মুখ্যমন্ত্রীদের বশে আনতে পারছেন না ম্যার্কেল
১৭ নভেম্বর ২০২০![](https://static.dw.com/image/55621203_800.webp)
প্রতিবেশী দেশগুলির মতো জার্মানির করোনা পরিস্থিতি ততটা মারাত্মক না হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবার আগেই দুই সপ্তাহ আগে সে দেশে এক মাসের জন্য ‘লকডাউন লাইট’ ঘোষণা করা হয়েছিল৷ মূলত হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রেখে ও প্রকাশ্যে মানুষের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ সীমিত রেখে সংক্রমণের হার কমানোর চেষ্টা করছিল প্রশাসন৷ সোমবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে এই দুই সপ্তাহের প্রবণতা খতিয়ে দেখলেন৷ এ দিন তাঁরা তেমন কোনো পরিবর্তনের বিষয়ে ঐক্যমতে আসতে পারেন নি৷ আগামী ২৫শে নভেম্বর আবার আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চান জার্মানির নেতারা৷
শেষ পর্যন্ত ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের নেতারা জনসাধারণের উদ্দেশ্যে অন্য মানুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ যতটা সম্ভব কম রাখার আবেদন জানিয়েছেন৷ যে সব মানুষের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি, তাদের জন্য সরকারি ভরতুকির মাধ্যমে কম দামে এফএফপি-২ মাস্ক সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
গত দুই সপ্তাহে জার্মানিতে সংক্রমণের হার কিছুটা কমেছে বটে, কিন্তু সরকার ও প্রশাসন সেই মাত্রা আরও কমিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর৷ সরকারের যুক্তি, জার্মানির অবকাঠামোর পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণের হার পঞ্চাশের সীমার মধ্যে না রাখলে নির্ভরযোগ্যভাবে ‘কনট্যাক্ট ট্রেসিং' করা যাবে না এবং হাসপাতালে আইসিইউ-র উপর চাপ কমানো যাবে না৷ বর্তমানে দৈনিক সংক্রমণের গড় হার ১৪৩৷ বিশেষ করে আরও শীত পড়লে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এমনকি বাজারে করোনার টিকা এলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ম্যার্কেল৷
কীভাবে, কোন গতিতে এবং কত দ্রুত সেই লক্ষ্য পূরণ করা উচিত, সে বিষয়ে জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে মতপার্থক্য কিছুতেই দূর হচ্ছে না৷ দক্ষিণে বাভেরিয়ার মতো ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্য দ্রুত কড়া পদক্ষেপ নিতে চাইলেও বিশেষ করে পূবের জনবিরল রাজ্যগুলি এমন উদ্যোগের বিরোধিতা করছে৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলও অবিলম্বে আরও কড়া পদক্ষেপ নেবার পক্ষে৷ বিশেষ করে স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে সংক্রমণ কমাতে তিনি কড়াকড়ি বাড়াতে চেয়েছিলেন৷ বিষয়টি নিয়ে সোমবার তাঁর সঙ্গে অনেক মুখ্যমন্ত্রীর তুমুল সংঘাত দেখা গিয়েছিল বলে জানা গেছে৷ চ্যান্সেলরের দফতর আলোচনার আগেই সিদ্ধান্তের খসড়া প্রস্তুত করেছিল বলে অনেক মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন৷
বিভিন্ন জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী করোনা সংক্রমণের মোকাবিলা করতে কড়া পদক্ষেপের প্রতি
জার্মানির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের সমর্থন রয়েছে৷ তবে কিছু মানুষ প্রকাশ্যে নিয়মিত প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে৷ এমনকি মাস্ক পরা ও যথেষ্ট ব্যবধান বজায় রাখতেও তারা নারাজ৷ ফলে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে৷ এমন অবস্থায় সরকারি পদক্ষেপের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাচ্ছে৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)