মুইজ্জুর আসন্ন ভারত সফর যে সংকেত দিচ্ছে
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান মুখপাত্র হিনা ওয়ালিদ গত সপ্তাহে জানান, ‘‘প্রেসিডেন্ট শিগগিরই ভারত সফরে যাবেন৷’’
এ বছরের এপ্রিলে মুইজ্জুর সরকার মালদ্বীপে থাকা ভারতের অল্প কয়েকজন নিরাপত্তা সদস্যকে মালদ্বীপ ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল৷ এরপর মে মাসে চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই করে মালদ্বীপ৷
এছাড়া বছরের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন মালদ্বীপের দুই উপমন্ত্রী৷ ভারতের কাছে লক্ষদ্বীপে পর্যটন প্রসারের পরিকল্পনা করছেন মোদী৷ এর প্রেক্ষিতে ঐ মন্তব্য করেছিলেন মালদ্বীপের মন্ত্রীরা৷
এর উত্তরে ভারতের পর্যটকেরা মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেন, যেটি পর্যটননির্ভর মালদ্বীপের জন্য মারাত্মক হুমকি ছিল৷
সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা?
মুইজ্জুর ভারত সফর কি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কে মেরামতের চেষ্টা? গবেষণা সংস্থা মন্ত্রয়ার প্রধান শান্থি ম্যারিয়েট ডি’সুজা ডিডাব্লিউকে বলেন, মুইজ্জুর সরকার আপাতদৃষ্টিতে ভারতের সাথে অনুকূল সম্পর্ক থাকলে যে সুবিধা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে কিছু বাস্তবতা যাচাই করেছে৷ ‘‘এটাকে নীতি পরিবর্তন বলা এখনই ঠিক হবে না, তবে এটা অবশ্যই ভারত-মালদ্বীপের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক অগ্রগতি,’’ বলেন তিনি৷
তিনি বলেন, মালদ্বীপ ভারত ও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের মধ্যে ভারসাম্য রেখে লাভবান হতে চাইছে৷
ডি’সুজা বলেন, ‘‘মোদীকে নিয়ে ঠাট্টা করা দুই উপমন্ত্রীর পদত্যাগ বলে দিচ্ছে মুইজু নতুনদিল্লির সাথে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়৷ তবে এটি তার চীনপন্থি পক্ষপাতের পরিবর্তে হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷’’
আর্থিক সংকটে মালদ্বীপ
দেশটির ঋণ বাড়ছে, রাজস্বের পরিমাণ কম, রিজার্ভও কমছে, বাজেট ঘাটতিও আছে৷ সে কারণে আর্থিক সহায়তা খুঁজছে মালদ্বীপ৷
মালদ্বীপ চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ুক এটা ভারত চায় না৷ তাই গতমাসে দেশটি সফরে গিয়েছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর৷ মালদ্বীপের সঙ্গে সম্পর্ক ভারতের জন্য একটি অগ্রাধিকার বিষয় বলে তিনি উল্লেখ করেছিলেন৷
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক পি সাহাদেবন ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘মুইজ্জুর সরকার তার চীনপন্থি অবস্থান পরিবর্তন না করেও ভারতের প্রতি তার অবস্থান নরম করেছে৷’’
মালদ্বীপের অর্থনৈতিক সংকট এর একটি কারণ বলে মনে করেন তিনি৷
অভিজ্ঞ কূটনীতিক অনিল ওয়াধওয়া মনে করছেন, মুইজ্জুর আসন্ন সফর তার ‘ইন্ডিয়া আউট’ অবস্থান থেকে সরে আসার একটি সংকেত৷ ‘‘মালদ্বীপ বুঝতে পেরেছে যে ভারতই একমাত্র দেশ যেটি মালদ্বীপের সংকটে দ্রুত সাড়া দিতে পারে এবং আর্থিক সংকটের সময়ে তাকে উদ্ধার করতে পারে,’’ বলেন তিনি৷
মুরালি কৃষ্ণান, নতুন দিল্লি/জেডএইচ