1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় স্থান সংরক্ষণে আদালতের নির্দেশ

৮ জুলাই ২০০৯

বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের এবং ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের জন্য বিখ্যাত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত সব এলাকা এমনকি বধ্যভূমিগুলোও সংরক্ষণের জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট৷

মুক্তি বাহিনীছবি: AP

এর পাশাপাশি ১৯৭২ এর ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর এবং ওই বছরের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী যেখানে ভাষণ দিয়েছিলেন সেই সব স্থান খুঁজে বের করে, সেখানে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নির্দেশও দিয়েছে হাইকোর্ট৷ আর এই সব কাজ সুষ্ঠু রুপে সমাধানের জন্য আদালত আগামী তিন মাসের মধ্যে রাজনীতিক, ইতিহাসবিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডারদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে৷

একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ কে নিয়ে গঠিত বেঞ্চ বুধবার দুপুরে এ রায় দেয়৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ও পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থান সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে, গত ২৫ জুন রিট আবেদনটি করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল কে এম শফিউল্লাহ ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন৷

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance / dpa

রায়ে হাইকোর্ট ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘সংবিধানের ২৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক, ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার সংরক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলাসমূহের এমন পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে যাতে সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখার ও অংশগ্রহণ করার সুযোগ লাভ করতে পারেন৷' কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিভিন্ন স্থান চিহ্নিত করার পাশাপাশি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ক্ষেত্রে যে সব প্রতিবন্ধকতা আছে, তা দূর করার নির্দেশন দেয় আদালত৷

শুধু তাই নয়৷ বাংলাদেশের সঠিক ইতিহাস দেশ এবং বিদেশের মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য এইসব স্থান দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত রাখার নির্দেশও দিয়েছে আদালত৷

রায়ে সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ তুলে ধরে বলা হয়, বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎপর্যমণ্ডিত স্মৃতি নিদর্শন, বস্তু বা স্থানসমূহকে বিকৃত, বিনাশ বা অপসারণ হতে রক্ষা করার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে৷

রায়ে বলা হয়, ‘আমরা গভীর দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করেছি যে সরকার তাদের এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে৷ সংবিধান অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট সংবিধানের রক্ষক ও প্রতিপালক৷ সরকারের সাংবিধানিক ব্যর্থতার কারণে আমরা এই রিট আবেদন গ্রহণে বাধ্য হয়েছি৷

আদালত বলেছে, ‘যদি কেউ বাঙালী হয়ে থাকেন, তাহলে ওই স্থানে দাঁড়িয়ে তাঁর প্রাণ রোমাঞ্চিত হয়ে উঠবে৷ চোখ বন্ধ করে চিন্তা-ভাবনা করবে- এই সেই স্থান যেখানে জেনারেল নিয়াজীর বাহিনী বাঙালীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল৷ ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এই অবিস্মরণীয় ঘটনার স্মৃতি ধরে রাখা, সেই স্থান সংরক্ষণ করা সবার আইনগত ও সাংবিধানিক দায়িত্ব৷'

ঐতিহাসিক স্থান দুটি সংরক্ষণ না করতে পারাকে ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করে হাইকোর্ট বলে, ‘এ অবস্থায় আমরা এইসব স্মৃতি সংরক্ষণে আমাদের নির্দেশনা জারি করলাম৷'

আদালত অভিমত ব্যক্ত করে, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডাররা জীবনবাজী রেখে দেশের জন্য লড়াই করেছেন৷ এই বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের প্রত্যেককে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা উচিত৷

হাইকোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় রিট আবেদনকারী মুনতাসীর মামুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ রায়ে আমি শুধু আনন্দিত নই, অভিভূত৷ দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আমরা এজন্য সংগ্রাম করেছি৷

প্রতিবেদক: ঝুমুর বারী

সম্পাদনা: আবদুস সাত্তার

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ