১৯ বছর বয়সি তরুণ খান্ত নিয়ার-হাইন৷ অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ার সময় তাকে তিন আঙুলে স্যালুট জানাচ্ছেন স্থানীয়রা৷
ছবি: REUTERS
গুলতিই তার হাতিয়ার
সেনাশাসনের দ্রুত অবসান চায় বিক্ষোভকারীরা৷ দাবি আদায়ে মরিয়া তারা৷ প্রতিরোধে তারা মরিয়া৷ তাই এক তরুণ সশস্ত্র সেনাবাহিনীর সঙ্গে লড়ছে গুলতি হাতে৷
ছবি: REUTERS
আহতদের প্রতি সেনাবাহিনীর আচরণ
বিক্ষোভ, আন্দোলনের শুরুর দিকে কিছুটা সহনশীলতা দেখালেও এক সময় আগ্রাসী হয়ে ওঠে সেনাবাহিনী৷ গুলিতে আহতদের এভাবে টেনে নিয়ে যাওয়া এখন প্রায় নিয়মিত দৃশ্য৷
ছবি: via REUTERS
আরেক আহত
গুলিতে আহত আরেকজনকে নিয়ে বিক্ষোভকারীদের হাসপাতালের দিকে ছুটে যাওয়ার মুহূর্ত৷
ছবি: REUTERS
গুলতিযোদ্ধা
সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলতি হাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে কয়েকজন তরুণ৷
গত ১৩ মার্চ রাতে সারা দেশে মশাল মিছিল করে বিক্ষোভকারীরা৷ ওপরের ছবিটি সাগাইং অঞ্চলের খিন উ শহরের৷
ছবি: REUTERS
আহত ভিক্ষু
মিয়ানমারের বৌদ্ধ ভিক্ষুরা এবারও সেনাশাসনবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয়৷ ২০০৭ সালের মতো এবারও বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ছেন দল বেঁধে৷ ছবিতে আহত এক ভিক্ষুকে হাসপাতালে নেয়ার দৃশ্য৷
ছবি: REUTERS
স্বজনের কান্না
গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দেয়া অং থান-কে শেষ বিদায় জানানোর সময় স্বজনদের কান্না৷
ছবি: REUTERS
মোমবাতি মিছিল
ইয়াঙ্গনের হ্লেডান জংশন এলাকায় সেনাশাসনের অবসান ও অং সান সু চি-র মুক্তি দাবিতে মোমবাতি মিছিল৷ ১৪ মার্চের ছবি৷
ছবি: REUTERS
11 ছবি1 | 11
পশ্চিমা দেশগুলি সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছে, কিন্তু চীন স্থায়িত্বের যুক্তি দিচ্ছে। তারা সেনা-শাসকদের পাশেই আছে।
এই অবস্থায় নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয় গত বুধবার। মিয়ানমার নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেন, সেখানে পরিস্থিতি গৃহযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। কখন সেনা শাসকরা আলোচনার জন্য রাজি হবে, তার অপেক্ষা করতে গেলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। মিয়ানমার রক্তে ভেসে যাবে বলে তিনি সতর্ক করে দেন।