1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘মি টু’: চিকিৎসকের বিরুদ্ধে সহকর্মীর অভিযোগ

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১১ জুলাই ২০২১

পশ্চিমবঙ্গে নামকরা একটি হাসপাতালের চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন নারী সহকর্মী৷ এ নিয়ে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর৷ কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুরক্ষা কতটা তা নিয়ে আবারো প্রশ্ন উঠেছে এই ঘটনায়?

এসএসকেএম হাসপাতালে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদছবি: Payel Samanta/DW

রাজ্যের অন্যতম সেরা হাসপাতাল এসএসকেএম এবার কাঠগড়ায়৷ রোগীমৃত্যু ঘিরে রহস্য বা অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত কোনো বিষয় নয় বরং ‘মি টু’ কাণ্ডে নাম জড়িয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের সেরা হিসেবে স্বীকৃত হাসপাতালটি৷ হাসপাতালের সিসিইউ চিকিৎসক তথা ডিএম ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠল ওই বিভাগেরই এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে৷ আরো একজনের বিরুদ্ধে প্রশ্রয় দেওয়ায় অভিযোগ৷

বিভাগীয় তদন্ত

নিগৃহীতার দাবি বছর দুয়েক ধরেই সিসিইউ-এর চিকিত্‍সক তথা ডিএম ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা এবং মানসিক নির্যাতন করছিলেন ওই বিভাগেরই এক সিনিয়র চিকিত্‍সক৷ ভবানীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল৷ এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছেও লিখিত অভিযোগ জানান তিনি৷ অভ্যন্তরীণ কমিটি এই সংক্রান্ত রিপোর্ট জুনের মাঝামাঝি স্বাস্থ্য ভবনে জমা পড়েছিল বলে সূত্রের খবর‍৷ অভিযুক্ত চিকিৎসকদের বদলি করা হয়৷ চলতি সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে হইচই হওয়ায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর৷ যদিও তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা ও সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই৷

গত বছর অধ্যাপক ও কবি অংশুমান কর অভিযুক্ত হয়েছিলেন যৌন হেনস্থায়৷ তখন অভিযুক্তের সঙ্গে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিল৷ এবার নজরে সরকারি হাসপাতাল৷ অভিযোগ, এসএসকেএমের ক্ষেত্রে অভিযুক্তরা উচ্চপদস্থ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করেছে রাজ্য৷ এ প্রসঙ্গে মহিলা কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন সুনন্দা মুখোপাধ্যায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বাস করি, সেখানে বেশিরভাগ অধিকর্তা হচ্ছেন পুরুষ৷ যে কারণে গার্হস্থ্য হিংসা হয়, সেই ছবিই প্রতিফলিত হয় কর্মক্ষেত্রেও৷ কাজেই যখন কাউকে লড়তে হবে, শুধু আবেদন নিবেদন বা সহানুভূতি দিয়ে এগোলে হবে না, আইনের দিক দিয়ে লড়তে হবে৷’’

শাশ্বতী ঘোষ

This browser does not support the audio element.

আইন  কি  কার্যকর  হবে?

কর্মক্ষেত্রে নারীদের যৌন হেনস্থা রুখতে ‘সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট অব উইম্যান অ্যাট ওয়ার্কপ্লেস অ্যাক্ট' আইন পাশ হয় ২০১৩ সালে৷ তার আগে পর্যন্ত নারীদের যৌন হেনস্থার প্রতিবাদের জন্য বিশাখা নির্দেশিকা ছিল৷ নতুন আইন সেই বিশাখা নির্দেশিকাকে আরও মজবুত করে তুলেছে৷ তারপর থেকে নারীরা কি কর্মক্ষেত্রে হেনস্থার শিকার হলেই আদালতে আসেন? নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী অধ্যাপিকা শাশ্বতী ঘোষ বলেন, ‘‘আদৌ মনে হয় না মেয়েদের মধ্যে সেই ঝোঁকটা বেড়েছে বলে৷ মেয়েরা বড়জোর ইন্টারনাল কমপ্লেইনটস কমিটিকে অভিযোগ করেন৷ কমিটি জোরদার হলে আদালতে যায়৷ বরং অভিযুক্তরা আদালত থেকে স্টে অর্ডার নিয়ে আসে৷ আর অভিযুক্ত প্রভাবশালী হলে প্রতিষ্ঠান হাত গুটিয়ে বসে থাকে৷’’

২০১৩-র আইন অনুযায়ী ১০ কিংবা তার বেশি সংখ্যক কর্মী রয়েছে এমন সংস্থার নিয়োগকর্তার ইন্টারনাল কমপ্লেইনটস কমিটি গঠন করা বাধ্যতামূলক৷ এসএসকেএমে অভিযোগ খতিয়ে দেখেছে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি৷ কিন্তু এসব ক্ষেত্রে কতটা কাজ হয়? শাশ্বতী বলেন, ‘‘সব সংস্থাতেই এই কমিটি থাকার কথা৷ কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ঘটনা ঘটলে কমিটি গঠন করা হচ্ছে৷ কমিটি তৈরি করলেই যে সবসময় তা কাজ করে, তা নয়৷ কাজ হয় না বলেই মি টু আন্দোলন৷’’

চিকিৎসক মহলে নিন্দা

এসএসকেএমের ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত শুরু হলেও অভিযোগের সুরাহা হওয়া নিয়ে সন্দিহান অনেকে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেডিক্যাল ছাত্রী বলেন, ‘‘বারেবারে ছা্ত্রী হেনস্থার ঘটনা ঘটলেও কর্তৃপক্ষ সে সবে কান দেয়নি৷ কতটা শাস্তি হবে সন্দেহ রয়েছে৷’’ সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক ডাঃ সজল বিশ্বাস ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা সিনিয়র-জুনিয়রদের সম্পর্ক অনেকটা নষ্ট করে৷ চিকিৎসার পরিবেশটাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার৷’’ ছাত্র সংগঠন ডিএসও ঘটনার প্রতিবাদে ডেপুটেশনও জমা দিয়েছে৷ সংগঠনের তরফে ডাঃ সামস মুশাফির বলেন, ‘‘প্রতিটি হেনস্থার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার৷ মেডিক্যাল এথিক্সের সংকট কাটাতে এগিয়ে আসতে হবে সকল ছাত্রছাত্রীকে৷’’

২০১৮ সালের ছবিঘর দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ