এবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নাওয়ার্ট সোমবার এই ঘোষণা দেন৷ ফলে এখন থেকে রাখাইনে সামরিক অভিযানের সঙ্গে যুক্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কোনো সদস্যমার্কিন সহায়তা কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না৷ এছাড়া মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন, সোমবার সেগুলো বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে৷
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও পরিকল্পনা করছেন৷
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কর্মকাণ্ড সীমিত করার ঘোষণা দিয়েছিল৷
৩৪০ মিলিয়ন ডলারের অঙ্গীকার
জাতিসংঘের উদ্যোগে সোমবার জেনেভায় রোহিঙ্গা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ এতে বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের আর্থিক সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকার করেছে৷ সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪৪ মিলিয়ন ডলারের বেশি অঙ্গীকার পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ৷ অবশ্য জাতিসংঘের চায় ৪৩৪ মিলিয়ন ডলার৷ রোহিঙ্গাদের দেখাশুনা করতে আগামী ছয় মাসের জন্য এই অর্থ প্রয়োজন বলে আগেই জানিয়েছিল জাতিসংঘ৷ সোমবারের সম্মেলনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৩০ মিলিয়ন ইউরো, সৌদি আরব ২০ মিলিয়ন ডলার, কুয়েত ১৫ মিলিয়ন ডলার, অস্ট্রেলিয়া ১০ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার ও ব্রিটেন ১২ মিলিয়ন পাউন্ড দেয়ার অঙ্গীকার করেছে৷
ক্যানাডার বিশেষ দূত নিয়োগ
দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোমবার মিয়ানমারের জন্য একজন বিশেষ দূত নিয়োগ দিয়েছেন৷ দূতের কাজ হবে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার নেতৃবৃন্দের উপর চাপ প্রয়োগ করা৷ সাবেক অভিজ্ঞ সাংসদ বব রে বিশেষ দূতের কাজ করবেন৷ ট্রুডোর আগে তাঁর দলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বব রে৷ রোহিঙ্গা সংকটে নিপীড়নের শিকার হওয়াদের কীভাবে আরও ভালোভাবে সহায়তা দেয়া যায় সে ব্যাপারে ট্রুডোকে পরামর্শ দেবেন বব রে৷ রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপরনির্যাতনের ঘটনায় ট্রুডো গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷
জেডএইচ/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি, রয়টার্স)
ভয়াবহ সব অভিজ্ঞতার মুখে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া, পেছনের টান আর ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা- এই সব নিয়ে একরাশ হতাশা আর বেদনা স্পষ্ট প্রতিটি রোহিঙ্গার চোখেমুখে৷ সম্প্রতি রয়টার্সের ক্যামেরায় ধরা পড়া এমন কিছু অবয়ব নিয়েই এই ছবিঘর৷
ছবি: Reuters/D. Sagoliমাত্র একদিন আগেই পরিবারের সবাইকে নিয়ে পালিয়ে এসেছেন ৩০ বছর বয়সি আমিনা খাতুন৷ বাংলাদেশে পৌঁছানোর পর প্রথম রাত কেটেছে কক্সবাজারের শরণার্থী আশ্রয়কেন্দ্রের পাশের সড়কে৷ সাথে ছিল তারই মতো নতুন আসা আরও হাজার হাজার মানুষ৷ সামনের দিনগুলোর কথা ভেবেই হয়তো এই অশ্রুসজল চোখ!
ছবি: Reuters/D. Sagoliছবি তোলা হচ্ছে দেখলেই গ্রামের ছেলেমেয়েরা দৌড়ে আসে- এই দৃশ্য খুবই পরিচিত৷ কিন্তু শিশুদের চোখেও এত অবিশ্বাস আর হতাশা বোধহয় পরিচিত নয়৷
ছবি: Reuters/C. McNaughtonসীমান্ত পাড়ি দিয়ে ৭০ এর বেশি বয়সি এই নারী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসেছেন কিছুক্ষণ আগেই৷ জীবনের এই শেষ দিনগুলোতেও জীবন বাঁচাতে এমন যুদ্ধ করতে হবে কখনও হয়ত ভাবেননি৷
ছবি: Reuters/J. Silvaএই শরণার্থী শিশুর অপেক্ষা একটু ওষুধের জন্য৷ সারা মুখে নানা ক্ষত আর তার ওপর মাছির আনাগোনাতেই বোঝা যাচ্ছে, একটু ওষুধ কতখানি দরকার তার৷
ছবি: Reuters/D. Sagolijবৃষ্টি মাথায় ত্রাণকেন্দ্রের সামনে অপেক্ষা৷ আর তো কোন উপায় নেই!
ছবি: Reuters/C. McNaughtonমাত্রই বাংলাদেশে এসেছেন৷ শুরুতে জায়গা হয়েছে এক স্কুল ঘরে৷কিন্তু সেখানে তো আর থাকা যাবে না৷থাকতে হবে আশ্রয়কেন্দ্রে৷নতুন সেই ঠিকানার অপেক্ষাতেই এখন তারা৷
ছবি: Reuters/C. McNaughtonকক্সবাজারের বালুখালি শরণার্থী শিবিরে আর সবার মতোই একটু ত্রাণের আশায় কোলের সন্তানকে নিয়ে অপেক্ষায় এই নারী৷
ছবি: REUTERSসালেহা বেগম নামের এই মা এতটুকুন শিশুকে নিয়ে ১৪ দিন ধরে জঙ্গল পথে হেঁটেছেন৷ তারপর পেরেছেন সীমান্ত পাড়ি দিতে৷ এখন অপেক্ষা একটু আশ্রয়ের৷
ছবি: Reuters/C. McNaughtonটেকনাফের শাহ পরীর দ্বীপ পর্যন্ত নৌকায় গাদাগাদি করে এসে কোনমতে পৌঁছেছে সবাই৷ নতুন আশ্রয়ে যাবার আগে তাই একটু বিশ্রাম৷
ছবি: Reuters/D. Sagolijটেকনাফে পৌঁছেই ছুটতে হচ্ছে ত্রাণের আশায়৷ নিজেই এক শিশু, তার ওপর কোলে, পাশে আরও ভাই-বোন থাকায় দায়িত্ব যেন বেড়ে গেছে৷
ছবি: Reuters/D. Sagolijএত মানুষের টানাহ্যাঁচড়ার মধ্যেই দাঁড়াতে হয় ত্রাণের লাইনে৷ ধাক্কাধাক্কি সহ্য করে আর কতক্ষণ৷ তাল সামলাতে না পেরে তাই চোখ ফেটে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু৷
ছবি: Reuters/C. McNaughtonআদরের ধন নাতিকে কোলে নিয়ে এই নারী বসে আছেন ত্রাণের আশায়৷ কিন্তু একটু ত্রাণই তো সব নয়৷ নাতির ভবিষ্যত কী, সেই ভাবনাতেই খানিকটা উদাস হয়ে পড়েছেন তিনি৷
ছবি: Reuters/D. Siddiqui